খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

বৃহস্পতিবার, ৩১শে জুলাই ২০২৫

প্রায় পাঁচ বছর পর জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিরছে আন্তর্জাতিক ফুটবল

বাংলাদেশ ফুটবলের প্রধান ভেন্যু ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়াম। ২০২১ সালের জুলাই থেকে সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার পর এই মাঠে আর প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল হয়নি। আজ (৪ জুন, বুধবার) বিকেলে বাংলাদেশ-ভুটান ম্যাচ দিয়ে প্রায় পাঁচ বছর পর (দীর্ঘ ১৬৫৯ দিন পর) ‘হোমে’ ফিরছে ফুটবল। 

২০২১ সালের জুলাইয়ে সংস্কার কাজ শুরু হলেও আগস্ট পর্যন্ত ঘরোয়া ফুটবল চলেছিল। এই ভেন্যুতে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেপালের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ আয়োজন করেছিল বাফুফে। এরপর আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়নি জাতীয় স্টেডিয়ামে।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে কাজ করছেন। তিন বছরেরও বেশি সময় বাংলাদেশে কোচিং করালেও আজই তার হোম অব ফুটবলে অভিষেক হচ্ছে।

শুধু হ্যাভিয়ের নয়, শেখ মোরসালিন–মিতুল মারমাসহ আরও কয়েকজন ফুটবলারই আজ প্রথম ম্যাচ খেলবেন জাতীয় স্টেডিয়ামে।

জাতীয় স্টেডিয়াম সংস্কারাধীন থাকায় গত বছর তিনেক বসুন্ধরা কিংসের কিংস অ্যারেনা বাংলাদেশের অলিখিত হোম ভেন্যু ছিল। ফুটবলার ও কোচ উভয়ের চাওয়া থাকত কিংস অ্যারেনাতেই খেলতে।
প্রায় পাঁচ বছর পর জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিরছে আন্তর্জাতিক ফুটবল
জাতীয় স্টেডিয়াম বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক ভেন্যু হলেও অনেক ফুটবলারের কাছে এই মাঠ নতুন পরিবেশ। এ নিয়ে গতকাল কোচ হ্যাভিয়ের সংবাদ সম্মেলনে বলেন,
‘আমার জন্য এটা প্রথম ম্যাচ হচ্ছে এই ভেন্যুতে। আমরা ইতোমধ্যে (১ জুন থেকে) কয়েকদিন অনুশীলন করেছি। মাঠ নতুন হলেও এই স্টেডিয়ামের সঙ্গে বাংলাদেশের সবাই পরিচিত।’
দফায় দফায় বাজেট বেড়ে ১৫৮ কোটি টাকাতে এই সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। ফ্লাডলাইট, অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাক, গ্যালারি, প্রেসবক্স সব কিছুতেই এসেছে নতুনত্ব।
আজ সন্ধ্যা ৭টায় নতুন আঙ্গিকের জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ-ভুটান ম্যাচ। ফুটবলার ও সাংবাদিকদের পাশাপাশি দর্শকরাও মুখিয়ে আছেন নতুন স্টেডিয়ামের স্বাদ গ্রহণ করতে।
বাংলাদেশের প্রথম স্টেডিয়াম হিসেবে গ্যালারির শেডে লাইট বসেছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্মাণ ও সংস্কার কাজে বরাবরই প্রশ্ন থাকে। এত টাকা ব্যয়ে নতুন স্টেডিয়ামের নতুন পথচলা কেমন হয় সেটাই দেখার বিষয়।

জাতীয় স্টেডিয়াম বাফুফে ও অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন যৌথভাবে ব্যবহার করে। অ্যাথলেটিক্স ২০২৪ সাল থেকে জাতীয় প্রতিযোগিতা আয়োজন করছে এই ভেন্যুতে।

বাফুফে ২০২১ সালের পর থেকে কোনো প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল আয়োজন করেনি।

মাস কয়েক আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফাইনাল ম্যাচ করেছিল এই ভেন্যুতে। জাতীয় নারী ফুটবল দল অবশ্য মাঝে বেশ কিছু দিন এখানে অনুশীলন করেছে।

এখন জাতীয় স্টেডিয়ামের পরিচিতি শুধু ফুটবল ও অ্যাথলেটিক্স হলেও এটা মূলত ক্রিকেটেরই। দুই দেশ একটি ভেন্যুতে প্রথম হোম ম্যাচ খেলার বিশেষ কীর্তিও হয়েছিল এখানে।

পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রথম হোম টেস্ট হয়েছে ঢাকার স্টেডিয়ামটিতে। এ ছাড়া বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টও এখানেই হয়েছে। শততম ওয়ানডে ম্যাচে জয়ের স্বাক্ষীও এই জাতীয় স্টেডিয়াম।

প্রায় পাঁচ বছর পর জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিরছে আন্তর্জাতিক ফুটবল

২০১১ সালের ওয়ানডে ও ২০১৪ সালে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধন; ১৯৮৫, ১৯৯৩ ও ২০১০ সালে এসএ গেমসের উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানের ভেন্যুও এটি।

বাংলাদেশের ফুটবলের সোনালী অতীত এই স্টেডিয়ামের সঙ্গেই জড়িত। আবাহনী-মোহামেডান, ব্রাদার্সের অনেক কালজয়ী ম্যাচ হয়েছে এখানে।

দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে বাংলাদেশ একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ২০০৩ সালে জাতীয় স্টেডিয়ামে সাফের ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিলেন আমিনুল-হাসান আল মামুনরা।

বাংলাদেশের ফুটবলের সর্বশেষ সাফল্য ২০১০ এসএ গেমসে স্বর্ণ জয়ের কীর্তিও এখানে।

২০১১ সালে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচ, কিংবদন্তি ফুটবলার জিনেদিন জিদানের আগমন, ১৯৭৮ সালে সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রীড়াবিদ বক্সার মোহাম্মদ আলীর পা পড়েছিল এই স্টেডিয়ামে।

দেশের ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামে নতুন আবহে ফুটবলের নতুন প্রাণ ফেরানোর দায়িত্ব এখন হামজা-জামালদের কাঁধে।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy