মোহামেডানের পুনর্জাগরণ
হোয়াট অ্যা ম্যাচ! হোয়াট অ্যা ফাইনাল! একজন ফুটবল ভক্তের জন্য ষোলকলায় পূর্ণ করে দেখিয়েছে ঢাকা ডার্বি। একি সঙ্গে বাংলার ফুটবলের জোয়ারে যে ভাটা পড়েনি সেটিও দেখিয়ে দিয়েছে এই ম্যাচ।
পেশাদার লিগ শুরু হওয়ার পর থেকে কোন ট্রফি ছিল না মোহামেডানের। ফেডারেশন কাপে তাদের সর্বশেষ ফাইনালে খেলা ২০০৯ সালে। সেবারই ফেডারেশন কাপে শেষবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আর ক্লাব ফুটবলে তাদের সর্বশেষ ট্রফিতে হাঁত ছোঁয়ানো ২০১৪ সালে স্বাধীনতা কাপে। এরপর না আছে ফাইনালে খেলার রেকর্ড। না আছে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব। অন্য দিকে চলতি মৌসুমের বাকি দুই শিরোপা হারানো আবাহনীর শেষ সুযোগ ফেডারেশন কাপ জিতে আসরে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখা।
এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে চৌদ্দ বছর পর ফেডারেশন কাপে সেই একই চিত্রনাট্যের পুনরাবৃত্তি ঘটালো মোহামেডান। আবারও টাইব্রেকারে আবাহনীকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতে নিয়েছে মতিঝিলের ক্লাবটি।
মঙ্গলবার কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সময়ের খেলা ৩-৩ গোলের সমতা নিয়ে শেষ হয়। এরপর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে একটি করে গোল করে উভয় দল। তাতে অতিরিক্ত সময়ের খেলা ৪-৪ গোলের সমতায় শেষ হয়। সমতা ভাঙতে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে আবাহনীকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় সাদা-কালো শিবির।
দুই গোলে পিছিয়ে থাকা মোহামেডান দ্বিতীয়ার্ধের ১৪ মিনিটের মাথায় প্রথম গোলের দেখা পায়। দলের অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতের প্লেসিং শটে আবাহনীর গোলরক্ষককে পরাজিত করেন৷ মিনিট চারেক পর আরেকটি দুর্দান্ত গোল করে স্টেডিয়াম জাগিয়ে তুলেন সুলেমান।
তবে মোহামেডান সমতা আনার মিনিট পাঁচেক পর আবারও এগিয়ে যায় আবাহনী৷ ৬৫ মিনিটে নাইজেরিয়ান এমেকার গোলে আবাহনী নিয়ন্ত্রণ নেয় ম্যাচের৷ কিন্তু ৮৩তম মিনিটে সুলেমান দিয়াবাত হ্যাটট্রিকে সমতায় ফেরে সাদা- কালোরা।
এই জয় আলফাজ বাহিনীর জয় ট্রফির খরা যেমন ঘোচিয়েছে তেমনি টিকিটও পেয়ে গেছে এএফসি কাপে খেলার। মোহামেডান এই ফাইনালে পৌঁছাতে সবচেয়ে বড় অঘটনের জন্ম দিয়েছে শক্তিশালী বসুন্ধরা কিংসকে সেমিতে ২-১ গোলে হারিয়ে।