খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

রবিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৫

বিগ চেজের ম্যাচে যত রেকর্ড গড়ল হায়দরাবাদ

শনিবার (১২ এপ্রিল) আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে প্যাট কামিন্সের দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। আইপিএলের গত আসরের রানারআপ দলটি এই বিগ চেজের ম্যাচে যেমন নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিল সাথে গড়ল বেশ কিছু রেকর্ডও।  

হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে বড় পুঁজিই গড়েছিল চলতি আইপিএলের অন্যতম ইনফর্ম ফ্র‌্যাঞ্চাইজি পাঞ্জাব।

শ্রেয়াশ আইয়ারের ৩৬ বলে ৮২, প্রভসিমরান সিংয়ের ২৩ বলে ৪২, প্রিয়াংশ আর্যের ১৩ বলে ৩৬ এবং মার্কাস স্টয়নিসের ১১ বলে ৩৪ রানে ভর করে নির্ধারিত ওভারে তারা ৬ উইকেটে ২৪৫ রান সংগ্রহ করে।

লক্ষ্য তাড়ায় অভিষেক ১৪১ এবং ট্রাভিস হেড ৬৬ রানের ইনিংস খেলে ৯ বল এবং ৮ উইকেট হাতে রেখেই হায়দরাবাদের জয় নিশ্চিত করেছেন।

অভিষেক শর্মার সেঞ্চুরির পর বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসটাই বলে দিচ্ছিল, এমন এক সেঞ্চুরির জন্য মুখিয়ে ছিলেন তিনি। মাত্র ২৪ বছরেই আইপিএলে বড় অঙ্কের বিনিময়ে রিটেনশনের তালিকায় ছিলেন। এই প্রবল চাপটাও ২০২৫ আসরে ঠিকভাবে পূরণও করতে পারছিলেন না অভিষেক।

কিন্তু পাঞ্জাবের বিপক্ষে অভিষেক বোঝালেন, এখনই তাকে ছুঁড়ে ফেলা অন্যায়। পাঞ্জাবের বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন শুরু থেকেই। মার্কো ইয়ানসেনের বলে হাঁকানো ১০৬ মিটারের সেই ছক্কাটা চোখে লেগে থাকার মতোই। চলতি আইপিএলে যেটা সবচেয়ে বড় ছয়ের মার।

১৯ বলে পেয়েছেন ফিফটি। আর ৪০ বলে সেঞ্চুরি। যা আইপিএল ইতিহাসে ৬ষ্ঠ দ্রুততম। আর ভারতীয়দের মধ্যে দ্বিতীয় দ্রুততম।

দুর্দান্ত সেই সেঞ্চুরির পর অভিষেক শর্মা তুলে ধরলেন এক টুকরো কাগজ। যেখানে লেখা–

‘This one is for orange army.’

তার সেই উদযাপন জন্ম দিয়েছে নানা প্রশ্নের। এমনকি প্রতিপক্ষ অধিনায়ক শ্রেয়াশ আইয়ারও কৌতুহল নিয়ে এগিয়ে এসে দেখলেন সেই কাগজটা।

বিগ চেজের ম্যাচে যত রেকর্ড গড়ল হায়দরাবাদ

এমন দানবীয় সেঞ্চুরি ছাড়াও ম্যাচটিতে হওয়া অন্য সব রেকর্ডগুলো এক নজরে দেখা যাক—

৫০/৩.০
মাত্র ৩ ওভারেই ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করতে নামা পাঞ্জাব দলীয় ফিফটি করেছিল। যা আইপিএলে দলটির তৃতীয় দ্রুততম। এর আগে ২০১১ আসরে তারা রাজস্থান এবং ২০১৮ সালে দিল্লির বিপক্ষে সমান ২.৫ ওভার দলীয় ৫০ করেছিল।

৮৯/১
পাওয়ার প্লেতে পাঞ্জাবের স্কোরবোর্ড ছিল এমন। যা শুরুর ৬ ওভারে তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গত আসরে কলকাতার বিপক্ষে একটি ম্যাচে পাঞ্জাব পাওয়ার প্লেতে সর্বোচ্চ স্কোর তুলেছিল ৯৩/১।

৭৫/০
আইয়ার-স্টয়নিসদের তুলোধুনো করার সুযোগে বিব্রতকর একটি রেকর্ডে নাম তুলেছেন হায়দরাবাদের ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামি। ৪ ওভারে তার বোলিং ফিগার ছিল ৭৫ রানে উইকেটশূন্য।

যা আইপিএলে দ্বিতীয় বাজে বোলিং ফিগার। চলতি আসরেই রাজস্থানে জোফ্রা আর্চার আইপিএলের সবচেয়ে খরুচে (৪-৭৬-০) বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছিলেন।

২৪৫
আইপিএলে পাঞ্জাবের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ এটি। অথচ সেই পুঁজিটাই শেষ পর্যন্ত তাদের জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না! গত আসরে নিজেদের সর্বোচ্চ দলীয় পুঁজি ২৬২ রান করেছিল পাঞ্জাব।

৫০/৩.৩
মাত্র তিন ওভারেই ফিফটি পূর্ণ হয়েছিল পাঞ্জাবের। দ্বিতীয় ইনিংসে যা হায়দরাবাদ করেছে ৩.৩ ওভারে। আইপিএলে এটি তাদের জন্য যৌথভাবে তৃতীয় দ্রুততম। গত আসরে ভিন্ন তিনটি ম্যাচে হায়দরাবাদ ২.৪, ৩.১ এবং ৩.৩ ওভারে দলীয় ফিফটি করার রেকর্ড গড়েছিল।

১৯
অভিষেক শর্মা এদিন মাত্র ১৯ বলেই ফিফটি করেন। যা তার জন্য দ্বিতীয় এবং হায়দরাবাদের কোনো ব্যাটারের তৃতীয় দ্রুততম। এর বাইরে ট্রাভিস হেড দুইবার এবং অভিষেক একবার ১৬ বলে ফিফটির রেকর্ড গড়েছিলেন।

এ ছাড়া ২০ বলের চেয়ে কম খেলে আইপিএলে তিনটি ফিফটির নজির আছে অভিষেকের। যা যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

তার সমান ২০ বলের কমে ৩টি করে ফিফটি আছে হেড ও জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগার্কের। ৪ বার ২০ বলের কম খেলে আইপিএলে ফিফটি আছে কেবল একজনের, তিনি ক্যারিবীয় তারকা নিকোলাস পুরান।

১৭১
অভিষেক-হেড মিলে ম্যাচটিতে ১৭১ রানের জুটি গড়েন ওপেনিংয়ে নেমে। যা আইপিএলে হায়দরাবাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ওপেনিং জুটি।

এর আগে ২০১৯ আসরে জনি বেয়ারস্টো এবং ডেভিড ওয়ার্নার মিলে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির পক্ষে সর্বোচ্চ ১৮৫ রানের জুটি গড়েন। এ ছাড়া অভিষেক-হেডের ১৬৭ রানেরও একটি জুটি ছিল গত আসরে।

৪০
মাত্র ৪০ বলে সেঞ্চুরি করেছেন অভিষেক। যা আইপিএলে বলের হিসাবে পঞ্চম দ্রুততম। এক্ষেত্রে রাজত্বটা ইউনিভার্সবস খ্যাত ক্রিস গেইলের। তিনি আইপিএলে সেঞ্চুরি করতে খেলেছেন মাত্র ৩০ বল। এ ছাড়া ইউসুফ পাঠান ৩৭, ডেভিড মিলার ৩৮, হেড ও প্রিয়াংশ আর্য সমান ৩৯ বলে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন।

১৪১
ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে আইপিএলে সর্বোচ্চ ১৪১ রানের ব্যক্তিগত ইনিংস খেলেছেন অভিষেক। যা আইপিএলে তৃতীয় সর্বোচ্চ। তার ওপরে তালিকার শীর্ষে থাকা ক্রিস গেইল ১৭৫* এবং ব্রেন্ডন ১৫৮* রানের ইনিংস খেলেছিলেন।

২৪৬
আইপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লক্ষ্য ২৪৬ রান তাড়ায় সফল হয়েছে হায়দরাবাদ। যা টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে ৪র্থ সর্বোচ্চ রানতাড়ার রেকর্ড। এর আগে পাঞ্জাব গত আসরে কলকাতার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ২৬২ রান তাড়ায় জিতেছিল। এটি টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ।

৯–৮
নির্দিষ্ট ভেন্যুতে (হায়রাবাদ) পাঞ্জাবের বিপক্ষে আইপিএলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯টি ম্যাচ জিতল হায়দরাবাদ। কলকাতায় পাঞ্জাবের বিপক্ষে সমান ম্যাচ জিতেছে কলকাতা। নিজেদের মাঠ ওয়ানখেড়েতে কলকাতার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১০টি ম্যাচ জিতে মুম্বাই।

এ ছাড়া পাঞ্জাবের বিপক্ষে টানা ৮টি ম্যাচ জিতল হায়দরাবাদ, যা আইপিএলে নির্দিষ্ট দলের বিপক্ষে যৌথভাবে সর্বোচ্চ।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy