৪১ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ভারত-পাকিস্তান এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে। এই আসরের গ্রুপ পর্ব ও সুপার ফোরের দুই ম্যাচে তাদের মাঝে খেলার চেয়ে বাইরের বিষয়েই বিতর্ক ও আলোচনা হয়েছে বেশি।
ফাইনালের আগে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের দায়ে ভারত-পাকিস্তানের দুই ক্রিকেটারকে আইসিসির শাস্তি পেতে হয়েছে।
ভারত-পাকিস্তানের তিন ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিল দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই ও পিসিবি)। যা নিয়ে গতকাল (শুক্রবার) দুবাইয়ে শুনানি হয়েছে।
সেখানে ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ও পাকিস্তানি পেসার হারিস রউফকে ম্যাচ ফি’র ৩০ শতাংশ করে জরিমানা করেছেন আইসিসির ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসন।
অভিযুক্ত আরেক পাকিস্তানি ব্যাটার সাহিবজাদা ফারহান অবশ্য কোনো শাস্তি পাননি। তবে সতর্ক করা হয়েছে তাকে।
এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ঝোড়ো ফিফটি করে ‘গানশট’ উদযাপন করেছিলেন সাহিবজাদা ফারহান।
তার উদযাপনের ধরন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।
বিসিসিআই এ নিয়ে অভিযোগ করে আইসিসির কাছে।
পরে ফারহান দাবি করেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক বার্তা দেননি। তার উদযাপনের ধরন ক্রিকেটীয় রীতির মধ্যেই পড়ে। তার মধ্যে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না।
এ ছাড়া অতীতে মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং বিরাট কোহলিও ‘গানশট’ উদযাপন করেছেন বলে নিজের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন ফারহান।
তার এমন উত্তরে আইসিসি বেকায়দায় পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রউফ-ফারহান দুজনের নামেই বিসিসিআই অভিযোগ দিয়েছিল।
সুপার ফোরের একই ম্যাচে রউফ ভারতীয় সমর্থকদের উদ্দেশে আঙুল দিয়ে ‘৬–০’ সংকেত দেখান এবং বিমান ভূপাতিত হওয়ার অঙ্গভঙ্গি করেন। যা নেটিজেনরা ভারতের সামরিক বাহিনীকে কটাক্ষ বলে দাবি করেন।
এর আগে ভারত-পাকিস্তান গ্রুপপর্বের ম্যাচে ১৪ সেপ্টেম্বর মুখোমুখি হয়েছিল।
সেই জয় ভারতের সামরিক বাহিনীকে উৎসর্গ করার কথা সংবাদ সম্মেলনে জানান অধিনায়ক সূর্যকুমার। যা ‘রাজনৈতিক বার্তা’ উল্লেখ করে আইসিসির কাছে অভিযোগ দেয় পিসিবি।
তিন ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে শুনানি নিয়ে ইএসপিএন ক্রিকইনফো বলছে, সাধারণত অভিযুক্ত ক্রিকেটাররা দোষ স্বীকার করলে শুনানি ছাড়াই শাস্তি ঘোষণা করা হয়।
তবে সেরকম কিছু না হওয়ায় দুবাইয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয় গতকাল। যেখানে তিন ক্রিকেটার নিজেদের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।
তবে সূর্যকুমার ও রউফের বক্তব্যকে যে আইসিসি সন্তোষজনক মনে করেনি। তারই ফল হিসেবে এসেছে জরিমানার শাস্তি।
বিসিসিআই অবশ্য সূর্যকুমারকে দেওয়া শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করেছে।
প্রসঙ্গত, এবারের এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তানের লড়াইয়ে প্রথম বিতর্ক ওঠে সূর্যকুমারদের ‘নো হ্যান্ডশ্যাক’ নীতিতে চলার কারণে।
যাতে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের ভূমিকা ছিল দাবি করে পাকিস্তান তাকে প্রত্যাহারের আবেদন জানায়।
তবে আইসিসি তাকে বহাল রেখেই এশিয়া কাপের বাকি ম্যাচগুলো চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়।
এর মাঝে একই দাবিতে পাকিস্তান ম্যাচ বয়কটের হুমকি দেয়, শেষমেষ তাদের দাবি– ক্ষমা চেয়েছেন পাইক্রফট।
এরপরই ফের মাঠে নামে সালমান আগার দল।
এসব বিতর্কের মাঝেই রোববার ফাইনালে নামছে ভারত-পাকিস্তান।


