ইনিংস ব্যবধানে বাংলাদেশের লজ্জার হার
তৃতীয় দিন শেষে যে আশঙ্কা জেঁকে বসেছিল, চতুর্থ দিন সকালে সেটিই সত্যি প্রমাণে মরিয়া হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ইনিংস ব্যবধানে বাংলাদেশের লজ্জার হার হয়ে গেল লঙ্কাদের কাছে।
চতুর্থ দিনে বাংলাদেশ টিকতে পারল কেবল ৩৪ বল। দুই ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ইনিংস ব্যবধানে ও ৭৮ রানে হারল বাংলাদেশ।
২৭ তারিখ, শুক্রবার তৃতীয় দিন শেষেই কলম্বো টেস্টের গতিপথ অনেকটা নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল।
গল টেস্টে ব্যাট হাতে শাসন করা বাংলাদেশ মুখ থুবড়ে পড়ে কলম্বোতে। দুই ইনিংসেই ব্যাটিং ব্যর্থতায় তৃতীয় দিনের খেলা শেষেই ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা জাগে।
প্রথম ইনিংসে ২১১ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে গতকাল তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ১১৫ রান করেছিল বাংলাদেশ।
তখনো ৯৬ রানে পিছিয়ে ছিল সফরকারীরা। হাতে উইকেট ৪টি। ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে অসম্ভব কিছুই করতে হতো বাংলাদেশকে।
একমাত্র আশা ভরসা ছিলেন লিটন দাস। শেষ স্বীকৃত ব্যাটারও তিনি। তবে তিনি আজ ফিরলেন এদিন মাত্র চার বল খেলেই।
৪০ তম ওভারে প্রবাথ জয়াসুরিয়ার বল লিটনের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে উইকেটকিপার কুশল মেন্ডিসের গ্লাভসে। ৪৩ বলে ১৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন।
এরপর মুহূর্তেই যেন সব শেষ।
এর আগে কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) মাঠে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ২৪৭ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ।
জবাবে পাতুম নিশাঙ্কার ১৫৮ রানের ইনিংসে ভর করে ৪৫৮ রানের বড় স্কোর গড়ে স্বাগতিকরা।
২১১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ভুগেছে।
গলে দুই ইনিংসেি ব্যর্থ ছিলেন এনামুল হক বিজয়। তবুও এই ওপেনারকে কলম্বোতে সুযোগ দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
তবে এবারও ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে পারলেন না তিনি। ভালো শুরুর আভাস দিয়ে ফের ব্যর্থ হন এই ওপেনার।
দলীয় ৩১ রানে ১৯ বলে ১৯ রান করে সাজঘরে ফিরে যান এই টাইগার ওপেনার।
বিজয়ের ৩ বল পরই ফেরেন আরেক ওপেনার সাদমান। তার ব্যাট থেকে যোগ হয় ১২ রান। তিনে নামা মুমিনুল হকও ব্যর্থ ছিলেন। ১৫ রানের বেশি করতে পারেননি এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।
টপ অর্ডার ব্যর্থতার পর আশা দেখিয়েও পথ দেখাতে পারেনি মিডল অর্ডার ব্যাটাররা।
শান্ত-মুশফিকরা উইকেটে থিতু হওয়ার পর উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। ৪৮ বলে ১৯ রান করেন শান্ত। ৫৩ বলে ২৬ করেন মুশফিক। ১১ রান করে সাজঘরে ফেরেন মেহেদি হাসান মিরাজও।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন মূলত লঙ্কান স্পিনার প্রবাথ জয়াসুরিয়া। একাই তুলে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্ট সিরিজ শেষে এখন ওয়ানডের লড়াইয়ে নামার অপেক্ষা। তিন ম্যাচ সিরিজে প্রথমটি হবে আগামী বুধবার একই মাঠ কলম্বোয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৪৭
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৪৫৮
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (আগের দিন ১১৭/৬) ৪৪.২ ওভারে ১৩৩ (লিটন ১৪, নাঈম ৫, তাইজুল ৬, এবাদত ৬, নাহিদ ০*; আসিথা ৮-১-২২-১, ভিশ্ব ৬-৩-১৬-০, জয়াসুরিয়া ১৮-২-৫৬-৫, ধনঞ্জায়া ৪-১-১৩-২, দিনুশা ৩-১-৭-০, রত্নায়াকে ৫.২-০-১৯-২)
ফল: শ্রীলঙ্কা ইনিংস ও ৭৮ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: পাতুম নিশাঙ্কা (শ্রীলঙ্কা)।
সিরিজসেরা: পাতুম নিশাঙ্কা (শ্রীলঙ্কা)।