জাপানিজ ব্র্যান্ড মলটেনের সঙ্গে চুক্তি; প্রথমবার ফুটবল পার্টনার পেল বাফুফে
প্রথমবারের মতো ফুটবল স্পন্সর পেয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। ক্রীড়াসামগ্রী প্রস্তুতকারী জাপানিজ ব্র্যান্ড মলটেন গ্রুপ করপোরেশনের সাথে তিন বছরের চুক্তি সেরেছে দেশের ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থাটি।
জাপানিজ ব্র্যান্ড মলটেনের বল ব্যবহৃত হয় এশিয়ান কাপসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে। এবার সেই মানের বলে গড়াবে বাংলাদেশের জাতীয় দল ও ঘরোয়া ফুটবলের খেলা।
পূর্বে বল কেনার বিষয়ে বাফুফে দরপত্র আহবান প্রক্রিয়া ও এজেন্টের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করতো। কিন্তু প্রথমবারের মতো সরাসরি কোনও কোম্পানির কাছ থেকে বল কিনবে বাফুফে।
বাফুফের সহ-সভাপতি ও মার্কেটিং কমিটির চেয়ারম্যান ফাহাদ করিম বলেন,
‘মলটেন আমাদের প্রতি বছর ২ হাজার বল বিনামূল্যে প্রদান করবে। বাকি দুই হাজার বল নির্ধারিত দামের চেয়ে আরো সাশ্রয়ী মূল্যে প্রদান করবে। এতে প্রতি বছর আমাদের ৫০ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে যেটা তিন বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকা।’
বাফুফে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের আর্থিক সহায়তার খাত থেকে বলের পেছনে ব্যয় করত। এখন বলের পার্টনার পাওয়ায় সেই অর্থ অন্য খাতে ব্যয় করার পরিকল্পনা করছে।
‘বল থেকে আমাদের ৫০ লাখ টাকা সাশ্রয় হওয়ায় এখন অন্য ক্রীড়া সামগ্রীতে সেটা ব্যয় হবে। এএফসি’র সঙ্গে আমাদের এটি আলোচনা চলছে। আমাদের সভাপতি তাবিথ আউয়াল দায়িত্ব নেয়ার পর দেখেছেন ফিফা-এএফসির অনুদানের অর্থ কোথায় কত ব্যয় হয় এবং সেটা কীভাবে অন্য মাধ্যমে কমিয়ে এনে অন্যভাবে ব্যয় করা যায়’।
-বলেন ফাহাদ।
২০২৪ সালে বাফুফে তিন হাজারের বেশি মলটেন বল কিনেছিল। বাফুফের ট্যাকনিক্যাল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বাফুফের বছরে ৪ হাজার বল ব্যবহারযোগ্য।
এরপরও যদি বেশি সংখ্যক বল প্রয়োজন হয় সেটা বাফুফে চাইলে অন্য কোম্পানির থেকে কিনতে পারে। এতে মলটেনের কোনো বাধা বা শর্ত নেই।
বাফুফে প্রথমবারের মতো ফুটবল পার্টনার পেয়েছে। অন্য পার্টনারদের মতো মলটেনকে বাফুফে বিভিন্ন বোর্ডে স্থান প্রদান করবে।
মলটেন ছাড়াও এডিডাসসহ আরো অনেক বিশ্বমানের বল প্রস্ততকারী কোম্পানি রয়েছে।
অন্য সব প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে মলটেনকে বেছে নেয়ার কারণ সম্পর্কে বাফুফের এই কর্মকর্তা বলেন,
‘৪-৫ টি কোম্পানির সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। বলের ক্রয়মূল্য অন্য কোম্পানিগুলোও প্রায় একই বলেছিল। তাদের কেউ কেউ বিনামূল্যে পাঁচশ বা সর্বোচ্চ ১ হাজার পর্যন্ত বল দিতে রাজি ছিল।
মলটেন বিনামূল্যের সংখ্যা দেড় হাজার থেকে পরবর্তীতে দুই হাজার করেছে। পাশাপাশি মলটেন একটি ভালো ব্র্যান্ড এবং বাংলাদেশে মলটেন বল দিয়েই বিভিন্ন প্রতিযোগিতা হয়।’
ম্যাচ বল দিয়ে অনুশীলন করতে না পারার আফসোস ক্লাবগুলোর অনেক। মৌসুম শেষ হওয়ার আগে ক্লাবগুলোকে নামকওয়াস্তে বল প্রদান করে ফেডারেশন।
মলটেনের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর ক্লাব, জেলাসহ সর্বত্র প্রয়োজনীয় সংখ্যক বল বন্টনের পরিকল্পনা রয়েছে ফেডারেশনের।
মলটেন কর্পোরেশনের এশিয়ান গ্রুপ লিডার তাকাশি ওজাকি বাফুফের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
তিনি বলেন,
‘ফুটবল একটি আবেগ। সবাই মলটেনের মাধ্যমে এই আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে থাকুক। বাফুফের অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত।’
বাফুফের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন মার্কেটিং কমিটির চেয়ারম্যান ফাহাদ করিম। এই সময় দুই সহ-সভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদী ও ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরি হ্যাপি উপস্থিত ছিলেন।