ফুটবলকে প্রাধান্য ক্রীড়া উপদেষ্টার, ১২ নভেম্বর পর্যন্ত মাঠ চায় আর্চারি
নভেম্বর ৮-১৪ তারিখ পর্যন্ত ঢাকায় এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হবে। আবার ১৩ই নভেম্বর বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ও ১৮ই নভেম্বর বাংলাদেশ-ভারত ফুটবল ম্যাচ রয়েছে।
সবগুলো খেলার ভেন্যুই জাতীয় স্টেডিয়াম হওয়ায় সংকট তৈরি হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে ক্রীড়া উপদেষ্টা ফুটবলকে প্রাধান্য দিলেও ১২ নভেম্বর পর্যন্ত মাঠ চায় আর্চারি।
জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টাগণ এবং বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তারা একটা প্রীতি ম্যাচ খেলেন।
সেই ম্যাচ শেষে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া আরচ্যারি ও ফুটবলের ভেন্যু জটিলতার প্রশ্নের উত্তরে বলেন,
‘আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপটা আমরা কমলাপুর স্টেডিয়াম কিংবা আর্মি স্টেডিয়ামে করব। ঐ সময় এখানে ফুটবল ম্যাচ রয়েছে। আর্চারি অন্য কোনো জায়গায় হবে।’
এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে ঢাকায় বিশটির বেশি দেশ আসবে।
খেলোয়াড়-কোচ-কর্মকর্তা মিলিয়ে সংখ্যা চারশ’র বেশি। এমন আয়োজন জাতীয় স্টেডিয়ামে করাই সবচেয়ে বেশি প্রাণবন্ত হবে।
ফুটবলের জন্য সেটা সরলে কেমন হবে?
এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন,
‘এখানে হলে বেস্ট হতো। এখানে পারছি না ফুটবলের জন্য, এখন ফুটবলের প্রতি প্রয়োরিটি রয়েছে। ভারত ও গ্রানাডার (আফগানিস্তান) সাথে খুব কাছাকাছি সময়ে। সেই কারণে আমরা দুঃখজনকভাবে পারছি না এখানে করতে। সুবিধাজনক ও বেস্ট পসিবল প্লেসই আর্চারি আয়োজন করব।’
উপদেষ্টা আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ জাতীয় স্টেডিয়ামের পরিবর্তে অন্য ভেন্যুতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই বিষয়টি আর্চারি ফেডারেশন আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো জানেনি।
ক্রীড়া সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানার পর ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ বলেন,
‘আমরা আপনাদের মাধ্যমেই জানলাম এই বিষয়টি। এখনো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কিংবা মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা পাইনি।’
উপদেষ্টা বিকল্প ভেন্যু হিসেবে কমলাপুর ও আর্মি স্টেডিয়াম বিবেচনা করছেন। কমলাপুর স্টেডিয়াম এশিয়ান আর্চারি আয়োজনের উপযোগী নয়। তা সরাসরিই বলেছেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক,
‘এশিয়ান আর্চারি টুর্নামেন্ট কমলাপুর স্টেডিয়ামের জন্য আয়োজন উপযোগী নয়। আর্মি স্টেডিয়ামে এটা আয়োজন সম্ভব কিন্তু ৮-১৪ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান আর্চারি অনুষ্ঠিত হবে এটা সবাই অবগত। এই মুহুর্তে ভেন্যু পরিবর্তন করা আমাদের পক্ষে কঠিন।’
৮-১৪ নভেম্বর এশিয়ান আর্চারি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সেই বরাদ্দ দিয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসে। সেই বরাদ্দ চিঠি জাতীয় স্টেডিয়ামের মূল ব্যবহারকারী ফুটবল ও অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনও অবগত।
এরপরও উদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় খানিকটা দুঃখ প্রকাশ করে আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন,
‘সংশ্লিষ্ট সকলকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আরো মাস ছয়েক আগেই অবগত করেছে আর্চারি টুর্নামেন্ট নিয়ে। ফুটবল ফেডারেশনের ম্যাচ ছিল ১৮ নভেম্বর। আমাদের টুর্নামেন্ট ১৪ নভেম্বর শেষ। হঠাৎ করে ফুটবল ফেডারেশন ১৩ নভেম্বর ম্যাচ ঠিক করেছে।’
দেশের সকল ফেডারেশনের অভিভাবক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। সকল ক্রীড়া স্থাপনাও এই সরকারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া। তিনি আর্চারি ভেন্যু স্থানান্তরের ঘোষণা দিয়েছেন।
তার এই নির্দেশনাকে সম্মান রেখে আর্চারি ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও এশিয়ান আরচ্যারি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি কাজী রাজিব উদ্দিন আহমেদ চপল বলেন,
‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মানতে আমরা বাধ্য। ফুটবল ও আর্চারি দুই ফেডারেশনই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও উপদেষ্টা মহোদয়ের প্রতি আমাদের অনুরোধ অন্তত ১২ নভেম্বর কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত যেন আমরা জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলতে পারি। ১৩-১৪ দুই দিন আমরা অন্যত্র খেললাম সেটা সমস্যা হবে না। একেবারে ভেন্যু বদল হলে সেটা বাংলাদেশের জন্য খানিকটা ইমেজ সংকটের।’
এশিয়ার আর্চারির সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ। বিডিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাগতিক হয়েছে।
শেষ মুহুর্তে ভেন্যু পরিবর্তন হলে বড় সংকটে পড়বে বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশন,
‘চীন এশিয়ান আর্চারি আয়োজনে আগ্রহী ছিল। ভোটাভুটিতে বাংলাদেশ চীনকে হারিয়ে স্বাগতিক হয়েছে। এখন যদি ভেন্যু পরিবর্তন হয় সেটা ফেডারেশন প্রশ্নের মধ্যে পড়বে। ফুটবলও আমাদের খেলা। আমরা চাই অন্তত ১২ নভেম্বর পর্যন্ত আমাদের এখানে খেলার সুযোগ দিক। ১২ নভেম্বর সন্ধ্যা ছয়টার পর এখানে আর্চারির একটি বোর্ডও থাকবে না।’
২০১৭ সালে জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান আর্চারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। চার বছর পরের এই আসর আর্মি স্টেডিয়ামে করেছিল আর্চারি ফেডারেশন।
এবার অনেক আগে থেকেই জাতীয় স্টেডিয়ামকে ভেন্যু এবং হকি স্টেডিয়ামকে অনুশীলন ভেন্যু হিসেবে রেখেছিল।
জাতীয় স্টেডিয়াম ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ফুটবল ম্যাচ আর হকি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-পাকিস্তান হকি সিরিজ থাকায় দুই দিকেই সংকটে পড়েছে ফেডারেশন।

