শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড
ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত টেস্টের চতুর্থ দিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চমকপ্রদ এক জয় তুলে নিয়েছে ইংল্যান্ড। ২০৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা আক্রমণাত্মক হলেও দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় স্বাগতিক দল। দুই ওপেনার বেন ডাকেট এবং ড্যানিয়েল লরেন্সের হাতে তৈরি হওয়া মজবুত ভিত্তি দ্রুতই ভেঙে পড়ে। ষষ্ঠ ওভারে ডাকেটের আউট হওয়ার পর ম্যাচটি নাটকীয় মোড় নেয়।
ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ড তখন ১১৯ রানে ৪ উইকেট। শ্রীলঙ্কা হারানোর স্বপ্ন দেখছিল। তবে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান জো রুট ম্যাচটি ইংল্যান্ডের দিকে নিয়ে আসেন। তার ১২৮ বলে ৬২ রানের অপরাজিত ইনিংস এবং জেমি স্মিথের সঙ্গে ৬৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি ইংল্যান্ডকে ৫ উইকেটে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। তিন ম্যাচের সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
দিনের শুরুতে শ্রীলঙ্কা তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেটে ১৮৭ রান নিয়ে খেলা শুরু করে, তাদের লিড ছিল ৬৫ রানের। আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান কামিন্ডু মেন্ডিস এই লিডকে আরও বাড়িয়ে নিয়ে যান, যেখানে তার সঙ্গে ছিলেন দিনেশ চান্দিমাল। দুজনের সপ্তম উইকেটে ১০৭ রানের জুটি শ্রীলঙ্কাকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যায়। কামিন্ডু মেন্ডিস তার ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক তুলে নিয়ে ১১৩ রান করে আউট হন। চান্দিমাল ৭৯ রান করে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন। শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হয় ৩২৬ রানে, যা ইংল্যান্ডকে ২০৫ রানের লক্ষ্য দেয়।
ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার দ্রুত রান তুলে শুরুটা আক্রমণাত্মকভাবে করলেও ডাকেট আউট হলে ইংল্যান্ডের রান তোলার গতি কমে যায়। পরবর্তীতে অধিনায়ক ওলি পোপ এবং ওপেনার লরেন্সও দ্রুত আউট হয়ে গেলে চাপ বেড়ে যায়। তবে জো রুট এবং হ্যারি ব্রুক ৪৯ রানের জুটি গড়ে দলকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করেন। ব্রুক ৩২ রান করে আউট হলে জেমি স্মিথ ক্রিজে এসে দলের রানের গতি বাড়ান। স্মিথ ৩৯ রান করে আউট হলেও রুট শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
ইংল্যান্ডের জয়ের পেছনে ছিল রুটের দৃঢ়তা এবং স্মিথের সাহসী ব্যাটিং। শ্রীলঙ্কার বোলাররা শুরুতে ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলার চেষ্টা করলেও রুটের অভিজ্ঞতা এবং স্মিথের নির্ভীক ব্যাটিং তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেয়। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড ৫ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ২৩৬
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩৫৮
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৮৯.৩ ওভারে ৩২৬ (আগের দিন ২০৪/৬) (চান্দিমাল ৭৯, কামিন্দু মেন্ডিস ১১৩, জায়াসুরিয়া ৫, আসিথা ০, ভিশ্ব ০*; ওকস ২২-৬-৫৮-৩, অ্যাটকিনসন ১৭-২-৮৯-২, বাশির ২০-০-৭৭-০, উড ১০.২-১-৩৬-১, পটস ১৭.৩-৪-৪৭-৩, রুট ১.৪-০-৫-১, লরেন্স ১-০-৫-০)
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২০৫) ৫৭.২ ওভারে ২০৫/৫ (ডাকেট ১১, লরেন্স ৩৪, পোপ ৬, রুট ৬২*, ব্রুক ৩২* স্মিথ ৩৯, ওকস ৮*; ভিশ্ব ৮-০-৪৬-০, আসিথা ১২-১-২৫-২, জায়াসুরিয়া ২৫.২-৪-৯৮-২, রাত্নায়েকে ১২-০-৩১-১)
ফল: ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে ইংল্যান্ড
ম্যান অব দা ম্যাচ: জেমি স্মিথ