ব্যাটারদের ব্যর্থতায় আরেকটি সিরিজ খোয়ালো বাংলাদেশ
ব্যাটিং ব্যর্থতায় দেশের মাটিতে আরেকটি সিরিজ খোয়ালো বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট ড্রয়ের এর সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট টাইগাররা হেরেছে ১০ উইকেটে।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে নিজেদের প্রথম ইনিংসে স্কোর বোর্ডে ২৪ রান যোগ করতেই টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটারকে হারায় বাংলাদেশ। এরপর যদিও মুশফিক-লিটনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় মুমিনুল হকের দল।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৫০৬ রানে থামে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে ১৪১ রানের লিড পায় লঙ্কানরা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা ম্যাথুজ ৩৪২ বলে খেলেছেন ১৪৫ রানের ইনিংস। এছাড়া টাইগারদের হয়ে একাই পাঁচ উইকেট করেন সাকিব আল হাসান।
১৪১ রানে পিছনে পড়ে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মত দ্বিতীয় ইনিংসেও একই দশা টাইগারদের। প্রথম ইনিংসে ২৪ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশ, দ্বিতীয় ইনিংসেও স্কোর বোর্ডে ২৩ রান তুললেই টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটারকে হারায় মুমিনুল হকের দল।
চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে স্কোর বোর্ডে ১৫ রান জমা হতেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তামিম ইকবাল। ১১ বল মোকাবেলা করে রানের খাতা খোলার সুযোগ পাননি দেশ সেরা এই ওপেনার।
এরপর ওয়ান ডাউনে ব্যাট করতে নামা শান্ত আউট হন অহেতুক রান আউটে। আসিথা ফার্নান্দোর বল পয়েন্টে ঠেলে দিয়ে ঝুঁকিতে রান নিতে গিয়ে বিপদে পড়েন তিনি। ফলে ১১ বলে মাত্র ২ রান করে সাজ ঘরে ফিরেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
এমণ অবস্থায় দলনেতা মুমিনুল হক ফিরেন কট বিহাইন্ড হয়ে রানের খাতার খোলার আগেই। অফফর্ম থেকে বেরই হতে পারছেন না মুমিনুল। একের পর এক ইনিংসে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন তিনি। চলতি ঢাকা টেস্টে টাইগার টেস্ট অধিনায়ক প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৯, এবার আউট হলেন শূন্য রানে। ফলে এ নিয়ে টানা সাত ইনিংসে দশের নিচে আউট হলেন মুমিনুল। মুমিনুলের বিদায়ের পর সেই ধারবাহিকতায় ব্যক্তিগত ১৫ রানে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়।
তাই শেষ দিনে ম্যাচ বাঁচাতে টিকে থাকাই একমাত্র লক্ষ্য টাইগারদের । সেই লক্ষ্যে মাঠে নেমে দিনের শুরুতেই মুশফিকুর রহিমকে হারাল মুমিনুল হকের দল। দিনের অষ্টম ওভারে কাসুন রাজিথার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন মুশফিক। মাত্র ৫৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ইনিংস হারের শঙ্কা ভালোভাবেই জেঁকে বসেছিল টাইগার শিবিরে।
এরপর ষষ্ঠ উইকেটে সাকিব-লিটনের জুটিতে কিছু টা আশার আলো দেখতে পায় বাংলাদেশ। দুইজনের ব্যাটে ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা কাটিয়ে লাঞ্চ বিরতিতেও যায় টাইগাররা। কিন্তু এরপর পরের সেশনেই আবারও ব্যাটিং ধস নামে টাইগার শিবিরে। দ্বিতীয় ইনিংসে শেষ ২০ রানেই নিজেদের শেষ পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
ফলে ২৯ রানের সহজ লক্ষ্য দাঁড়ায় শ্রীলঙ্কার। যা তাড়া করতে একদমই সময় নিলো না শ্রীলঙ্কা। ঝড় তোলা ব্যাটিংয়ে মাত্র তিন ওভারেই ২৯ রান তুলে নিয়েছেন দুই ওপেনার ওশাদা ফার্নান্দো ও দিমুথ করুনারাত্নে। যার সুবাদে ১০ উইকেটের বড় জয়ে সিরিজও নিজেদের করে নিয়েছে লঙ্কানরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৩৬৫/১০ (মুশফিক ১৭৫*, লিটন ১৪১; রাজিথা ৫-৬৪, ফার্নান্দো ৪-৯৩)
শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ৫০৬/১০ (ম্যাথিউস ১৪৫*, চান্দিমাল ১২৪; সাকিব ৫-৯৬, এবাদত ৪-১৪৮)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ১৬৯/১০ (সাকিব ৫৮, লিটন ৫২; ফার্নান্দো ৬-৫১, রাজিথা ২-৪০)
শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংস: ২৯/০ (ওশাদা ২১*, করুনারত্নে ৭*; এবাদত ০-৫, সাকিব ০-৭)