মন্ত্রী হলেন নাজমুল হাসান পাপন, বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব সামলাতে পারবেন তো?
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পাঠানো মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে রয়েছে নাজমুল হাসান পাপনের নাম। সামাজিক মাধ্যমে এটা নিয়ে আলোচনার ঝড় চলছে বুধবার সন্ধ্যা থেকেই। ক্রীড়াঙ্গনের নানা প্রান্তেও কম-বেশি কথা চলছে। তবে সেই আলোচনার ঢেউ বিসিবিতে খুব একটা স্পর্শ করেনি। মূল কারণ, সরকারের মন্ত্রী ও বিসিবি সভাপতি, এই দ্বৈত দায়িত্ব চালিয়ে যেতে আইনগত, সাংবিধানিক কিংবা গঠনতন্ত্রের কোনো বাধা নেই। একসময় বরং মন্ত্রীদের মধ্যে থেকেই বিভিন্ন ফেডারেশনের প্রধানের দায়িত্ব বেশি দেওয়া হতো। ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনে জয়ী হওয়া কারও ক্ষেত্রে সরকারি দায়িত্ব পালনে কোনো বাধা আইসিসির আইনেও নেই।
অভিজ্ঞ ক্রিকেট সংগঠক ও বিসিবি পরিচালক জালাল ইউনুস, বিসিবির আরেক প্রভাবশালী পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক, বিসিবি পরিচালক ও সাবেক অধিনায়ক আকরাম খানসহ বেশ কজন পরিচালকের বিশ্বাস, নাজমুল হাসানই বিসিবি সভাপতির দায়িত্বে থেকে যাবেন এবং দুটি দায়িত্বই তিনি ভালোভাবে সামলে নেবেন।
যদিও মন্ত্রিত্বের সঙ্গে বোর্ড সভাপতি থাকার বিষয়টি সাংঘর্ষিক নয়। ক্রিকেট বোর্ডে তিনি চার বছরের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিসিবি সভাপতি পদে মেয়াদ রয়েছে তার।
ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রীড়া আইনে মন্ত্রিত্ব পেলে কোনো ফেডারেশনের সভাপতিত্ব করা যাবে না- এমন কোনো নিয়ম নেই। ২০১৩ সাল থেকে ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে আছেন পাপন।
এর আগে ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সরকার কর্তৃক মনোনীত ছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারের অনেক মন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতির তালিকায় থাকা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, আবু সালেহ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ও সাবের হোসেন চৌধুরী মন্ত্রিত্ব এবং বোর্ড সভাপতি উভয় পদেই একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ১৯৮৭-৯০ সাল পর্যন্ত বিসিবির সভাপতি ছিলেন। ওই সময় তিনি দায়িত্বে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। বোর্ড সভাপতি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী উভয় পদে আনিস মাহমুদের উত্তরসূরি আবু সালেহ মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত বিসিবির সভাপতি ছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী। বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে তিনি নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ছিলেন।
নব্বইয়ের দশকে বিসিবি সভাপতিদের মধ্যে কয়েকজন মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন। ২০০১ সাল পরবর্তী সময়ে কোনো মন্ত্রী বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেননি। আ হ ম মোস্তফা কামাল বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব ছাড়ার পর মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন।
বর্তমানে ক্রিকেটে জনসম্পৃক্ততা এবং আন্তর্জাতিক ব্যাপ্তি অনেক বেশি। তাই মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ক্রিকেট বোর্ড সামলানোটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে পাপনের জন্য।