টাইব্রেকারে হেরে আরো একটি হতাশার গল্প লিখলো ব্রাজিল
টাইব্রেকারে আরো একটি হতাশার গল্প লিখলো ব্রাজিল।উরুগুয়ের ১০জনের দলে পরিণত হওয়া টিমের সাথেও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি তারা।২০১৮ এবং ২০২২ এর পর আবারো আরো একটি ম্যাচে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিলো ব্রাজিল।বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি তারা। প্রথমার্ধে ম্যাড়মেড়ে খেলা চলে।দুদলই শারীরিক ফুটবল খেলার চেষ্টা করে।প্রথমার্ধ শেষে গোলশূন্য ড্র করে মাঠ ছাড়ে দু’দল।দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় ব্রাজিল।নান্দেজ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে।নির্ধারিত সময়ে আর গোলের দেখা না পেলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। আর টাইব্রেকারে ৪-২ গোলের ব্যবধানে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যায় তারা।
আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ, রোনাল্ড আরাওহোর সঙ্গে রাফিনহার বাকবিতণ্ডা, সেখানে আবার সতীর্থদের জড়িয়ে পড়া; অনেক কিছুই ছিল ব্রাজিল-উরুগুয়ের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথমার্ধে। গোলটাই শুধু অনুপস্থিত ছিল। ডারউইন নুনেজ আর রদ্রিগোদের কয়েকটি সুযোগ নষ্টে বাড়তে থাকে ম্যাচের বয়স। অবশ্য মিনিট দশেকের মাথায় নুনেজ যে বার ব্যর্থ হন, সেটাকে সুযোগ নষ্ট বলা যায় কই! ভেসে আসা বলটার গতি এত বেশি ছিল যে, ঠিকঠাক মাথা লাগাতে পারেননি তিনি। অ্যালিসন বেকার হয়তো তখন হাফছেড়ে বাঁচেন।
২৮ মিনিটে বোধহয় ম্যাচের সবচেয়ে বড় সুযোগটা তৈরি করেছিল ব্রাজিল। ডি বক্সের ভেতর এন্দরিক বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন রাফিনহাকে। কিন্তু বার্সা ফরোয়ার্ড বলের কাছে যাওয়ার আগেই বিপদমুক্ত হয় উরুগুয়ে। মিনিট কয়েক পর নুনেজের হেড যায় ব্রাজিলের পোস্টের কয়েক হাত ওপর দিয়ে। পরক্ষণেই কাউন্টার অ্যাটাকে গিয়ে দারুণ সম্ভাবনা সত্ত্বেও গোল করতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিল। প্রথমার্ধের শেষদিকে ব্রাজিল ও উরুগুয়ে আরও কয়েক বার গোল পেয়েও পায়নি!প্রথমার্ধে বাকবিতণ্ডা যতটুকু হয়েছিল, তাকে ছাড়িয়ে যায় দ্বিতীয়ার্ধ। কয়েক বার হাতাহাতিও হয় দুদলের মধ্যে। কিন্তু চির আকাঙ্খিত গোলটা মিলছিল না। ৭৪ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে। বল নিয়ে দৌড়াতে থাকা রদ্রিগোকে পেছন থেকে পায়ে ট্যাকেল করেন নাহিতান নান্দেজ। প্রথমে তাকে হলুদ কার্ড দেন রেফারি। কিন্তু ভিএআর রিভিউয়ের পর লাল কার্ড দেখিয়ে নান্দেজকে মাঠছাড়া করেন রেফারি।
১০ জনের দলে পরিণত হলেও রক্ষণে ধৈর্য্যের পরিচয় দেয় উরুগুয়ে। বারবার আক্রমণ সামলানো দলটি ৯০ মিনিট ড পর্যন্ত ব্রাজিলকে আটকে রাখতে সক্ষম হয়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
প্রথম টাইব্রেকার নিতে আসেন ফেদে ভালভার্দে। কোনো ভুল করেননি তিনি। বামপ্রান্তে ঝাঁপ দিয়েছিলেন অ্যালিসন বেকারও। কিন্তু বলের নাগাল পাননি। ব্রাজিল প্রথম শটটাই মিস করে, এডার মিলিটাওয়ের শট ফিরিয়ে দেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক সার্জিও রকেট। উরুগুয়ে দ্বিতীয় শটেও সফল হয়। আন্দ্রেস পেরেইরা ব্রাজিলের আশা বাঁচিয়ে রাখেন দ্বিতীয় শট নিতে এসে।
তৃতীয় শটেও গোল পায় উরুগুয়ে, ব্রাজিল আবার মিস করে। ফলে অনেকটা ছিটকেই যায় পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু অ্যালিসন উরুগুয়ের চতুর্থ শট ফিরিয়ে ব্রাজিলের আশা বাঁচিয়ে রাখেন। গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লিও হতাশ করেননি। কিন্তু পঞ্চম শট নিয়েই ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে দেয় উরুগুয়ে। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেয় ব্রাজিল।