টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে ভারত
ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস। সেমি ফাইনালের ম্যাচে ক্যাচ ছাড়ার মহড়ায় লড়াই করেও হেরে গিয়ে এই প্রবাদটিই যেন সত্য প্রমাণিত করলো অস্ট্রেলিয়া।
১৯ নভেম্ভর ২০২৩, ভারতের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করেছিল স্বাগতিক ভারত। ২০২৫ এ এসে একই ফরম্যাটের ভিন্ন আসরে সেই হারেরই যেন প্রতিশোধ নিলো রোহিতবাহিনী।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমি ফাইনালে অজিদের ৪ উইকেটে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করলো ভারত। রোহিত শার্মার নেতৃত্বে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর আরেকটি আইসিসি ট্রফি জয়ের দুয়ারে পৌঁছে গেল তারা।
দুবাইয়ে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ৩ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রান করে অস্ট্রেলিয়া। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেচ্ছেন স্টিভেন স্মিথ। ভারতের হয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন মোহাম্মদ শামি। জবাবে খেলতে নেমে ৪৮ ওভার এক বলে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।
২৬৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই শুবমান গিলকে হারায় ভারত। ৮ রান করে গিল ফিরলে ভাঙে ৩০ রানের উদ্বোধনী জুটি। আরেক ওপেনার রোহিত শর্মা ভালো শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ২৯ বলে ২৮ রান এসেছে অধিনায়কের ব্যাট থেকে।
৪৩ রানে দুই উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন বিরাট কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ার। ইনফর্ম আইয়ার ফিরেছেন ফিফটি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে। ৬২ বলে করেছেন ৪৫ রান। এরপর অক্ষর প্যাটেল-হার্দিক পান্ডিয়ারাও থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি।
এক প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও আরেক প্রান্তে অবিচল ছিলেন কোহলি। এই অভিজ্ঞ ব্যাটার জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছেন। তবে ফিরেছেন ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি না পাওয়ার হতাশা নিয়ে। ৯৮ বলে করেছেন ৮৪ রান।
শেষদিকে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন লোকেশ রাহুল। তার ৩৪ বলে অপরাজিত ৪২ রানের ইনিংসে ভর করে ১১ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। কপার কনোলিকে নিয়ে সেমিতে বাজি ধরেছিল অজিরা। সেটাই হেরেছে তারা। মাত্র দুই ওয়ানডে খেলা তরুণ এই ব্যাটার সেমির মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ইনিংস ওপেন করতে নেমে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। ৯ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
কনোলি সুবিধা করতে না পারলেও আরেক ওপেনার ট্রভিস হেড দলকে শক্ত ভিত গড়ে দেন। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে আরো একবার ভারতীয় সমর্থকদের মনে ভয় ধরিয়েছিলেন তিনি। তবে ফিরেছেন ব্যক্তিগত ফিফটি পাওয়ার আগেই। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৩ বলে ৩৯ রান।
মিডল অর্ডারে এদিন ব্যর্থ মার্নাস ল্যাবুশেন ও জস ইংলিশ। দুজনই উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ল্যাবুশেন ৩৬ বলে করেছেন ২৯ রান। আর ইংলিশের ব্যাট থেকে এসেছে ১১ রান।

বাকিদের আসা-যাওয়ার মাঝেও এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন স্টিভেন স্মিথ। তবে বেশ ধীরগতির ব্যাটিং করেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৯৬ বলে ৭৩ রানে ফিরেছেন তিনি। বড় ম্যাচে এসে ব্যর্থ গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এক ছক্কায় ৭ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
২০৫ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়াকে আড়াইশ ছাড়ানো সংগ্রহ এনে দিতে বড় অবদান রেখেছেন অ্যালেক্স ক্যারি। এই মিডল অর্ডার ব্যাটার এক প্রান্তে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। তবে অপর প্রান্তে কেউই তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেনি। রান আউটে কাটা পড়ার আগে ৫৭ বলে ৬১ রান করেছেন তিনি।