ওয়াকওভার দিয়ে মাঝপথেই বিদায় নিলেন জোকোভিচ
ক্যারিয়ারের ২৫তম গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন নোভাক জোকোভিচ। কিন্তু পেশির চোট সেখানে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালে ওয়াকওভার দিলেন বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর তারকা জকোভিচ। রড লেভার এরিনায় মাত্র এক সেট খেলেই অজি ওপেনের ফাইনালে উঠলেন আলেকজান্ডার জেরেভ। জোকোভিচ ম্যাচ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ায় প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে উঠেছে জার্মান এই তারকা।
৩৭ বছরের জোকোভিচ যে পুরোপুরি সুস্থ নন, তা এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শুরু থেকেই বোঝা গিয়েছিল। কখনও ম্যাচ চলাকালীন ইনহেলার নিয়েছেন। কখনও কোর্টের পাশেই শুশ্রূষার ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। কিন্তু তখনও ম্যাচ ছাড়ার পরিস্থিতি হয়নি তাঁর। শ্বাসকষ্ট নিয়ে খেলেও ম্যাচ জিতেছিলেন।
সেমিফাইনালের আগে তিনি অনুশীলনও করেননি। আপাতত ১১তম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতা হল না জোকারের। ৩৭ বছর বয়সী সার্বিয়ান তারকা সেমিফাইনালে নেমেছিলেন বাঁ পায়ে মোটা স্ট্র্যাপ লাগিয়ে। ম্যাচে জেরেভকে ওয়াকওভার দেওয়ার পর জকোভিচ জানান, প্রথম সেটের শেষের দিকে তাঁর ব্যথা বাড়ছিল। যে কারণে, তিনি ম্যাচ ছাড়তে বাধ্য হন।
অথচ, অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে আজ ছেলেদের এককের সেমিফাইনালে আলেক্সান্ডার জভেরেভের সঙ্গে প্রথম সেটটা কি অবিশ্বাস্য লড়াই করেছেন জোকোভিচ।
টাইব্রেকারে হারার আগে লড়েছেন ১ ঘণ্টা ২১ মিনিট। কিন্তু হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট আরেকটা দুর্দান্ত লড়াই হতে দিল না। প্রথম সেটে হারের পরই ম্যাচ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন জোকোভিচ।
রড লেভার অ্যারেনায় প্রথম সেট শেষে জোকোভিচ নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলে তাতে অবাকই হন প্রতিপক্ষ জভেরেভ।তার এমন সরে যাওয়াটা বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না জার্মান তারকা। তবে কোর্টে দাঁড়িয়ে কিংবদন্তির প্রতি ঠিকই সম্মান দেখাতে ভুলেননি তিনি।
সরে দাঁড়ানোর পর জোকোভিচ বলেছেন,
‘প্রথম সেট শেষে ব্যথা ক্রমেই বাড়ছিল। এই মুহূর্তে এটা সামলে খেলার মতো পরিস্থিতিতে আমি নেই। আমি জানতাম প্রথম সেট জিতলেও দুই, তিন কিংবা চার ঘণ্টা তার সঙ্গে লড়াইয়ের পাহাড় ডিঙাতে হতো, যেটা আজ আমার ভেতরে নেই।’
কোয়ার্টার ফাইনালে কার্লোস আলকারাজের বিপক্ষে চোট নিয়ে জিতলেও আজ চোটের কাছেই হার মানলেন ২৪ বারের গ্র্যান্ড স্লামজয়ী৷ রবিবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ছেলেদের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, ১০ বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছেন জোকোভিচ। সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে কুঁচকির চোট নিয়ে চিন্তায় ছিলেন এ সার্বিয়ান তারকা।
অপরদিকে, দ্বিতীয় সেমিফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রের বেন শেলটনকে ৭-৬ (২), ৬-২, ৬-২ গেমে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছেন এক নম্বর খেলোয়াড় ইয়ানিক সিনার।
এই নিয়ে হার্ড-কোর্টের গ্র্যান্ড স্লামে টানা তৃতীয় ফাইনালে উঠলেন সিনার, গত বছর তিনি জিতেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ও ইউএস ওপেন। জভেরেভের সঙ্গে ফাইনাল খেলতে নামার আগে আজকের জয়ে হার্ড-কোর্টের গ্র্যান্ড স্লামে অপরাজিত ম্যাচের সংখ্যাটা কুড়িতে নিয়ে গেছেন সিনার।
শেলটনের সঙ্গে ২ ঘণ্টা ৩৬ মিনিটের লড়াইয়ে পাওয়া জয়টি সিনারকে আরেকটি কীর্তি গড়ার সুযোগ এনে দিয়েছে। রাফায়েল নাদালের পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে তিনি একই টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম গ্র্যান্ড স্লামের শিরোপা ধরে রাখার সামনে দাঁড়িয়ে। নাদাল ২০০৫ সালে প্রথম ফ্রেঞ্চ ওপেন জয়ের পর ২০০৬ সালে সেটি ধরে রাখতে পেরেছিলেন।