সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ৫ উইকেটে হারিয়ে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইট ওয়াশ করলো বাংলাদেশ। ২০০৯ সালের পর বিদেশের মাটিতে প্রতিপক্ষকে প্রথমবার ধরলধোলাই করলো টাইগাররা।জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের পঞ্চাশতম ওয়ানডে জয়।
সিরিজ জেতায় আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের ৩০ পয়েন্টের সবকটি পেল বাংলাদেশ। ৮০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে দ্বিতীয় স্থানও সংহত হলো। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে শুরুতে ব্যাট করে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৯৮ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় জিম্বাবুয়ে। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে ১২ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় তামিমবাহিনী। এই জয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল সফরকারীরা।
জিম্বাবুয়ের দেওয়া ২৯৯ রানের বড় টার্গেট তাড়ায় ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ও লিটনের জুটিতে আসে ৮৮ রান। ৪৬ বলে তামিম দেখা পান ফিফটির। লিটনও ছুটছিলেন ফিফটির দিকে। কিন্তু ওয়েসলি মাধেভেরের বলে সুইপ শট খেলতে গিয়ে স্কয়ার লেগে থাকা মারুমানির হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই ডানহাতি।
লিটনের বিদায়ের পর তিনে নামা সাকিবও দারুণ শুরু করেছিলেন। তামিমের সঙ্গে গড়েছিলেন ৫৯ রানের জুটি। তবে আগের ম্যাচে অপরাজিত ৯৬ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলা সাকিব এই ম্যাচে পারেননি। ব্যক্তিগত ৩০ রানে লুক জঙওয়ের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক চাকাভার হাতে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে ৪২ বলে খেলে ১টি চার ও ১ টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
অন্যদিকে, মাত্র ৮৭ বল খেলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ক্যারিয়ারের ১৪তম সেঞ্চুরিতে পৌঁছান অধিনায়ক তামিম ইকবাল । তবে এরপর বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি। তিরিপানোর বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক চাকাভার হাতে ক্যাচ দিলে শেষ হয় তার ৯৭ বলে ১১২ রানের ইনিংস, যেখানে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কার মারও আছে। এরপরের বলেই মাহমুদউল্লাহও হাঁটেন ড্রেসিং রুমের পথে।
চাপে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশকে পথ দেখাচ্ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন ও দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা নুরুল হক সোহান। একদিকে সোহান আগ্রাসী ব্যাটিং করলেও মিঠুন খেলছিলেন দেখেশুনে। আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিও স্পষ্ট হয়ে উঠছিল মিঠুনের ব্যাটিংয়ে। শেষ পর্যন্ত দলকে ২৬৮ রানে রেখে মাধেভেরের বলে চাতারার হাতে ক্যাচ তুলে দিলে শেষ হয় তার ৫৭ বলে মাত্র ১ চারে সাজানো ৩০ রানের ইনিংস।
মিঠুন ফিরলেও অপরপ্রান্তে রানের চাকা সচল রাখেন নুরুল হাসান। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যটা বাংলাদেশের হাতের মুঠো থেকে ছুটে যেতে পারেনি। শেষ ৩ ওভারে জিততে দরকার ছিল মাত্র ১৩ রান। আফিফ হোসেন ধ্রুবকে নিয়ে যা দেখেশুনে খেলে পেরিয়ে যান সোহান। আফিফ ১৭ বলে ২৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন আফিফ। অন্যদিকে সোহান অপরাজিত থাকেন ৩৯ বলে ৪৫ রান নিয়ে।
এর আগে টসে জিতে শুরুতে ফিল্ডিং বেছে নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। চাকাভা, বার্ল আর সিকান্দার রাজার ব্যাটিং ভর করে ২৯৮ রান করে স্বাগতিকরা।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন তামিম ইকবাল। আর সিরিজ সেরার পুুরস্কার গেছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের কাছে।
২২, ২৩ আর ২৫ জুলাই হবে দুদলের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে চারটায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ৪৯.৩ ওভারে ২৯৮ (চাকাভা ৮৪, মারুমানি ৮, টেইলর ২৮, মায়ার্স ৩৪, মাধেভেরে ৩, রাজা ৫৭, বার্ল ৫৯, জঙ্গুয়ে ৪* টিরিপানো ০, চাতারা ১, মুজারাবানি ০; তাসকিন ১০-১-৪৮-১, সাইফ ৮-০-৮৭-৩, মুস্তাফিজ ৯.৩-০-৫৭-৩, মাহমুদউল্লাহ ১০-০-৪৫-২, সাকিব ১০-০-৪৬-১, মোসাদ্দেক ২-০-১৩-০)।
বাংলাদেশ: ৪৮ ওভারে ৩০২/৫ (লিটন ৩২, তামিম ১১২, সাকিব ৩০, মিঠুন ০, মাহমুদউল্লাহ ০, সোহান ৪৫*, আফিফ ২৬*; মুজরাবানি ৮-০-৪৩-০, চাতারা ৮-০-৫৬-০, জঙ্গুয়ে ৭-০-৪৪-১, টিরিপানো ৭-০-৬১-২, মাধেভেরে ১০-০-৪৫-২, রাজা ৫-০-২৩-০, বার্ল ৩-০-২৩-০)।