ফিরবেন বিজয়?
বিপিএল থেকে শুরু করে ডিপিএল। কোথায় বাজছেনা এনামুল হক বিজয়ের দামামা। দুর্দান্ত ব্যাটিং শৈলীতে রানের ফোঁয়ারা ছুটছে এই বিজয়ের ব্যাটে। এবারের ডিপিএলে তো ছাপিয়ে গেলেন আগের সবকিছু। রীতিমতো রেকর্ড বই উলোটপালোট করে চলছেন ডানহাতি এই ওপেনার।
১৪ ইনিংস, ৮ ফিফটি, ৩ সেঞ্চুরি, ৮০ গড়, ৯৮ স্ট্রাইক রেট, ১০৪২ রান। এই গুলো নিছক কোন সংখ্যা নয়। এই এক লাইনই প্রাইম ব্যাংকের হয়ে খেলতে নামা এনামুল হক বিজয়ের এবারের ডিপিএলের পরিসংখ্যান।
মঙ্গলবার দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটে রাঙা হল ডিপিএলের নতুন এক রেকর্ড। লিস্ট ‘এ’র মর্যাদা পাওয়ার পর এক মৌসুমে প্রথম এবং একমাত্র ১০০০ রানের ক্লাবে বিজয়। অনুমিতভাবে সর্বোচ্চ রানের মালিকও এখন বিজয়।
ডিপিএলের লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার আগে সংরক্ষিত পরিসংখ্যানে জানা যায় ২০০১ সালের আসরে মোহামেডানের হয়ে ১৬ ম্যাচে ৯৪ গড়ে ১২২৭ রান করেছিলেন কেনিয়ার কিংবদন্তি ক্রিকেটার স্টিভ টিকোলো। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটের সর্বোচ্চ এই আসর লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর বিজয়েরই প্রথম হাজারের ক্লাবে ঢুকা।
সাম্প্রতিক সময়ে একটু বিজয়ের ব্যাটের দিকে চোখ দেয়া যাক। চলতি ডিপিএলে ১৪ ম্যাচে বিজয়ের রান যথাক্রমে ৬০,১২৭,৫৩, ৩৩,১৮৪,১৫,৯৪,৭৭,৮৫,০,৭৭,৭৩,৫২ এবং১১২*। এমন পারফর্ম করা যেনো ব্যাটসম্যানেরই স্বপ্ন। বিজয়ের এমন আধিপত্য শুরু গেল আসরের বিপিএল থেকে। ৯ ম্যাচে ২৮০ রান করে সেরা রান সংগ্রাহক এর তালিকায় সপ্তম অবস্থানে ছিল বিপিএলে ২৯ বছর বয়সী এই ওপেনার।
বর্তমানে জাতীয় দলের ব্রত হয়ে থাকা বিজয়ের ২০১২ সালে ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলে যাত্রা শুরু। শুরুটা দুর্দান্ত হওয়াতে পরবর্তীতে জাতীয় দলের ৩ ফরম্যাটেই জায়গা করে নেন বিজয়। অনুর্ধ্ব-১৯ দল থেকেই নিয়মিত এই পারফর্মার এক পর্যায়ে অবশ্য নিজেকে হারিয়ে ফেলেন পরে।
২০১৫ সালের পর ছিটকে যান জাতীয় দল থেকে। এরপর ২০১৮ সালে ফিরলেও নিজেকে আর মেলে ধরতে না পেরে বাদ পড়েন কয়েক ম্যাচ খেলেই। এক বছর পর সর্বশেষ ২০১৯ সালে আবার ফিরেছিলেন, কিন্তু ভাল করতে না পেরে ছিটকে গেছেন। এরপর থেকে নিজেকে হারিয়ে খুজঁছেন বিজয়। কিন্তু চলতি ডিপিএলে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করেছেন তিনি। জাতীয় দলে ফেরার বার্তা দিয়েছেন ইতোমধ্যে এই পারফর্মেন্স দেখিয়ে।
ডানহাতি এই ওপেনারের ফর্ম দেখে দেশসেরা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা এখনই চাইছেন তাকে জাতীয় দলে। মাশরাফির ভাষায়, ‘ বিজয়কে এখনই দেখাশোনা করা উচিত। সে যেভাবে রান করছে এটা অবিশ্বাস্য! টার্নিং উইকেট, স্লো উইকেট যে কোন লেভেলের বলুন এই ব্যাটিং অসাধারন’। তাকে জাতীয় দলের আশেপাশে আনা উচিত, তাকে নিয়ে কাজ করা উচিত’।
এবার না হয় অন্তত মাশরাফির মত নির্বাচকদেরও মনে কি জায়গা করে নিতে পারবেন বিজয়? সেটা সময়ের জন্য তোলা থাক।