সোহান তান্ডবে বিপর্যস্ত বরিশাল, পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রংপুর
ফরচুন বরিশালের নিশ্চিত জয়ের ম্যাচে শেষ ওভারে জয়ের জন্য রংপুর রাইডার্সের প্রয়োজন ছিল ২৬ রান। কাইল মায়ার্সের করা ২০তম ওভারে ৩০ রানের অতিমানবীয় ইনিংসের কল্যাণে রংপুরকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিয়েছেন দলটি অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ৭ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৩২ রান। এই নিয়ে টানা ছয় ম্যাচের সবকটিতে জিতলো উত্তরবঙ্গের দলটি।
নির্দিষ্ট রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় রংপুর। ৩ বলে ১ রান করে তানভীর ইসলামের বলে স্টাম্পিং হন হেলস। এরপর কিছুটা ধরে খেলেন সাইফ হাসান ও তৌফিক খান তুষার। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ১৯ বলে ২২ রান করে ফাহিম আশরাফ ক্যাচ তুলে দিলে এই জুটি ভাঙে। ৩৫ বলে ৩৭ রান করেছিলেন তুষার ও সাইফ। তাদের জুটি ভেঙে যাওয়ার পর ২৮ বলে ৩৮ রান করে রিশাদ হোসেনের বলে তার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তুষারও।
তিন উইকেট হারিয়ে ফেলার পর রংপুর কিছুটা চাপে পড়ে যায়। দলকে সেখান থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন খুশদিল শাহ ও ইফতিখার আহমদ। অনেকটা পথ টেনে নেন তারা। ৫৩ বলে ৯১ রানের এই জুটি ভাঙেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। ৩৬ বলে ৪৮ রান করা ইফতিখার উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তার বলে। তার বিদায়ের পর নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে শুরু হয় খুশদিলের চেষ্টা।
অবশ্য তিনিও শেষ করতে পারেননি। ২ চার ও ৫ ছক্কায় ২৪ বলে ৪৮ রান করে আউট হন খুশদিল। তার বিদায়ের ওভারে মাহেদী হাসান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও আউট হন। শেষ ওভারে রংপুরের দরকার হয় ২৬ রান। বেশ কঠিনই মনে হচ্ছিল তখন। তবে কাজটি করে দেখান অধিনায়ক সোহান।
তিনি দলকে জয়ের বন্দরে নোঙর করান।
এর আগে, টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৭ রান সংগ্রহ করে বরিশাল। দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেয়ার পথে ৬১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন কাইল মায়ার্স। রংপুরের পক্ষে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন আকিফ জাভেদ। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৬ রান খরচায় ১ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নিলেও ৩ ওভারে ৪৭ রান খরচ করেছেন কামরুল ইসলাম।
এইদিকে, বরিশাল শিবিরে টানা তিন ম্যাচে ব্যর্থ হওয়ার পর চতুর্থ ম্যাচে দ্যুতি ছড়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। তার সামনে সুযোগ এসেছিল ফিফটি হাঁকানোর। তবে কাজে লাগাতে পারেননি। ৩০ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কার মারে ৪১ রান করে কামরুলের বলে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তার আগে অবশ্য তামিমের সঙ্গে গড়েন ৮১ রানের দারুণ জুটি। শান্তর বিদায়ের পর ক্রিজে স্থায়ী হননি বরিশালের অধিনায়কও। ৩৪ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪০ রান করে কামরুলের একই ওভারে ক্যাচ তুলে দেন তামিমও।
তৃতীয় উইকেটে নেমে ঝড় তোলেন কাইল মেয়ার্স ও তাওহীদ হৃদয়। তাদের ৫৯ রানের জুটি ভাঙেন আকিফ জাভেদ। ১৮ বলে ১ ছক্কা ও ১ চারের মারে ২৩ রান করে ক্যাচ তুলে দেন হৃদয়। এরপর ক্রিজে নেমে সাইফউদ্দিনের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৪ বলে ২ রানে থামে তার ইনিংস।
তবে চমক দেখান ফাহিম আশরাফ। মেয়ার্সের সঙ্গে জুটি গড়ে চড়াও হন রংপুরের বোলারদের ওপর। শেষ ওভারে রান আউট হওয়ার আগে ৬ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারের মারে ২০ রান করেন তিনি। অন্যদিকে একপ্রান্ত আগলে রেখে তাণ্ডব চালিয়ে যাওয়া মেয়ার্স ফিফটি তুলে নেন ২৭ বলে। শেষ পর্যন্ত ২৯ বলে ৭ ছক্কা ও ১ চারের মারে ৬১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৯৭ রানে শেষ হয় বরিশালের ইনিংস।
উল্লেখ্য, ৬ ম্যাচে ৬ জয়ে টেবিলের শীর্ষে রংপুর। অপরদিকে এক ম্যাচ কম খেলা বরিশালের অবস্থান ঠিক পরেই।