খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

শনিবার, ১২ই অক্টোবর ২০২৪

ইংলিশ ব্যাটিং বিধ্বস্ত করে জয়ের দ্বারপ্রান্তে শ্রীলঙ্কা

সকালের হতাশা ভুলে দিন শেষে হাসিমুখে মাঠ ছাড়ল শ্রীলঙ্কা। ওভাল টেস্টের তৃতীয় দিন ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে এক স্মরণীয় জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে লঙ্কানরা। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন আর মাত্র ১২৫ রান, হাতে রয়েছে ৯ উইকেট।

২১৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় পাথুম নিসাঙ্কার আগ্রাসী ফিফটির কল্যাণে তৃতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১ উইকেটে ৯৪। আলোকস্বল্পতায় টানা তৃতীয় দিনও আগেভাগে খেলা বন্ধ হয়। দিনভর আবহাওয়ায় ছিল বৈচিত্র্য—কখনও মেঘলা, কখনও রোদ, আবার কখনও বৃষ্টি।

শ্রীলঙ্কার পেসাররা পুরো দিন ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের ওপর দাপট দেখিয়েছেন। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে মাত্র ১৫৬ রানে অলআউট করে দেন তারা। এক পর্যায়ে স্বাগতিকদের স্কোর ছিল ৭ উইকেটে ৮২ রান। জেমি স্মিথের ৬৭ রানের লড়াই ছাড়া কোনো ব্যাটসম্যানই উল্লেখযোগ্য রান করতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে ৬২ রানের লিডের সুবাদে ইংল্যান্ড শ্রীলঙ্কাকে ২১৯ রানের লক্ষ্য দিতে সক্ষম হয়।

এটি ইংল্যান্ডের ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবচেয়ে কম স্কোর। এর আগে ১৯৯৮ সালে এই ওভালেই তারা ১৮১ রানে অলআউট হয়েছিল, যেখানে শ্রীলঙ্কা ১০ উইকেটে জিতেছিল। দীর্ঘ ২৫ বছর পর আবারও ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নেমে শ্রীলঙ্কা আরেকটি ঐতিহাসিক জয়ের দোরগোড়ায়।

দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কার বোলিং আক্রমণে সবচেয়ে সফল ছিলেন লাহিরু কুমারা, যিনি ২১ রানে নেন ৪ উইকেট। ভিশ্ব ফার্নান্দো নেন ৩ উইকেট।

তৃতীয় দিনের শুরুটা অবশ্য শ্রীলঙ্কার জন্যও সহজ ছিল না। ৫ উইকেটে ২১১ রান নিয়ে দিন শুরু করা লঙ্কানরা ২৬৩ রানেই গুটিয়ে যায়। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ৬৯ রান করে আউট হন এবং কামিন্দু মেন্ডিস ৬৪ রান করে ফিরে যান। এরপর দ্রুত বাকি উইকেটগুলো হারিয়ে শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪৩ রানে ৫ উইকেট হারায়।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড শুরু থেকেই চাপে পড়ে যায়। বেন ডাকেট ও অলিভার পোপ দুইজনই ব্যর্থ হন, ডাকেট ৭ রান ও পোপ ৭ রান করে বিদায় নেন। লাহিরু কুমারা ও ভিশ্ব ফার্নান্দো ইংলিশ ব্যাটিং ধসিয়ে দেন। জো রুট ও হ্যারি ব্রুকও দুই ইনিংসেই ব্যর্থ হন।

ইংল্যান্ডের ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যেও জেমি স্মিথ ৫৮ রানের জুটি গড়েন অলি স্টোনের সঙ্গে। স্মিথ ৫০ বলে ৬৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন, যেখানে ১০টি চার ও একটি ছক্কা ছিল।

লক্ষ্য তাড়ায় শ্রীলঙ্কার ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন। তবে অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে দুই অঙ্কে পৌঁছানোর আগেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। কিন্তু এরপর কুসাল মেন্ডিসকে সঙ্গে নিয়ে নিসাঙ্কা দলকে এগিয়ে নেন। নিসাঙ্কা ফিফটি পূর্ণ করেন ৪২ বলে, যেখানে ৭টি চার ছিল। দিন শেষে নিসাঙ্কা ৪৪ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত এবং মেন্ডিস ২৫ বলে ৩০ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন।

শ্রীলঙ্কার সামনে এখন ঐতিহাসিক এক জয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩২৫

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৬১.২ ওভারে ২৬৩ (আগের দিন ২১১/৫) (ধানাঞ্জয়া ৬৯, কামিন্দু মেন্ডিস ৬৪, রাত্নায়েকে ৭, ভিশ্ব ০, কুমারা ৫*, আসিথা ১১; ওকস ১৩-৫-৪২-২, অ্যাটকিনসন ৯-১-৪৬-০, হাল ১১-০-৫৩-৩, স্টোন ৯-৩-৩৫-৩, বাশির ১১.২-০-৩৭-১, লরেন্স ৬-০-২৯-০, রুট ২-০-১১-০)

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৩৪ ওভারে ১৫৬ (ডাকেট ৭, লরেন্স ৩৫, পোপ ৭, রুট ১২, ব্রুক ৩, স্মিথ ৬৭, ওকস ০, অ্যাটকিনসন ১, স্টোন ১০, হাল ৭*, বাশির ৪; আসিথা ১২-২-৪৯-২, রাত্নায়েকে ৭-০-৪৩-১, কুমারা ৭-১-২১-৪, ভিশ্ব ৮-১-৪০-৩)

শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২১৯) ১৫ ওভারে ৯৪/১ (নিসাঙ্কা ৫৩*, কারুনারাত্নে ৮, কুসাল মেন্ডিস ৩০*; ওকস ৬-০-৩২-১, অ্যাটকিনসন ৪-০-২৪-০, হাল ৩-০-২৫-০, স্টোন ১-০-৫-০, বাশির ১-০-৭-০)

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy