খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৪

বহুল প্রতীক্ষার পর অবশেষে কোহলি-রোহিতদের হাতে স্বপ্নের ট্রফি

ইতিহাস রচিত হলো বার্বাডোজের ব্রিজটাউনে।শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে শিরোপা হাতে তুললো রোহিত-কোহলিরা।বার্বাডোজের ব্রিজটাউনে টানটান উত্তেজনার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল ভারত জিতল ৭ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের পর দ্বিতীয়বারের মতন এই সংস্করণের চ্যাম্পিয়ন হলো তারা।৭৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে ম্যান অফ দ্য ফাইনাল নির্বাচিত হয়েছেন বিরাট কোহলি। অন্যদিকে পুরো টুর্নামেন্টে বোলিং জাদু দেখিয়ে আসা জাসপ্রীত বুমরাহ জিতেছে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার।

কি ছিলো না এই রোমাঞ্চকর ম্যাচে।পুরো টুর্ণামেন্ট জুড়ে ফ্লপ তকমা পাওয়া বিরাটই হয়েছেন এই ম্যাচের ত্রাতা।৭৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে দলকে বড় স্কোর এনে দিয়েছেন।
২মাস আগেও ভ্রাত্য থাকা হার্দিক পাণ্ডিয়াকেও জয়ের কৃতিত্ব দিতে পারে ভারতীয়রা।বেশ কঠিন সময় পার করছিলেন ভারতের এই অলরাউন্ডার।তবে মুখে কিছু না বলেও পারফরম্যান্স দিয়েই নিজেকে প্রমাণ করেছেন হার্দিক।তাই এই হার্দিককেই এখন জয়ের নায়ক মানছেন কোটি ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থক।সব মিলিয়ে পরিপূর্ণভাবেই শিরোপা জিতলো মাইটি ইন্ডিয়া।

শেষ ওভারে বোলিং করার ভার পড়ে হার্দিকের কাঁধে।শেষ বলটি করে বসে পড়লেন হার্দিক।বাকি সবাই ছুটে এলেন তার কাছে।অশ্রুসিক্ত সতীর্থরা সবাই একে উপরকে জড়িয়ে ধরলেন।হঠাৎ করে উৎসবের মহল তৈরি হয়ে গেলো ভারতীয় শিবিরে।শেষ কয়েক মিনিটে যা ঘটে গেল তা ছিল অবিশ্বাস্য।

১৭৭ রান তাড়ায় বাজে শুরুর পর ক্লাসেনের তাণ্ডবে ম্যাচ হেলে যায় প্রোটিয়াদের দিকে। শেষ চার ওভারে জিততে দক্ষিণ আফ্রিকার চাই ২৬ রান। হাতে তখন ৬ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকা কয় বল আগে খেলা শেষ করবে সেই বাজিও হয়ত ধরতে যাবেন তখন কেউ। ওই সময়ই মোড় ঘুরিয়ে দেন হার্দিক। ১৭তম ওভারের প্রথম বলটা স্লোয়ার করেছিলেন ওয়াইড লাইনে। ক্লাসেন তাতে ব্যাট ঘুরিয়ে ক্যাচ দেন কিপারের গ্লাভসে। ২৭ বলে ৫২ করে হাঁটা ধরেন তিনি। ম্যাচ তখনো দক্ষিণ আফ্রিকার কাছেই। ওই ওভারে দেন ৪ রান।

১৮তম ওভার করতে এসে পুরো বিশ্বকাপে দুর্দান্ত বল করা জসপ্রিট বুমরাহ ঘুরিয়ে দেন ম্যাচের ছবি। মার্কো ইয়ানসেনকে আউট করে দেন স্রেফ ২ রান। তাতে শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন দাঁড়ায় ২০ রানের। আর্শদীপ ধরে রাখেন স্নায়ু। কেশব মহারাজ-ডেভিড মিলারকে বেধে রাখেন ক্রিজে। তার ওভার থেকেও আসেনি ৪ রানের বেশি।

শেষ ওভারে ১৬ রান আটকানোর ভার পড়ে হার্দিকের উপর। তার ল ফুলটস ছক্কায় উড়াতে অনেকটা সফল হয়ে যাচ্ছিলেন মিলার। বাউন্ডারি লাইনে প্রবল চাপে চোখ ধাঁধানো ক্যাচ হাতে জমান সূর্যকুমার যাদব। ১৭ বলে ২১ করে মিলারের আউটে ম্যাচের গতিপথ তখন চূড়ান্ত হয়ে যায়। হার্দিকের বাকি বল থেকে আর হিরো হতে পারেননি প্রোটিয়া টেল এন্ডারের কেউ।

ফাইনালের দিন টস জিতে ব্যাটিং বেছে রোহিত আগের মতই আগ্রাসী শুরুর ঢঙে ছিলেন। এবার আর হয়নি। হতে দেননি কেশব মহারাজ। রোহিত পর কোন রান করার আগেই ফিরিয়ে দেন পান্তকে। সূর্যকুমার যাদব নেমে বড় মঞ্চে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত।

তবে কোহলি ছিলেন অবচিল। শুরু থেকে রান বাড়াচ্ছিলেন তিনিই। ফাইনালের মঞ্চ পেয়ে জ্বলে উঠেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটার। কোহলি ইনিংসের মেরুদণ্ডের ভূমিকা নেন। তাকে এক পাশে রেখে ঝড় তুলেন অক্ষর।

দ্রুত উইকেট পড়ায় শিভম দুবের বদলে তাকে নামিয়ে ফাটকা কাজে লাগায় ভারত। বিশেষ করে মহারাজের স্পেল এলোমেলো করতে থাকেন তিনি। তার ইনিংস থেমেছে অবশ্য আয়েশি ঢঙে। কিপারের হাতে বল রেখে রান নিতে গিয়ে নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে ফিরতে করেন দেরি। ৩১ বলে ৪ ছক্কায় করে যান ৪৭।

দুবেও তার ভূমিকা রেখেছেন। ১৬ বলের উপস্থিতিতে করেছেন ২৭। হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজার খেলার জন্য বেশি বল বাকি ছিলো না। ব্যাট করার জন্য উইকেট বেশ ভালো হলেও ১৭৬ রানের পুঁজি ফাইনালের মতন মঞ্চের জন্য ছিলো বেশ জুতসই। ক্লাসেন, ডি ককদের ঝলকের পরও স্নায়ু ধরে রেখে ভারত ম্যাচ জিতে দেখিয়েছে জেতার মতন রানই আনতে পেরেছিলো তারা।

শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে এই সংস্করণের ২য় শিরোপা জিতে কোহলিরা।পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত বোলিং করা জসপ্রীত বুমরাহ অর্জন করেন সেরা খেলোয়াড়ের কৃতিত্ব।দল শিরোপা এনে দেওয়ার দিনেই আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্যারিয়ারকে বিদায় বলে দিয়েছেন কিং কোহলি।নিজের টি-২০ ক্যারিয়ার ইতি টানার জন্য এরচেয়ে সুন্দর মহল হয়তো আর কিছুই হতে পারে না।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy