সেমিফাইনালে দর্শকখরার শঙ্কা, টিকিটের দাম কমলো ৫৬ হাজার টাকা!
আজ (৮ জুলাই, মঙ্গলবার) থেকে শুরু হচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। নিউজার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ৮২,৫০০। কিন্তু বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব ও অন্য রাউন্ডের ম্যাচের অভিজ্ঞতা থেকে গ্যালারি পুরোপুরি পূরণ না হওয়ার দর্শকখরার শঙ্কায় পড়েছে ফিফা।
সে কারণে চেলসি-ফ্লুমিনেন্স ম্যাচের টিকিটের দাম ৫৬ হাজার টাকা কমানো হয়েছে।
বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে অভিজাত ও শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগিতা বিশ্বকাপের ২০২৬ আসর বসবে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায়। যৌথ আয়োজক থাকলেও মূল নজরটা থাকবে পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে।
যার ‘এসিড টেস্ট’ হিসেবে মনে করা হতে পারে চলমান ক্লাব বিশ্বকাপকে।
কিন্তু একের পর এক প্রতিকূল ঘটনায় ব্যাকফুটে যুক্তরাষ্ট্র।
এর মধ্যে অন্যতম– দর্শকখরা। সেমিফাইনালেও তেমন কিছুর শঙ্কা থেকেই টিকিটের দাম এক লাফে ৫৬ হাজার টাকারও বেশি কমানো হয়েছে।
পূর্বনির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী– মেটলাইফ স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনালে টিকিটের মূল্য ছিল ৪৭৩.৯০ ডলার বা ৫৭,৮৬৭ টাকা। নতুন করে সেই দাম নির্ধারিত হয়েছে ১৬৩৬ টাকা।
চলমান এই টুর্নামেন্টে আগে থেকেই ম্যাচের গুরুত্ব অনুসারে ৬৩টি ম্যাচে ভিন্ন ভিন্ন দাম ঠিক করেছিল ফিফা।
কিন্তু বিরূপ আবহাওয়া, তীব্র গরম ও আমেরিকান ভূমিতে ফুটবলের চাহিদা মিলিয়ে দর্শকদের কাঙ্ক্ষিত উপস্থিতির দেখা মেলেনি।
চেলসি-ফ্লুমিনেন্স ম্যাচ টিকিটের দাম ১৬৩৬ টাকা করা হলেও, রিয়াল মাদ্রিদ-পিএসজির দ্বিতীয় সেমিতে টিকিটের দাম থাকছে ১৯৯.৬০ ডলার বা ২৪,৩৭২ টাকা।
এর আগে সংবাদমাধ্যম ‘দ্য অ্যাথলেটিক’ প্রথমবার নাটকীয়ভাবে ফিফার পক্ষ থেকে টিকিটের মূল্য কমানোর বিষয়টি সামনে আনে।
ওরল্যান্ডোতে অনুষ্ঠিত ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আল হিলাল ও ফ্লুমিনেন্স এবং ফিলাডেলফিয়ায় চেলসি-পালমেইরাস ম্যাচের টিকিটের দাম কমিয়ে ১১.১৫ ডলারে নামিয়ে এনেছিল বিশ্ব ফুটবলের এই অভিভাবক সংস্থা।

বিশ্বকাপের বেশিরভাগ ম্যাচেই দর্শক উপস্থিতি ফিফার জন্য আশা জাগানিয়া হয়নি। এক্ষেত্রে কেবল রিয়াল মাদ্রিদ ব্যতিক্রম, তাদের পাঁচ ম্যাচে ন্যূনতম ৬০ হাজার দর্শক মাঠে বসে খেলা দেখেছেন।
গত শনিবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালে নিউজার্সিতে মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ ও বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। যেখানে গ্যালারিতে হাজির ছিলেন ৭৬,৬১১ দর্শক।
রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে ওই ম্যাচে ৩-২ গোলে জিতে সেমিফাইনালে ওঠে রিয়াল।
অবশ্য চলমান টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই প্রায় নিয়মিত দৃশ্য স্টেডিয়ামে দর্শকখরা।
বেশিরভাগ টিকিট অবিক্রিত থাকার কারণে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো ক্লাব বিশ্বকাপের শুরুর দিকে দর্শকদের প্রতি আর্জি জানিয়েছিলেন এভাবে,
‘ইতিহাসের অংশ হন। বিশ্বজুড়ে ফুটবল ক্রীড়াঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট। খেলাটি ঘরে বসে দেখার মতো বিলিয়ন দর্শক আছে, একইসঙ্গে তারা ক্লাবকেও ভালোবাসেন এবং মাঠে হাজির হন।’
গত ১৬ জুন বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে চেলসি ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাস লস অ্যাঞ্জলস এফসি মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল।
৭১ হাজার ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামে মাত্র ২২,১৩৭ ফুটবলভক্ত খেলা দেখতে এসেছিলেন। যা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন চেলসি কোচ এনজো মারেসকা,
‘এমন আবহ খুবই অদ্ভুত। স্টেডিয়াম বলতে গেলে প্রায় ফাঁকা ছিল। অবশ্য আমরা পেশাদার হিসেবে এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়েছে। আবার গ্যালারিভর্তি স্টেডিয়ামেও আমরা খেলতে অভ্যস্ত।’
বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১টায় প্রথম সেমিতে মুখোমুখি হবে সাবেক ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন চেলসি ও ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্স।