হ্যাটট্রিক হার রংপুরের; ৬.৩ ওভারেই বরিশালের হাতে বরবাদ ঢাকা
চিটাগং কিংস এর বিপক্ষে হেরে হ্যাটট্রিক হারের স্বাদ পেল রংপুর রাইডার্স। ৫ উইকেটে ১৪ বল হাতে রেখেই জয় পেয়ে যায় চিটাগং। অন্যদিকে, ঢাকা ক্যাপিটালস এর বিপক্ষে ৮১ বল হাতে রেখেই টানা দুই ম্যাচে জয় তুলে নিলো ফরচুন বরিশাল।
ম্যাচের ফল প্রথম ইনিংস শেষেই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। ম্যাচ শেষেও তা-ই হয়েছে। ঢাকা ক্যাপিটালসের দেওয়া ৭৪ রানের লক্ষ্য ৯ উইকেট হাতে রেখে জয় পেয়েছে ফরচুন বরিশাল। সেটিও দাপট দেখিয়ে।
ঢাকাকে হারাতে মাত্র ৬.৩ ওভার খেলেছে বরিশাল। অর্থাৎ ৮১ বল হাতে রেখে ডাবল হ্যাটট্রিক জয় পেয়েছে তারা। এ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানটা আরো মজবুত করেছে তামিম ইকবালের দল। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন দলের অধিনায়ক।
উদ্বোধনী জুটিতে তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে ২১ রান তোলেন তামিম। ২ ছক্কায় ১৫ রানে হৃদয় আউট হলে জয়ের বাকি কাজটুকু ডেভিড মালানের সঙ্গে সারেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। দুজনে মিলে মাত্র ২৫ বলে গড়েন ম্যাচ জেতানো ৫৬ রানের অপরাজিত জুটি। ২৩১.২৫ স্ট্রাইক রেটে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন ইংল্যান্ডের সাবেক বাঁহাতি ব্যাটার। অন্যদিকে ৪ চারে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন বাঁহাতি ওপেনার তামিম।
এর আগে বরিশালের জয়ের কাজটা অনেকটা সেরে রাখেন দলটির বোলাররা। দুই স্পিনার তানভীর ইসলাম ও মোহাম্মদ নবীর সঙ্গে উইকেট উদযাপনে মাতেন পাকিস্তানি পেসার ফাহিম আশরাফ। তাদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ঢাকার ব্যাটাররা। তিনজনই ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন।
শুরু থেকেই একের পর এক উইকেট হারিয়ে এবারের বিপিএলে সর্বনিম্ন ৭৩ রানের স্কোর করে ঢাকা। চিটাগাং কিংসের বিপক্ষে এর আগে সর্বনিম্ন ৮০ রানের স্কোর করেছিল দুর্বার রাজশাহী।
এদিকে দিনের প্রথম ম্যাচে চিটাগাংয়ের কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে রংপুর। চিটাগাং কিংসের বিপক্ষেই ছন্দে ফেরার কথা জানিয়েছিলেন মিকি আর্থার। তবে রংপুর রাইডার্সের কোচের জয়ে ফেরার আশা পূরণ হয়নি। উল্টো হ্যাটট্রিক হার দেখেছে তার দল।
রংপুরের দেওয়া ১৪৪ রানের লক্ষ্যটা ১৪ বল হাতে রেখে জয় পেয়েছে চিটাগাং। অবশ্য লক্ষ্য তাড়াটা ভালো ছিল না তাদের। ২৯ রানে ২ উইকেট হারায় তারা। সেখান থেকে ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের সঙ্গে ৩৪ রানের জুটি গড়ে ধাক্কাটা সামলে নেন মোহাম্মদ মিঠুন।
ব্যক্তিগত ২০ রানে অধিনায়ক মিঠুন ফিরে গেলে দলের জয়ের কাজটা প্রায় সাড়েন ইমন। তবে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি তিনি।
ইমন ব্যক্তিগত ৪১ রানে আউট হলে চতুর্থ উইকেটে হায়দার আলীর সঙ্গে ৩৪ রানের জুটিও ভেঙে যায়। পরে দ্রুত শামীম হোসেন পাটোয়ারিও ফিরে গেলে ম্যাচে রোমাঞ্চের আভাস পাওয়া যায়।
কিন্তু সেই আভাস ১৮তম ওভারের প্রথম চার বলে নিবৃত্ত করে দেন হায়দার। ১৮ বলে ২০ রানের সমীকরণে বোলিং করতে আসা স্বদেশি পেসার আকিফ জাভেদের করা ওভারটির প্রথম চার বলে চার ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করে দেন পাকিস্তানি ব্যাটার।
দলকে ষষ্ঠ জয় এনে দেওয়া ৪৮ রানের ইনিংসটি সাজান মাত্র ১৮ বলে। ৬ ছক্কা ও ১ চারে ২৬৬.৬৬ স্ট্রাইক রেটের ইনিংস খেলেন হায়দার।
এ জয়ে নক আউটও যেন নিশ্চিতই করল চিটাগাং। ১২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে থাকা চিটাগাং শেষ দুই ম্যাচের একটি জিতলে পরের রাউন্ডে যাওয়া নিশ্চিতই হবে। না জিতলেও নিশ্চিত হতে পারে, যদি শেষ দুই ম্যাচে বড় ব্যবধানে না হারে। এতে করে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দুর্বার রাজশাহী ও খুলনা টাইগার্সের চেয়ে রানরেটে এগিয়ে থেকে নক আউট নিশ্চিত করতে পারবে।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ওভার শেষে ৫ উইকেটে ১৪৩ রান করে রংপুর। ইনিংসের শুরুটা ভালো ছিল না রংপুরের। দলীয় ১৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বসে তারা। পরে কিছুটা ধাক্কা সামলালেও একটা সময় ৬৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে তারা। পরে ষষ্ঠ উইকেটে অপরাজিত ৭৫ রানের জুটি গড়ে দলকে এই সংগ্রহটা এনে দেন ইফতিখার আহমেদ ও শেখ মেহেদী হাসান।
ইফতিখারের ৬৫ রানের বিপরীতে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন শেখ মেহেদী। পাকিস্তানি ব্যাটার ৪৭ বলের পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংসটি সাজান ৭ চার ও ৩ ছক্কায়। প্রতিপক্ষের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন খালেদ আহমেদ।