কিউই ঘূর্ণিতে প্রথম ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট বাংলাদেশি টাইগাররা
মিরপুরে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশ সিলেটের মত ক্রিকেট খেলতে ব্যর্থ হয়ে তাদের প্রথম ইনিংস শেষ করেছে ১৭২ রানে অলআউট হয়ে। প্রথম সেশনে ৪ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় সেশনে ও ৪ উইকেট হারায় টাইগাররা। দিনের শেষ সেশনে এসে বাকি ২ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ দল। মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশ দলের প্রথম ইনিংসটা কতটা ঘটনাবহুল ছিল তা এতে করে বোঝা যায়।
শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট প্রত্যাশিতভাবেই স্পিনারদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। যা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ে দুইবার ধস নামায় নিউজিল্যান্ড দল। দুইবারই দ্রুত ৪টি করে উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে লড়াই করার মতো রান করার যা একটু সম্ভাবনা ছিল, সেটিও হারিয়েছে বাংলাদেশ দল। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে পেরেছে মাত্র ৬৬.২ ওভার। বাংলাদেশ ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩৫ রান এসেছে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে।
বাংলাদেশ দল আজ যখন টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন মেঘলা আবহাওয়ার কারণে মিরপুর স্টেডিয়ামে জ্বলছে ফ্লাডলাইট। দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান ও জাকির হাসান ২৯ রানের জুটি গড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা ভালোই মনে হচ্ছিল। কিন্তু ইনিংসের ষষ্ঠ ওভার থেকে দুই প্রান্ত থেকে কিউই স্পিনাররা বোলিংয়ে আসায় তালগোল পাকিয়ে বসে জাকির-মাহমুদুল জুটি। ১১তম ওভারে এসে নিজের খোলস থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন জাকির। তবে আক্রমণাত্মক শট খেলার চেষ্টায় ব্যর্থ হন। সিলেটে দুটি ইনিংসে বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেলের বলে আউট হওয়ার পর আজ তিনি উইকেট দিয়ে আসেন আরেক বাঁহাতি মিচেল স্যান্টনারকে। ১২তম ওভারেই শর্ট লেগে থাকা টম ল্যাথামের হাতে ধরা পড়েন ৪০ বলে ১৪ রান করা মাহমুদুল।
চারে নামা মুমিনুল হকের (১০ বলে ৫ রান) ইনিংসও লম্বা হয়নি। বাংলাদেশ দলের রান তখন ৩ উইকেটে ৪১। দুই ওপেনারের পর স্পিনে আক্রমণ করতে গিয়ে ব্যর্থ হন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেনও। ১৪ বল খেলে ১ বাউন্ডারিতে ৯ রান করে স্যান্টনারকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন নাজমুল। শুরুতে এমন ব্যাটিং বিপৰ্যয়ের ধাক্কাটা অবশ্য মুশফিকুর রহিম ও শাহাদাত হোসেনের জুটিতে কিছুটা হলেও কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ৫৭ রানের জুটি গড়ে এগোতে থাকা বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ে আরও একটি ধসের শুরু হয় মুশফিকের ভুলে। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৪০.৪ ওভারে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড ’ আউট হন মুশফিক।
উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন শাহাদাতও। ১০২ বল ক্রিজে থাকার পর গ্লেন ফিলিপসের লেগ স্টাম্পের বাইরের নিরীহ বলে ব্যাট ছুঁইয়ে কট বিহাইন্ড হন তিনি। আউট হওয়ার আগে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৩১ রান। ফিলিপসের অফ স্পিনে মারতে গিয়ে উইকেট খুইয়েছেন নুরুল হাসানও (৭)। তবে মিরাজের ব্যাটে একটু একটু করে এগোচ্ছিল বাংলাদেশের স্কোর। সেই মিরাজও দ্বিতীয় সেশনের শেষে এসে স্যান্টনারের বলে স্লিপে ক্যাচ তোলেন। ৪২ বলে ২০ রানে থামে মিরাজের ইনিংস। নাঈম হাসান শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে বাংলাদেশের রানটাকে নিয়ে যান ১৭২ রানে, তাইজুল (৬) ও শরীফুল (১০) সঙ্গে ছোট ছোট জুটি গড়েন তিনি। তিনি ৪৩ বল খেলে ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন স্যান্টনার ও ফিলিপস।