প্রথম ইনিংসে মুশফিকের যত রেকর্ড
ব্যাট হাতে পাকিস্তানের ব্যাটাররা যা করে দেখালেন, সেই ধারাই অব্যাহত রেখে ব্যাট চালাল বাংলাদেশ। শুরুর দিকে নিয়মিত উইকেট পড়লেও চারটি পঞ্চাশ পার করা ইনিংসের সঙ্গে মুশফিকুর রহিমের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের দেওয়া বড় লক্ষ্য টপকে গেছে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের ৪৪৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করার পর চতুর্থ দিনের তৃতীয় সেশনে ৫৬৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। যা পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসের চেয়ে ১১৭ রান বেশি।
প্রথম ইনিংসে মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে সপ্তম উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ উপহার দিয়েছেন মুশফিক। এই জুটিতে ভর করেই পাকিস্তানের দেওয়া লক্ষ্য পার করে ১১৭ রানের লিড নিয়েছে বাংলাদেশ। তবে নিজের দুইশ রান আর ছোঁয়া হয়নি মুশফিকের। ৩৪১ বল মোকাবিলা করে ২২টি চার ও একটি ছক্কায় ১৯১ রান করে ফিরতে হয় তাকে।
দলীয় ৫২৮ রানের মাথায় মোহাম্মদ আলীর অফ স্ট্যাম্পের কিছুটা বাইরের ডেলিভারিতে স্কয়ার কাট করতে চেয়েছিলেন মুশফিক। তবে বলে বাড়তি বাউন্স থাকায় ঠিকমতো তা করতে পারেননি তিনি। ফলে ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে বল চলে গেলে ১৯৬ রানের জুটি ভাঙে বাংলাদেশের।
সপ্তম উইকেটে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টনে ১৪৫ রানের জুটি গড়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব আল হাসান। আউট হওয়ার আগে বেশ কয়েকটি ব্যক্তিগত রেকর্ডও গড়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের লিটল মাস্টার।
এই ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিক। পাকিস্তানের মাঠে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছেন তিনি।
এছাড়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান পূর্ণ করেছেন মুশফিক। তার আগে এই তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছেন কেবল সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ৩৯১ ম্যাচ খেলে ১৫,২৪৯ রান করেছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান করতে মুশফিকের লাগল ৪৬১ ম্যাচ।
দিনের প্রথম সেশনে সেঞ্চুরি করেন মুশফিক। এতে তামিমের আরেকটি রেকর্ড ছাড়িয়ে যান তিনি। দেশের বাইরে এখন সর্বোচ্চ (৫) সেঞ্চুরির মালিক তিনি। চারটি করে সেঞ্চুরি নিয়ে এতদিন তামিমের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে ছিলেন তিনি।
এছাড়া দেশের বাইরে টাইগারদের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট রানের রেকর্ডও এখন মুশফিকের। এখানেও তিনি ছাড়িয়েছেন বন্ধু তামিমকে। ৫৯ ইনিংসে ২,৩২৯ রান করে রেকর্ডটি এতদিন ছিল তামিমের। তবে আজ ১৯১ রানে আউট হওয়ার পর ৬৭ ইনিংসে মুশফিকের রান ২,৩৮১।
উল্লেখ্য, দেশের বাইরে বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটারের দুই হাজার রান নেই। ৫৫ ইনিংসে ১,৬৩৭ রান নিয়ে এই দুজনের পরেই আছেন সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। ৪৩ ইনিংসে ১,৫২৬ রান করে সাকিব চারে এবং ৬৫ ইনিংসে ১,৫১৮ রান করে পঞ্চম স্থানে মোহাম্মদ আশরাফুল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৪৪৮/৬ (ডি.)
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৬৭.৩ ওভারে ৫৬৫ (আগের দিন ৩১৬/৫) (মুশফিক ১৯১, লিটন ৫৬, মিরাজ ৭৭, হাসান ০, শরিফুল ২২, নাহিদ ১*; আফ্রিদি ৩০-৩-৮৮-২, নাসিম ২৭.৩-৬-৯৩-২, শাহজাদ ২৯-৩-৯০-২, আলি ৩১-৪-৮৮-২, সালমান ৪১-৩-১৩৬-০, সাইম ৭-১-৩৪-১, শাকিল ২-০-৯-০)।
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ১০ ওভারে ২৩/১ (শাফিক ১২, সাইম ১, মাসুদ ৯*; শরিফুল ৫-৩-১৩-১, হাসান ৫-২-৯-০)।