টাইগারদের রূপকথার ২৫ বছর
১৯৯৭ সালের কথা। বাংলাদেশ তখন বিশ্ব ক্রিকেটে আস্তে আস্তে উঁকি দিচ্ছে। কিন্তু কাঙ্খিত সাফল্যের দেখা মিলছিলো না। অবশেষে প্রাক্তন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার গর্ডন গ্রিনিজের হাত ধরে বিশ্ব মঞ্চে প্রথমবারের মতো টাইগাররা চিনিয়েছে নিজেদের জাত। ফাইনালে শক্তিশালী কেনিয়াকে হারিয়ে পৃথিবীকে বাঘের গর্জনে জানিয়েছে, আসছে বাংলাদেশ।
পঁচিশ বছর আগে আজকের এই দিনে, মালায়শিয়ার তৎকালীন কিলাথ ক্লাব মাঠ। যেখানেই রচিত হয়েছিলো বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের মহাকাব্য। যে কাব্যের নায়ক,সাইফুল-এনামুল-হাসিবুল-পাইলট-নান্নুরা।
১২ এপ্রিল শুরু হয় বাংলাদেশের স্বপ্নের ফাইনাল। বৃষ্টি বিঘ্নিত দিনে খেলা গড়িয়েছে পরের দিন রিজার্ভ ডে-তে। অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল। খেলা শুরু সকাল ৭ টায়। বেতারে কান পেতে আছে গোড়া বাংলাদেশ। ভেসে আসল চৌধুরী জাফরুল্লাহ শারাফাতের কণ্ঠ। চরম দুঃসংবাদ! আকাশ ভেঙ্গে অঝোরে বৃষ্টি ঝরছে কিলাথ ক্লাবের মাঠে। ম্যাচ অনিশ্চিত!সে বর্ষণের তীব্রতা ছুঁয়েছে ২৪৯০ কি.মি দূরের কোটি বাঙ্গালির হৃদয়ে। অবশেষে, মাঠ ঠিক হলো, বাংলাদেশ মাঠে নামলো।
বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম দিনে ৮ উইকেটে ২৪১ রান করে কেনিয়া। ফলে রিজার্ভ ডে তে টাইগারদের টার্গেট দাঁড়ায় ২৫ ওভারে ১৬৬।
ক্ষণেক্ষণে বদলেছে ম্যাচের চিত্রনাট্য। একবার কেনিয়ার দিকে যায়তো একবার বাংলাদেশের দিকে! বাংলাদেশর শেষ ওভারে জিততে দরকার ১১ রান। মার্টিন সুজির করা প্রথম বলেই ছক্কা পাইলটের। শেষ পর্যন্ত সমীকরণটা দাঁড়ায় ১ বলে ১ রান। দীর্ঘ ২৫ বছর পরেও স্মৃতির কুঠেরে চির অম্লান, শান্তর নেয়া সেই লেগ বাই।
সেই শিরোপা জয়ের পর একে একে কেটে গেছে ২৫ টি বসন্ত। বাংলাদেশ ক্রিকেটে টনিক হিসেবে কাজ করা এই জয় দিয়েই তো টাইগারদের গর্জনের শুরু। যা চলছে এখনো, আরও বড় অধরা স্বপ্ন ছোঁয়ার লক্ষ্যে।