শুভ জন্মদিন স্পিন জাদুকর
স্পিনার! যারা বলের ঘূর্ণির মায়াবী বিভ্রমে কচুকাটা করেন বাইশগজকে, বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটাররাও শিরনত করতে বাধ্য হন যাদের সামনে। যুগে যুগে ক্রিকেট ইতিহাস সাক্ষী হয়েছে এমণ অসংখ্য কিংবদন্তী স্পিনারের। সময়ের পরিক্রমায় ক’জনকেই মনে রেখেছে ক্রিকেট!
তবে অদ্ভুতুড়ে বোলিং অ্যাকশন, কব্জির ওই ছোট্ট মোচড়ে রেকর্ড ভাঙা-গড়ায় যার নিত্য পদচারণা। স্পিন বলকে অন্যন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া লঙ্কান জাদুকর মুত্তিয়া মুরালিধরনের নাম ক্রিকেটের ইতিহাসে থেকে যাবে অবধারিত ভাবে।
শুরুটা শুরু থেকে করা যাক, ১৯৭২ সালে আজকের এই দিনে ক্যান্ডির এক তামিল পরিবারে জন্ম দেশবন্দু মুত্তিয়া মুরালিধরনের। তখন হয়তো কেউ ভাবেওনি নিজের হাতের জাদু দিয়ে একদিন গোটা ক্রিকেট বিশ্বকে বশ করবেন মুরালি। জীবনের ৫০ বছর পেরিয়ে পেছনে ফিরে তাকালে তিনি দেখতে পান ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১৩৪৭ উইকেট শিকারের কীর্তি।
সেইন্ট অ্যান্থনি কলেজে মাত্র নয় বছর বয়সেই ক্রিকেটের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন মুরালি । তবে মজার বিষয় হলো, ইতিহাস গড়া এই স্পিনার সেসময়ে ছিলেন একজন মিডিয়াম পেস বোলার! মুরালির বয়স যখন ১৪, তখন স্কুল দলের কোচ সুনিল ফার্নান্দো তাকে বলেছিলেন অফস্পিন বোলিং শুরু করতে। ভাগ্যিস সুনিল এসেছিলেন মুরালির জীবনে। নয়তো ৮০০ টেস্ট উইকেট কিংবা ৫৩৪ ওয়ানডে উইকেট হয়তো কখনওই দেখত না আলোর মুখ।
১৯৯২ সালের আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেট দিয়ে অভিষেক হয়েছিল মুরালির। ১৯৯৩ সালে ভারতের বিরুদ্ধে ঘটে ওয়ানডে অভিষেক। তবে ক্যারিয়ারে শুরু থেকেই ব্যতিক্রমী বোলিং অ্যাকশনের জন্য বারবার প্রশ্নবিদ্ধ ছিলেন মুরালি।
এমণকি সময় তার ক্যারিয়ারই হুমকির মুখে ফেলে দেন অস্ট্রেলিয়ার আম্পায়ার ড্যারেল হেয়ার। কিন্তু নিজের ক্যারিয়ারকে সফলতার চূড়ায় নিয়ে যেতে এসব কোনো বাধাই গা করেননি মুরালি। ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র বোলার হিসেবে তার নামের পাশে আছে টেস্ট ক্রিকেটে ৮০০ উইকেট।
২০১১ সালে ক্যারিয়ারের ১৩৩তম টেস্ট ও ৩৫০টি ওয়ানডে খেলে ক্রিকেটকে বিদায় জানান মুরালি। ২২ গজের ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের উপর প্রায় ২০ বছর রাজত্ব করা এ কিংবদন্তী ক্রিকেটারের ৫০ তম জন্মবার্ষিকীতে জানাই অনেক শুভ কামনা।