ফুটবল ইতিহাসে দীর্ঘতম ম্যাচের বিশ্বরেকর্ডের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ
ফেডারেশন কাপের অবশিষ্ট খেলা আজ
ফুটবলের ৯০ মিনিটের একটা ফাইনাল শেষ হচ্ছে ৫ দিন পর। ফুটবলের ডেটা সংরক্ষণ যুগের পর থেকে ম্যাচের দৈর্ঘ্যের হিসেবে এটিই এখন বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম ম্যাচ। এক কথায় বলাই যায়, ফুটবল ইতিহাসে দীর্ঘতম ম্যাচের বিশ্বরেকর্ডের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বাইলজের সুবাদে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ম্যাচের আয়োজক এখন বাংলাদেশ। পেছনে পড়েছে ইউক্রেনের শীর্ষ লিগের রেকর্ডটা।
ফেডারেশন কাপের ফাইনাল মাঠে গড়িয়েছিল গত ২২ এপ্রিল।
তবে ময়মনসিং জেলা স্টেডিয়ামের সেই ফাইনাল শেষ হয়নি কালবৈশাখী আর আলোকস্বল্পতার কারণে। শুরুতে ঝড়ের কারণে খেলা ছিল বন্ধ।
পরবর্তীতে আলো কমে আসায় ম্যাচ হয়ে যায় বন্ধ। ততক্ষণে অবশ্য নির্ধারিত ৯০ মিনিট পার হয়ে খেলা গড়িয়েছিল অতিরিক্ত সময়ে।
বাকি থাকা ১৫ মিনিটের খেলা মাঠে গড়াবে আজ বিকেল সাড়ে ৩টায়। আর এরই সুবাদে ফুটবল ইতিহাসে দীর্ঘতম ম্যাচ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ফেডারেশন কাপের ফাইনাল।
পেছনে পড়েছে ২০২৩ সালে দিনপ্রো-১ এবং এফসি অলোকসান্দ্রিয়ার মধ্যেকার ম্যাচটি। ফুটবলে পেনাল্টি শ্যুটআউট আসার পর থেকে এটিই ছিল সবচেয়ে লম্বা ম্যাচ।
২০২৩ সালের এই ম্যাচটি শেষ হতে সময় নিয়েছিল ৪ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট।
সেই ম্যাচ শুরুর ৩৪ মিনিট রাশিয়ান বিমান হামলার শঙ্কায় ‘এয়ার সাইরেন’ বাজানো হয়। যে কারণে ম্যাচ থেমে যায়। দুই দলের খেলোয়াড়রাই আশ্রয় নেন ড্রেসিংরুমে।
শঙ্কা পার করে যখন স্বাভাবিক নিয়মে খেলা শেষ, তখন পার হয়ে গেছে ৪ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট।
তবে একটানা খেলা চলেছে এমন বিবেচনায় ফুটবলের সবচেয়ে লম্বা ম্যাচ ছিল ৩ ঘণ্টা ২৩ মিনিটের। স্টকপোর্ট কাউন্টি এবং ডনকস্টার রোভারের মাঝে হয় সেই ম্যাচ। ২-২ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচটায় পরের গোল না হওয়া অব্দি খেলা চলে।
সেটা ছিল ১৯৪৬ সালে। সেসময় পেনাল্টি শ্যুটআউটের নিয়ম ছিল না। তাই ১২০ মিনিটের পর ‘পরের গোল না হওয়া’ পর্যন্ত খেলা চলতো।
এটাই পরবর্তীতে ফুটবলে গোল্ডেন গোলের নিয়ম চালু করে দেয়।
তবে অফিসিয়াল বা পেশাদার ফুটবল না, এমন ম্যাচও বিবেচনায় আনলে সবচেয়ে লম্বা ম্যাচ ১৬৯ ঘণ্টার। ২০১৯ সালে ওয়েলশে এক প্রীতি ম্যাচ ছিল সেটি।
ওই ম্যাচে খেলোয়াড়দের মাঝপথে ঘুমানোর ব্যবস্থাও ছিল।
তবে বাংলাদেশের ফেডারেশন কাপের ফাইনাল ছিল অফিসিয়াল ম্যাচ। ২২ এপ্রিল দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে শুরু হওয়া ম্যাচ শেষ হলো ২৯ এপ্রিলে এসে।
বাফুফের ফেডারেশন কাপের বাইলজ অনুযায়ী– প্রাকৃতিক বা বিশেষ কোনো ঘটনার কারণে খেলা যদি স্থগিত বা বন্ধ হয়, পরবর্তীতে সেখান থেকেই খেলা শুরু হবে।
সে অনুযায়ী চলতি ম্যাচ যদি অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়, আলোক স্বল্পতায় তাহলে খেলার বাকি অংশ অন্য দিন অনুষ্ঠিত হবে। ফেডারেশন/লিগ কমিটি সেই দিন ধার্য করবে।
কে জানতো, এমন বাইলজের সুবাদেই ফুটবলের সবচেয়ে লম্বা ম্যাচের রেকর্ড করে নেবে বাংলাদেশ। যদিও দেশে এর আগে সমর্থকদের আগ্রাসী আচরণের কারণে ফুটবল ম্যাচ পণ্ড হওয়ার ঘটনাও আছে।
৭০ এবং ৮০’র দশকে ফুটবলের রমরমা দিনে ঘটেছিল এমন কিছু। তবে সেসব ক্ষেত্রে ম্যাচ শুরু হয়েছিল নতুন করে। ফেডারেশন কাপে তেমন কিছু ঘটেনি।