চ্যাম্পিয়নস ট্রফির খাতিরে কড়া নিরাপত্তায় পাকিস্তানের তিন শহর
আজ করাচিতে পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। দীর্ঘ ২৮ বছর পর আইসিসির কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট পাকিস্তানের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মাঝে নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রায় ১০ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও বন্ধ ছিল পাকিস্তানে। তাই লম্বা সময় পর কোনো বৈশ্বিক ইভেন্ট শুরু হতে যাওয়ায় নিরাপত্তা ইস্যুই বারবার সামনে আসছে। ফলে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে দেশটির তিনটি শহর।
১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নবম আসর চলবে ৯ মার্চ পর্যন্ত। টুর্নামেন্টটির মূল আয়োজক পাকিস্তানের করাচি, লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে হবে ম্যাচগুলো। এ ছাড়া কেবল ভারতের ম্যাচগুলো হবে নিরপেক্ষ ভেন্যু দুবাইতে। রাজনৈতিক বিরোধ ও নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ভারত দেশটিতে সফর করছে না ২০০৮ সালের পর থেকে। শেষ পর্যন্ত এবারও তাদের রাজি করাতে পারেনি পাকিস্তান, তবে একইসঙ্গে অন্য দেশগুলোর নিরাপত্তায়ও তারা কোনো ত্রুটি রাখতে চায় না।
লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা জানিয়ে পাঞ্জাবের পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) উসমান আনোয়ার বলেছেন, ‘দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়, কর্মকর্তা ও ক্রিকেট-ভক্তদের জন্য পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।’ শহর দুটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘জিও নিউজ’ ও ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’।
তথ্যমতে, দুটি শহরে সবমিলিয়ে ১২০০০ অফিসার শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। তাদের মধ্যে আছেন ১৮ জন সিনিয়র কর্মকর্তা, ৫৪ জন ডিসিপি, ১৩৫ ইন্সপেক্টর, ১২০০ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ১০৫৫৬ জন কনস্টেবল এবং ২০০ নারী পুলিশ অফিসার।
রাওয়ালপিন্ডি ও লাহোরে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ৩টি করে ম্যাচ রয়েছে। লাহোরে ম্যাচগুলো যথাক্রমে ২২ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি এবং ৫ মার্চ। এ ছাড়া রাওয়ালপিন্ডিতে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ২৪, ২৫ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি। খেলা চলাকালে এই দুই শহরে খেলোয়াড়দের আবাসস্থল, যাতায়াত পথ ও স্টেডিয়ামের আশপাশে সার্চ, সুইপ, কম্বিং ও গোয়েন্দাভিত্তিক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিদর্শক। এ ছাড়া সব জায়গায় আধুনিক ক্যামেরা প্রযুক্তিও নজরদারিতে থাকবে।
অন্যদিকে, রয়টার্সের আরেক প্রতিবেদনে ম্যাচ হতে যাওয়া তিনটি শহরে ২০ হাজার নিরাপত্তাকর্মী নিয়োজিত থাকার কথা জানিয়েছেন পাঞ্জাব প্রদেশের ডেপুটি পুলিশ প্রধান শাহজাদা সুলতান। তিনি বলেন,
‘খেলোয়াড়রা বিশিষ্ট ব্যক্তিরা যে নিরাপত্তা পান, তেমনই সেবা পাবেন।’
লাহোর, করাচি, রাওয়ালপিন্ডি এমনকি ইসলামাবাদেও নিরাপত্তাবাহিনীর ২০ হাজার সদস্য নিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে ভবনের ছাদ থেকে সতর্ক অবস্থায় থাকবেন স্নাইপাররা। খেলোয়াড়দের আবাসস্থল এবং যাতায়াত সর্বত্র নজরদারি থাকবে সার্বক্ষণিক।
করাচি প্রদেশের মেয়র মুরতাজা ওয়াহাব জানিয়েছেন, জরুরি প্রয়োজনে করাচি পুলিশ অতিরিক্ত সোয়াট ইউনিট মোতায়েন রেখেছে। যেকোনো সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় চালু রয়েছে গোয়েন্দা কার্যক্রম। বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও তুলনামূলক বেশ ভালো।