পোপের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি, ডাকেটের বিধ্বংসী ৮৬ রানের ঝড়
লন্ডনের দা ওভালে আলোকস্বল্পতা ও বৃষ্টির কারণে সিরিজের তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিনে খেলা হয়েছে মাত্র ৪৪.১ ওভার। ইংল্যান্ড প্রথম দিন শেষে ৩ উইকেটে তুলেছে ২২১ রান।
ইংল্যান্ডের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেয়ে বেন স্টোকসের চোটের কারণে খেলতে নামা পোপ, প্রথম দুই টেস্টে ব্যাট হাতে তেমন সফল ছিলেন না। মাত্র ৩০ রান করেছিলেন দুই টেস্টে, তিনবারই দুই অঙ্কে যেতে ব্যর্থ হন। তবে এবার দারুণ প্রত্যাবর্তন করেছেন। অপরাজিত আছেন ১০৩ রানে, ১০৩ বলের ইনিংসে মেরেছেন ১৩টি চার এবং ২টি ছক্কা।
এই সেঞ্চুরি পোপের টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম, আর মজার ব্যাপার হলো, এই সাত সেঞ্চুরি এসেছে সাতটি ভিন্ন দলের বিপক্ষে। টেস্ট ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম সাতটি সেঞ্চুরি সাতটি আলাদা দলের বিপক্ষে করার অনন্য কীর্তি গড়েছেন তিনি।
ওভালে পোপের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের রেকর্ড বরাবরই নজরকাড়া। এই মাঠে তার ব্যাটিং গড় ছিল অসাধারণ ৮০.৬৪, ২৯ ম্যাচের ৪৩ ইনিংসে তিনি করেছেন ১১ সেঞ্চুরি ও ৮টি ফিফটি। তবে টেস্টে এখানে এটিই তার প্রথম সেঞ্চুরি। আগের পাঁচ ইনিংসে তার সেরা ছিল ৮১ রান।
ওপেনার ডাকেটও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৯ বলে ৮৬ রান করেন তিনি। বোলারদের ওপর প্রথম দিকে কিছুটা ধীরগতি দেখালেও পরে বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে শ্রীলঙ্কার বোলাররা লাইন ও লেংথ ঠিক রাখতে পারেননি, যার সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগান ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান রেট ছিল ৫-এর ওপরে।
ডাকেট ও ড্যান লরেন্স উদ্বোধনী জুটি শুরু করেন, তবে লরেন্সের ব্যর্থতা অব্যাহত থাকে। লাহিরু কুমারার শর্ট বল পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন লরেন্স, মাত্র ২ রান করে। ডাকেট অবশ্য তার ইনিংসটি বড় করেন এবং ৪৮ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন। এরপর আলোকস্বল্পতায় খেলা কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়, পরে শুরু হলেও বৃষ্টির কারণে আবার বন্ধ হয়ে যায়, আর লাঞ্চ বিরতি এগিয়ে আনা হয়।
বিরতির পর ফের খেলা শুরু হলে ডাকেট ও পোপ জুটি দারুণভাবে দলকে এগিয়ে নেন। ডাকেট স্কুপ শট খেলে একটি চার ও ছক্কা মারেন, কিন্তু স্কুপ করার চেষ্টায়ই আউট হন তিনি। মিলান রাত্নায়েকের বল স্কুপ করার সময় বলের টাইমিং ঠিক হয়নি, কিপার চান্দিমাল সহজ ক্যাচ নেন, আর ৯৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি ভাঙে।
গত টেস্টে লর্ডসে দুইটি সেঞ্চুরি করা জো রুট এবার থিতু হলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। কুমারার শর্ট বল পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন মাত্র ১৩ রান করে।
পোপ ৮৪ রান নিয়ে চা-বিরতিতে গিয়েছিলেন, ফিরে এসে মাত্র ১৮ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। অধিনায়ক হিসেবে তার টেস্ট ক্যারিয়ারের এটি দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। গ্রাহাম গুচ ১৯৯০ সালে লর্ডসে ভারতের বিপক্ষে ৯৫ বলে সেঞ্চুরি করে এই রেকর্ডের শীর্ষে আছেন।
তবে পোপের সেঞ্চুরির পর এক ওভার যেতেই আবার আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। আধা ঘণ্টা অপেক্ষার পর দিনের খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করেন আম্পায়াররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৪৪.১ ওভারে ২২১/৩ (ডাকেট ৮৬, লরেন্স ৫, পোপ ১০৩*, রুট ১৩, ব্রুক ৮*; আসিথা ১৪-০-৫৮-০, ভিশ্ব ৭-০-২৯-০, কুমারা ১২.১-১-৮১-২, রাত্নায়েকে ৮-২-৩৪-১, ম্যাথিউস ৩-০-১৪-০)