খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর ২০২৪

মেসি–বার্সা চুক্তির সেই ন্যাপকিন পেপার নিলামে ১১ কোটি টাকায় বিক্রি

স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার সঙ্গে ২০০০ সালে গাঁটছড়া বাঁধেন বিশ্ব ফুটবলের সেরা ফুটবলারদের অন্যতম আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসি। ২১ বছর পর প্রাণের সেই ক্লাব ছেড়ে প্যারিস ঘুরে এখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা; খেলছেন ডেভিড বেকহ্যামের ক্লাব ইন্টার মিয়ামির হয়ে।

ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার সঙ্গে তার সম্পর্ক শেষ হয়েও যেন হয় না। বারবার ঘুরেফিরে তার সঙ্গে জড়িয়ে যায় বার্সেলোনার নাম। এবার ক্যারিয়ার শুরুর একেবারে প্রথম ঘটনাটি নিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছেন মেসি।

২০০০ সালের ১৮ ডিসেম্বর বার্সেলোনার সঙ্গে যখন চুক্তিবদ্ধ হন, তখন মেসির বয়স মাত্র ১৩। আর্জেন্টিনার এ বিস্ময় বালকের খেলা দেখে মুগ্ধ হয়ে কোনোভাবেই তাকে সেদিন হাতছাড়া করতে চাননি ক্লাবটির কর্তাব্যক্তিরা। তাই সঙ্গে সঙ্গে মেসির বাবাকে দিয়ে দেন প্রস্তাব। হোর্গে মেসি ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবে সেদিন বার্সার প্রস্তাবে সায় দেন। আর তড়িঘড়ি করে হাতের কাছে থাকা একটি ন্যাপকিন পেপারের ওপরই চুক্তির প্রাথমিক বিষয়বস্তু লিখে সই করিয়ে নেয় ক্লাব কর্তৃপক্ষ। এরপর ছোট্ট লিওনেলের ক্যাম্প ন্যুতে আসা ও একের পর এক ইতিহাস সৃষ্টির সঙ্গী হয়েছে পুরো ফুটবল দুনিয়া।

এবার আলোচনার জন্ম দিয়েছে সেই ন্যাপকিন পেপারটি। প্রাথমিক ওই চুক্তিপত্রে সই করেছিলেন বার্সেলোনার সাবেক ফুটবলার ও তৎকালীন স্পোর্টিং ডিরেক্টর কার্লেস রেক্সাচ, বিশ্বখ্যাত এজেন্ট হোসে মারিয়া মিঙ্গেলা ও হোরাসিও হাগিওলি। এতদিন হাগিওলির হেফাজতে থাকা সেই ন্যাপকিন পেপারটি এবার নিলামে উঠেছে।

হাগিওলির পক্ষে ঐতিহাসিক এই চুক্তিপত্রটি অনলাইনে নিলামে তোলে লন্ডনের নিলামকারী প্রতিষ্ঠান বনহ্যামস। এটির প্রাথমিক দাম হাঁকানো হয় তিন লাখ পাউন্ড। নিলামে ওঠার পর তা ৭ লাখ ৬২ হাজার ৪০০ পাউন্ডে (১১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা প্রায়) বিক্রি হয়েছে।

চুক্তিপত্রে লেখা ছিল, “১৪ ডিসেম্বর, ২০০০ খ্রিস্টাব্দ। মেসার্স মিঙ্গেলা ও হোরাসিওর উপস্থিতিতে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার স্পোর্টিং ডিরেক্টর কার্লেস রেক্সাস এই মর্মে সম্মত হয়েছেন যে, তার অধীনে ফুটবলার লিওনেল মেসি ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে সই করছেন। এই চুক্তির মাধ্যমে মেসির সঙ্গে আলোচিত অর্থ দিতে বাধ্য থাকবে বার্সেলোনা।”

গত মার্চে ন্যাপকিনটির মালিকানা নিয়ে মতভিন্নতা দেখা দেয়। তবে সেসব অভিযোগ পরে নিষ্পত্তি হয়ে যায়। এ বিষয়ে বনহ্যামসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “ন্যাপকিনের প্রেরক আমাদের কাছে একটি আইনি রায় পাঠিয়েছেন, স্প্যানিশ আইনের অধীনে যা প্রেরককে ন্যাপকিনের মালিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ফলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে যে, এই পেপার ন্যাপকিনের মালিকানা নিয়ে জটিলতার অবসান হয়েছে।”

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে এই ন্যাপকিনটির খোঁজে চাউর হয় ফুটবল বিশ্ব। কোথায় আছে মেসির সই করা সেই বিখ্যাত ন্যাপকিন পেপারটি, কিংবা আদৌ সেটি আছে না-কি হারিয়ে গেছে- এসব প্রশ্নের উত্তর মিলছিল না। তবে সব জল্পনায় জল ঢেলে হাগিওলি জানান, ন্যাপকিন পেপারটি সযত্নে তার কাছেই রয়েছে। ইতোমধ্যে ইতিহাস গড়া ওই পেপারটির জন্য তিনি মোটা অঙ্কের অর্থের প্রস্তাবও পেয়েছেন। তবে এখনই তিনি তা প্রকাশ্যে আনতে চান না।

শুরুতে পেপারটি বিক্রির পক্ষে ছিলেন না হাগিওলি। সে সময় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছিলেন, এটি বার্সেলোনার ইতিহাসের অংশ। তাই এটির জায়গা হওয়া উচিৎ ক্লাবটির জাদুঘরে।

একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে হাগিওলি বলেছিলেন, “ন্যাপকিন পেপারটি বার্সেলোনার জাদুঘরেই থাকা উচিৎ বলে আমি মনে করি। এটি ক্লাবটির আধুনিক ইতিহাস বদলে দিয়েছে। মেসির ব্যালন ডি’অরগুলোর পাশেই এটির জায়গা হওয়া উচিৎ। তবে এখনই ওই ন্যাপকিন পেপার আমি জনসম্মুখে আনার পক্ষে নই। অন্তত মেসির অবসর বা ক্লাব ছেড়ে যাওয়ার পর এটি করা যেতে পারে।”

তবে সময়ের পরিক্রমায় মত পাল্টেছেন হাগিওলি। মেসির বার্সা ছাড়ার পর ন্যাপকিন পেপারটি প্রকাশ্যে আনলেও বার্সেলোনার জাদুঘর সেটির গন্তব্য হয়নি; নিলামে তুলে অর্থ কামিয়েছেন তিনি।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy