বাংলাদেশকে লজ্জার সাগরে ডুবিয়ে ইতিহাস গড়লো আমিরাত
বাংলাদেশ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত দুই দলই ছিল সমতায়। যে কারণে সিরিজ বাঁচানোর শেষ ম্যাচটি ছিল অলিখিত ফাইনাল। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে টাইগারদের হারিয়ে দিলো র্যাঙ্কিংয়ে ১৫ নম্বরে থাকা আইসিসির সহযোগী দেশটি।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৭ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে বাংলাদেশকে লজ্জার সাগরে ডুবিয়ে ইতিহাস গড়লো আমিরাত।
হাসান মাহমুদের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে চার মেরে চিৎকার করে উঠলেন আলিশান শরাফু। অন্যপ্রান্তে থাকা আসিফ খানও তখন আনন্দে উদ্বেলিত। তাদের সতীর্থরা মুখভর্তি হাসি নিয়ে দৌড়ে ঢুকে পড়লেন মাঠে।
ঠিক উল্টো চিত্রের দেখা মিলল বাংলাদেশ দলে। আর তা হবে না কেন! দ্বিতীয় ম্যাচের পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে শেষমেশ সিরিজটাও খোয়াল নামেভারে এগিয়ে থাকা টাইগাররা!
বুধবার (২১মে) শারজাহতে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে সঙিন পারফরম্যান্সের ফলে ৭ উইকেটে স্রেফ ধরাশায়ী হয়েছে র্যাঙ্কিংয়ে নয়ে থাকা বাংলাদেশ।
টানা দুই জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়লো স্বাগতিক দল আমিরাত।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে এক পর্যায়ে ৮৪ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন দল। ধাক্কা সামলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬২ রান পর্যন্ত পৌঁছায় সফরকারীরা।
তবে তা নিয়ে জমানো যায়নি লড়াই। ৫ বল হাতে রেখে মাত্র ৩ উইকেটে ১৬৬ রান করে জয় নিশ্চিত করে আরব আমিরাত।
শুরুতে দল দুটির মধ্যে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বাড়তি একটি ম্যাচ খেলার প্রস্তাব দিলে তাতে সম্মত হয় আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)।
কিন্তু সেই ম্যাচটিতে পরাস্ত হয়ে বাংলাদেশ সিরিজ হেরে গেছে।
বিপরীতে, দ্বিতীয়বারের মতো টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়েছে আরব আমিরাত।
২০২১ সালে ঘরের মাঠেই তারা একই ব্যবধানে হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ডকে।
লক্ষ্য তাড়ায় আগের ম্যাচে আমিরাতের জয়ের নায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিম পান ভালো শুরু। তবে তাকে বিপজ্জনক হতে দেননি শরিফুল ইসলাম।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে আক্রমণে গিয়েই বাঁহাতি এই পেসার পান সাফল্য। স্লিপে ক্যাচ দেওয়া স্বাগতিকদের অধিনায়ক ৬ বলে করেন ৯ রান।
কিন্তু বাংলাদেশকে বেশিক্ষণ স্বস্তিতে থাকতে না দিয়ে একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে যান তিনে নামা শরাফু।
দ্বিতীয় উইকেটে আরেক ওপেনার মুহাম্মদ জোহাইবের সঙ্গে ৩৫ বলে ৪৪, তৃতীয় উইকেটে রাহুল চোপড়ার সঙ্গে ২০ বলে ২১ করেন তিনি।
চতুর্থ উইকেটে এসে আসিফের সঙ্গে মাত্র ৫১ বলে অবিচ্ছিন্ন ৮৭ রানের বড় জুটি গড়েন তিনি।
৪৭ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কা মেরে ফিফটি করে শরাফু অপরাজিত থাকেন ৬৮ রানে। আসিফ ৫ ছক্কায় খেলেন ২৬ বলে ৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস।
হতাশাজনক ব্যাটিংয়ের পর বাংলাদেশের বোলিংও হয় বিবর্ণ। তাই শেষ ৩০ বলে ৫২ রান ডিফেন্ড করা সম্ভব হয়নি।
কেবল শরিফুল ছিলেন আঁটসাঁট। ৪ ওভারে ২৪ রানে তিনি নেন ১ উইকেট।
ডানহাতি পেসার তানজিম হাসান সাকিব ১ উইকেট নিলেও দিয়ে ফেলেন ৪০ রান।
লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন নিজের শেষ ও ইনিংসের ১৬তম ওভারে খরচ করেন ১৯ রান। সব মিলিয়ে ৩২ রানে তার প্রাপ্তি ১ উইকেট।
একাদশে ফেরা দুই বোলার শেখ মেহেদী হাসান ৪ ওভারে ৩৬ ও হাসান মাহমুদ ৩.১ ওভারে ৩৩ রানে থাকেন উইকেটশূন্য।
দ্বিতীয়বারের মতো আইসিসির সহযোগী সদস্য কোনো দেশের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের তেতো অভিজ্ঞতা পেয়েছে বাংলাদেশ।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে স্বাগতিকদের কাছে ২-১ ব্যবধানেই হেরেছিল তারা।