বাফুফের বিশেষ কমিটির সভায় বিদ্রোহী নারী ফুটবলারদের জবানবন্দি
নারী ফুটবলে উদ্ভুত সংকট নিরসনে রবিবার বাফুফের বিশেষ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোচ নিয়ে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বরাবর যেই ১৮ জন ফুটবলার স্বাক্ষরিত চিঠি দিয়েছিলেন আজ তাদেরকেই কমিটির কাছে উপস্থিত হওয়ার কথা বলা হয়েছিলো। তবে শেষ পর্যন্ত ৭ জনের জবানবন্দি নিয়েছে বিশেষ কমিটি।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার পর সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিশেষ কমিটি একজন একজন করে ফুটবলারের কথা শুনেছেন। প্রথম ধাপে ছিলেন সাগরিকা ও সাথী। পরবর্তীতে সুমাইয়া, শিউলি আজিম, মনিকা চাকমা, সানজিদা ও সবার শেষে অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের সঙ্গে কথা বলেছে বিশেষ কমিটি। কেউ ১০ মিনিট আবার কেউ ১৫ মিনিটের মতো ছিলেন বিশেষ কমিটির সামনে।
গত বৃহস্পতিবার ১৮ জন ফুটবলার গণমাধ্যমকে তিন পাতার বিবৃতি দেয় কোচের অভিযোগ নিয়ে। মিডিয়ায় বাংলায় দিলেও বুধবার বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে ইংরেজিতে। দুই জায়গায় দুই রকম চিঠির বিষয়টি নিয়ে খটকা লেগেছিল ফুটবলাঙ্গনে যা আজ অনেকটা পরিষ্কার হয়েছে বলে জানা গেছে।
জাপানিজ বংশোদ্ভুত ফুটবলার সুমাইয়া মাতসুসিমা ইংরেজিতে চিঠি লিখেছেন। তিনি বিশেষ কমিটির সামনে ইংরেজিতেই কথা বলা শুরু করেন। পুরো সময় ইংরেজিতেই কথোপকথন হয়েছে। সুমাইয়া সাবলীলভাবে ইংরেজিতে চিঠি পড়েছেন এবং কমিটির কাছে স্পষ্ট বলেছেন সতীর্থ ফুটবলারদের অনুরোধে তিনিই চিঠি লিখেছেন। জাপানিজ সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠা এই ফুটবলার উদ্ভত পরিস্থিতি নিয়ে অনেক হতাশাও প্রকাশ করেছেন।
মনিকা, সাবিনা, শিউলি সবাই কোচের সঙ্গে তাদের দূরত্বের বিভিন্ন বিষয়গুলো তুলে ধরেন। চিঠির লিখিত অভিযোগের বাইরে বাটলারের কোচিংকালে নানা অসঙ্গতি কমিটির কাছে ব্যাখ্যা করেন। আবার কমিটিও কোনো কোনো পয়েন্ট প্রশ্ন করেছে। আজ বাকি থাকা ১১ জনেরই সাক্ষ্য গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে।
সাড়ে তিন ঘন্টার সভা শেষে বিশেষ কমিটির প্রধান ও বাফুফের সিনিয়ল সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন,
‘আজ প্রথম দিন আমরা সাত জনের সঙ্গে কথা বলেছি। আগামীকালও বলব। আস্তে আস্তে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব।’
বৃহস্পতিবার বাফুফের জরুরি কমিটির সভায় বিশেষ কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে বাফুফে সভাপতি বরাবর প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সেই হিসেবে বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়া সম্ভব কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে কমিটির প্রধান ইমরুল বলেন, ‘আমরা আশাবাদী।’
ফুটবলারদের সঙ্গে কোচের দূরত্ব। বিষয়গুলো অনেকটাই টেকনিক্যাল। বাফুফের সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে সাবেক কোচ থাকলে বিষয়টি বিশ্লেষণে আরো সহজ হতো কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে ইমরুল বলেন,
‘আমাদের কমিটিতে সাবেক তারকা ফুটবলার সাঈদ হাসান কানন রয়েছেন। বাকি যারা রয়েছেন তারা ফুটবলসংশ্লিষ্টই।’
নারী ফুটবলাররা সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বাফুফে তাদের জন্য দেড় কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করেছিল। সেই অর্থ এখনো দিতে পারেনি। কোচের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি নবায়ন করলেও এখনো খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তিই করতে পারেনি। এ নিয়েও খেলোয়াড়দের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও এই বিষয়ে অবশ্য আলোকপাত করা হয়নি আজকের সভায়।