টাইগারদের হিমশিম খাওয়া পিচে ছেলেখেলা করছে লঙ্কানরা
প্রথম দিন লেজের জোরে দিন পার করেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনে মাত্র পৌনে এক ঘণ্টা টিকতে পেরেছে। শান্তদের হিমশিম খাওয়া পিচে, ছেলেখেলা করছে শ্রীলঙ্কা।
ওপেনার পাতুম নিশাঙ্কার সেঞ্চুরিতে দুই উইকেটে ২৯০ রান সংগ্রহ করে ইতিমধ্যে ৪৩ রানের লিডে রয়েছে স্বাগতিকরা।
প্রথম দিনে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর দ্বিতীয় দিনে বাজে বোলিং, সবমিলিয়ে কলম্বো টেস্টে দুই দিন শেষেই বেশ পিছিয়ে পড়েছে সফরকারীরা।
আগেরদিন ৮ উইকেটে ২২০ রান করা বাংলাদেশ আজ (বৃহস্পতিবার) আর ২৭ রান যোগ করতেই বাকি দুই ব্যাটারকে হারায়। এরপর লঙ্কানরা প্রথম ইনিংসে শুরুটা পেয়েছে উড়ন্ত গতিতে।
শুরুতে দুই লঙ্কান ওপেনার লাহিরু উদারা ও পাতুম নিশাঙ্কা ব্যাট চালিয়েছেন ওয়ানডে মেজাজে।
তাইজুলের লেগ বিফোরের ফাঁদে পরে ফিফটির পথে থাকা উদারা ফিরেছেন ৬৫ বলে ৪০ রান করে। তাতে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ৮৮ রানে।
গলের পর কলম্বোতেও সেঞ্চুরির দেখা পান পাতুম। ১৪৬ রানে অপরাজিত আছেন এই ওপেনার। তিনে নেমে নিশাঙ্কাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন দীনেশ চান্দিমাল।
এমন নিরানন্দ দিনে ও ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশ। ১০ রানের মাথায় তাইজুলের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন চান্দিমাল।
সে যাত্রায় বেঁচে ইনিংসটা টেনে নিয়েছেন তিনি ৯৩ পর্যন্ত। পরে এই ব্যাটার নাঈম হাসানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন।
চলতি কলম্বো টেস্টের স্কোরকার্ডে যেন ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ঐতিহাসিক টেস্টের ছায়া পড়েছে।
দ্বিতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কা ২ উইকেটেই করে ফেলেছে ২৯০ রান, এগিয়ে গেছে ৪৩ রানে। কাল তৃতীয় দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বাংলাদেশের ওপরই বড় কিছুই চাপাতে চাইবে তারা।
অথচ টেস্টের প্রথম দিনে শ্রীলঙ্কার বোলারদের কঠিন বলগুলোকে ভালোভাবে সামলে দক্ষিণ আফ্রিকার তুলনায় ভালো শুরুই করেছিল বাংলাদেশ। বিশেষ করে সকালের কঠিন সময়টাতে খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হয়নি।
ব্যাটসম্যানরা বাজে আউট না হলে আজ দিন শেষে খুব খারাপ থাকত না বাংলাদেশের অবস্থা।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েও এসএসসির ব্যাটিং উইকেটে ব্যাটিংয়ের জন্য পয়মন্ত সময়টাই বাংলাদেশকে কাটাতে হচ্ছে শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানদের বোলিং করে, তাদের বাউন্ডারি কুড়িয়ে এনে।
এসএসসির অতীত, এখানকার উইকেটের চরিত্র—কোনোটাই অবশ্য অজানা নয়। তার মধ্যেও বাংলাদেশকে চেষ্টা করতে হতো কীভাবে ম্যাচটাকে নিজেদের হাতে রাখা যায়।
ব্যাটসম্যানরা তাতে ব্যর্থ, বোলাররাও পারছেন না অসাধারণ কিছু করতে।
চোট কাটিয়ে দুই বছর পর দলে ফেরা পেসার ইবাদত হোসেন প্রথম তিন ওভারে দিয়েছেন ১৭, তাঁর প্রথম স্পেলও ওখানেই শেষ।
সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে এসে নাহিদ রানার প্রথম স্পেল থেমে যায় ২ ওভারে, রান দিয়েছেন ২০।
পরে এসে কিছু বাউন্সার দিয়ে ভয় ধরাতে চেয়েছেন ব্যাটসম্যানদের মনে, যদিও সেই বাউন্সারের কয়েকটিকে বাউন্ডারি হতে দেখেছেন তিনি।
গল টেস্টে ৫ উইকেট নেওয়া অফ স্পিনার নাঈম হাসানকে প্রথম সেশনে বোলিং করতে না দেয়াটা সবচেয়ে বেশি বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।
ইনিংসের ২৬তম ওভারে নিজের প্রথম ওভার করেন নাঈম। শেষবেলায় চান্ডিমালের উইকেটটাও এসেছে তাঁর বলেই।
দ্বিতীয় দিনের স্কো রঃ
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৭৯.৩ ওভারে ২৪৭
(সাদমান ৪৬, মুশফিক ৩৫, লিটন ৩৪, তাইজুল ৩৩, মিরাজ ৩১; দিনুশা ৩/২২, আসিতা ৩/৫১)।শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৭৮ ওভারে ২৯০/২
(নিশাঙ্কা ১৪৬*, চান্ডিমাল ৯৩, উদারা ৪০; নাঈম ১/৪৫, তাইজুল ১/৯০)।