শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কা
ব্যাটিংয়ে চমক দেখিয়ে দারুণ করে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষকে দেয় ১৮৪ রানের কঠিন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু বল হাতে প্রতিপক্ষকে আটকাতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল। ক্যাচ মিসের মহড়া আর বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত তীরে এসে তরি ডুবে বাংলাদেশের।
এশিয়া কাপে আজ বৃহস্পতিবার গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ২ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। টানা দুই জয়ে ‘বি’ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ চার নিশ্চিত করেছে আফগানিস্তান। এবার বাংলাদেশকে হারিয়ে এই গ্রুপের রানার্সআপ হয়ে শেষ চারে উঠল লঙ্কানরা। এদিন আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮৩ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৪ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ওপেনিংয়ে পরিবর্তন এনে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের নাঈম-এনামুলকে বাদ দিয়ে সুযোগ দেওয়া হয় সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজকে। তবে ৩ বছর পর জাতীয় দলে ফেরা সাব্বির সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ফার্নান্দের করা শেষ বলে পুল করার চেষ্টা করেন সাব্বির। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় উইকেটকিপারের হাতে। ৫ রানে ফেরেন সাব্বির।
সাব্বির সুযোগ কাজে না লাগাতে পারলেও মিরাজ ঠিকই ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়ে দারুণ করেছেন। পাওয়ার প্লেতে দারুণ ব্যাটিং উপহার দিয়েছেন তিনি। তাঁর ব্যাটে চড়ে পাওয়ার প্লেতে ৫৫ রান পায় বাংলাদেশ। তবে সপ্তম ওভারেই মিরাজের ঝড় থামিয়ে দেন হাসারাঙ্গা। লঙ্কান তারকা বলে স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হন মিরাজ। ২৬ বলে ৩৮ রান করেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে এটাই তাঁর ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ইনিংস।
এরপর উইকেটে এসে থিতু হতে পারেননি মুশফিক (৪)। বাজে শট খেলতে গিয়ে দ্রুতই আউট হন তিনি। এরপরও অবশ্য ছন্দ হারায়নি বাংলাদেশ। আফিফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়েন সাকিব। ওই জুটিতে ২৪ রান পায় বাংলাদেশ। সাকিবের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি।
১১তম ওভারে মাহিস থিকশানার অফ স্পিনে কাটা পড়েন সাকিব। ২২ বলে ২৪ রান করে ফেরেন অধিনায়ক। সাকিব ফিরলে বাংলাদেশের রানের গতি কমতে থাকে। উইকেটে এসে মন্থর ব্যাট করেন মাহমুদউল্লাহ। তবে হাতখুলে ব্যাট চালান আফিফ। মাত্র ২২ বলে তিনি উপহার দেন ৩৯ রানের ইনিংস। ২৭ রান করে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। ৫৭ রানের এই জুটি ভাঙার পর শেষ দিকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও তাসকিনের ব্যাটে চড়ে শক্ত পুঁজি পায় বাংলাদেশ। শেষ দিকে সৈকত খেলেন ২৪ রানের ইনিংস। তাসকিন আহমেদ করেন ১১ রান।
রান তাড়ায় শুরুটা ভালো করে শ্রীলঙ্কা। দুই ওপেনার কুশল মেন্ডিস ও নিসানকা মিলে ভয় ধরিয়ে দেন বাংলাদেশকে। কিন্তু অভিষিক্ত ইবাদত উইকেটে এসেই ভাঙেন এই জুটি। ২০ রানে বিদায় করেন নিসানকাকে। একই ওভারে সাজঘরে পাঠান উইকেটে আসা আসালাঙ্কাকেও।
জোড়া ধাক্কা খেয়েও রানের গতি সচল রাখে শ্রীলঙ্কা। পরের বার আক্রমণ এসে দানুশকা গুনাথিলাকাও আউট করেন ইবাদত। লঙ্কানদের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। ৭৭ রানে ৪ উইকেট হারালেও শ্রীলঙ্কার রানের চাকা সচল রেখেছেন কুশল মেন্ডিস। জীবন পেয়ে তিনি খেলেন ৩৭ বলে ৬০ রানের ইনিংস। তিনি ফিরলে শেষ দিকে বাকিদের ওপর ভর করে ম্যাচ নিজেদের করে নেয় শ্রীলঙ্কা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৮৩/৭
(মিরাজ ৩৮, সাকিব ২৪, আফিফ ৩৯, মাহমুদউল্লাহ ২৭, মোসাদ্দেক ২৪*;হাসারাঙ্গা ৪-০-৪১-২, করুনারত্নে ৪-০-৩২-২)।
শ্রীলঙ্কা: ১৯.৩ ওভারে ১৮৪/৮
(নিসানকা ২০, মেন্ডিস ৬০, শানাকা ৪৫ করুনারত্নে ১৬, তাসকিন ৪-০-২৪-২, ইবাদত ৪-০-৫১-৩)।
ফল : ২ উইকেটে জয়ী শ্রীলঙ্কা।