ম্যাচের তখন ২২ মিনিট। নিজেদের অর্ধ থেকে লম্বা করে ডান প্রান্তে আড়াআড়ি পাস দেন রদ্রিগো দে পল। বল ক্লিয়ার করার সুযোগ থাকলেও ব্যর্থ হন ব্রাজিলিয়ান লেফট-ব্যাক রেনান লোদি। দারুণ প্রথম ছোঁয়ায় বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে চিপ করে গোলরক্ষক এদারসনের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠান দি মারিয়া।
এই মহামূল্যবান গোলে স্বাগতিক ব্রাজিলকে হারিয়ে এবারের কোপা জিতে নিলো আর্জেন্টিনা। সেই সাথে গ্রহের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসির হাতে উঠলো দেশের হয়ে বহু আরাধ্য ট্রফি। যেটি না পেলে এক ট্র্যাজিক হিরো হয়েই থাকতে হতো তাঁকে!
প্রথমার্ধে পাওয়া সেই লিড ধরে রাখল আর্জেন্টিনা। বিরতির পর মুহুর্মুহু আক্রমণ শানিয়েও প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙতে পারল না ব্রাজিল। কিন্তু কাজে কাজ আর করতে পারেনি। ফলে, ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো প্রতিযোগিতায় শিরোপা জেতার স্বাদ পেল তারা।
যদিও দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে ফুটবলের চিরায়ত সৌন্দর্যের দেখা সেভাবে মেলেনি। ফাউলের ছড়াছড়ি ছিল ম্যাচ জুড়ে। আর্জেন্টিনা ফাউল করেছে ১৯টি, ব্রাজিল করেছে ২২টি। দুইদলই যে তীব্র স্নায়ুচাপে ভুগেছে তা ধরা পড়ে মাঠের পারফরম্যান্সে। এদিন মেসিও ছিলেন নিজের ছাড়া হয়ে। সেই তুলনায় নেইমার ঝলক দেখা গেছে বেশ ক’বার।
ম্যাচের শেষ দিকে ৮৩তম মিনিটে বদলি নামা গ্যাব্রিয়েল বারবোসা পারেননি ব্রাজিলকে গোল এনে দিতে। তার শট প্রতিহত করেন সেন্টার-ব্যাক জার্মান পেজ্জেয়া। কিছুক্ষণ পর দানিলোর দূরপাল্লার শট গোলপোস্টের অনেক ওপর দিয়ে চলে যায়।
চার মিনিট পর আবারও আলবিসেলেস্তেদের ত্রাণকর্তা গোলরক্ষক এমিলিয়ানো। নেইমারের ক্রস রক্ষণভাগে বাধা পাওয়ার পর পেয়ে যান বারবোসা। তার বাঁ পায়ের শটও কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক।
৮৯তম মিনিটে আর্জেন্টিনার ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ নষ্ট করেন মেসি। আক্রমণ তৈরি করে ম্যাচে দুর্দান্ত পারফর্ম করা দে পলের কাছ থেকে ফিরতি পাস পান তিনি। এরপর কেবল এদারসনকে পরাস্ত করতে হতো তাকে। কিন্তু ব্রাজিল গোলরক্ষককে এড়াতে গিয়ে বল হারিয়ে ফেলেন মেসি।
বাকি সময় আর গোল না হওয়ায় ঐ এক গোলের জয়ে মারাকানায় উল্লাসে মাতে আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়েরা।
এদিকে, এবারের কোপা আমেরিকায় সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন যৌথভাবে মেসি আর নেইমার।