সিলেটকে গুঁড়িয়ে প্লেঅফে চিটাগং; রংপুরকে হারিয়ে আশাবাদী খুলনা
জয় পেলেই নিশ্চিত প্লে অফ, কিন্তু হারলে অপেক্ষা গড়াবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে আজ মাঠে নেমেছিল চিটাগাং কিংস। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে রীতিমতো তুলোধুনো করে ছেড়েছে কিংসরা। ৯৬ রানের বর জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই প্লে অফ নিশ্চিত করল চিটাগাং। অন্যদিকে টানা ৭ হারে আসর শেষ করেছে স্ট্রাইকার্সরা।
মিরপুরে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৯৬ রান সংগ্রহ করেছে চিটাগাং। দলের হয়ে ফিফটি করেছেন খাজা নাফি ও মোহাম্মদ মিঠুন। জবাবে খেলতে নেমে ১৫ ওভার ২ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১০০ রানের বেশি করতে পারেনি সিলেট।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই বেশ ভুগেছে সিলেট। ২ রান করে জাওয়াদ আবরার সাজঘরে ফিরলে ৩ রানের বেশি স্থায়ী হয়নি সিলেটের উদ্বোধনী জুটি। তিনে নেমে জাকির হাসান ফিরেছেন ১২ বলে ১৯ রান করে। রনি তালুকদারও উইকেটে থিতু হয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১২ বলে করেছেন ১৭ রান।
মিডল অর্ডার ব্যাটারদের সবাই শুরু পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি। জাকের আলি, নাহিদুল ইসলাম কিংবা আরিফুল হকরা কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তাদের ব্যর্থতায় দলও সুবিধা করতে পারেনি। একশ ছুঁয়েই অলআউট হয়েছে তারা।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি চিটাগাং কিংস। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফিরেছেন পারভেজ হোসেন ইমন। অফফর্মে থাকা এই ব্যাটার ৩ বলে ১ রানের বেশি করতে পারেননি। তিনে নেমে ১ রানে ফিরেছেন গ্রাহাম ক্লার্কও।
১৭ রানে ২ উইকেট হারানোর পরও রানের চাকা সচল রাখেন খাজা নাফি। এক প্রান্তে উইকেট হারালেও আরেক প্রান্তে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন এই ওপেনার। পেয়েছেন ফিফটির দেখাও। ২৭ বলে মাইলফলক ছুঁয়েছেন তিনি। এরপর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ৩০ বলে ৫২ রান করেছেন তিনি। নাফিকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন। অধিনায়কও পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরির দেখা। তার ব্যাট থেকেও এসেছে ৫২ রান।
মিডল অর্ডারে হায়দার আলি-রাহাতুল ফেরদৌসরা সুবিধা করতে পারেননি। তবে শেষদিকে শামিম হোসেন-খালেদ আহমেদ মিলে দারুণ ফিনিশিং দিয়েছেন। শামিম করেছেন ২৩ বলে ৩৮ রান। আর খালেদ অপরাজিত ছিলেন ১৩ বলে ২৫ রান করে।
অন্যদিকে, দিনের প্রথম ম্যাচে টানা চতুর্থ হরের দেখা পায় রংপুরের। অথচ টুর্নামেন্টের প্রথম ৮ ম্যাচে টানা জয়ে কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করেছিল তারা। আজ গ্রুপের শেষ ম্যাচে জয়ের জন্য ২২১ রানের বিশাল লক্ষ্য পায় রংপুর। লক্ষ্যটা বড় হওয়ায় ইনিংসের শুরুতেই বড় জুটি এনে দিতে হতো রংপুর রাইডার্সের দুই ওপেনারকে। সেটা পারেননি তৌফিক খান-সৌম্য সরকার। ফলে ম্যাচের ফল যা হওয়ার কথা তা-ই হয়েছে। খুলনা টাইগার্সের কাছে ৪৬ রানে হেরেছে রংপুর।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩৬ রানেই ২ উইকেট হারায় তারা।
তবে অপর প্রান্ত আগলে ধরে থাকেন ওপেনার সৌম্য। মাঝে সতীর্থদের সঙ্গে বেশ কটি ছোট ছোট জুটি গড়ে দলকে জয়ের আশা দেখাচ্ছিলেন তিনি।
তবে সতীর্থরা সৌম্যর সঙ্গে বড় জুটি গড়তে না পারায় জয়ের আশা ক্ষীণ হয়ে আসতে থাকে। যার ফলে শেষে শুধু পরাজয়ের ব্যবধানটাই কমাতে পারেন বাংলাদেশি ওপেনার।
এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলেন ৭৪ রানের ইনিংস। ১৫৪.১৬ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি সাজান ৫ ছক্কা ও ৬ চারে। খুলনার সেরা বোলার মুশফিক হাসান। গোড়ালির চোট কাটিয়ে প্রায় ৯ মাস পর প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে নেমে ২৪ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন এই পেসার।
এ জয়ে শেষ চারে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা আরো উজ্জ্বল হয়েছে খুলনার।
১০ পয়েন্টে বর্তমানে ৫ নম্বরে তারা। শেষ ম্যাচে ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে জিতলেই কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত হবে তাদের। খুলনার এই জয়ে বড় অবদান নাঈম শেখের। তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতেই ২২০ রানের সংগ্রহ পায় খুলনা। বিপিএলের ইতিহাসে বাংলাদেশের দশম ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি পাওয়া নাইম ৬২ বলে ১১১ রানের অপরাজিত ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৮ ছক্কা ও ৭ চারে।