খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর ২০২৪

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ: নিউ জিল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে আফগানিস্তানের জয়

গায়ানার প্রভিডেন্সে শনিবার নিউ জিল্যান্ডকে ৮৪ রানে হারায় আফগানিস্তান। ১৫৯ রানের সংগ্রহ নিয়ে তারা কিউইদের গুটিয়ে দেয় মাত্র ৭৫ রানে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রানের হিসেবে এটিই নিউ জিল্যান্ডের সর্বোচ্চ ব্যবধানে হার। বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টে এর চেয়ে কম রানে তারা অলআউট হয়েছে একবার, ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬০ রান।

বিশ্বকাপ তো বটেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে আফগানিস্তানের প্রথম জয় এটি। পরপর দুই ম্যাচ জিতে সুপার এইটের পথে অনেকটা এগিয়ে গেল আফগানরা।

উগান্ডার বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৭৬ রান করা গুরবাজ এবার খেলেন ৮০ রানের ইনিংস। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটিই আফগানিস্তানের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ। তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

বোলিংয়ে ৪টি করে উইকেট নেন ফারুকি ও রাশিদ। আগের ম্যাচে ৯ রানে ৫ উইকেট নেওয়া ফারুকি এবার ১৭ রানে ধরেন ৪ শিকার। বিশ্বকাপে প্রথম বোলার হিসেবে পরপর দুই ম্যাচে ৪ বা তার বেশি উইকেট নিলেন বাঁহাতি পেসার।

রাশিদও খরচ করেন সমান ১৭ রান। বিশ্বকাপে কোনো অধিনায়কের সেরা বোলিং এটি। ২০০৭ সালে টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে ভারতের বিপক্ষে ২০ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন ড্যানিয়েল ভেটোরি। ২০২১ সালে পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে ওমানের জিশান মাকসুদও ২০ রানে ধরেন ৪ শিকার।

আফগানিস্তানকে জয়ের ভিতটা গড়ে দেন দুই ওপেনার। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ১০৩ রান যোগ করেন গুরবাজ ও ইব্রাহিম। আগের ম্যাচে তাদের জুটিতে আসে ১৫২ রান।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে উদ্বোধনী জুটিতে টানা দুই ম্যাচে শতরানের জুটি হলো এই প্রথম। সব মিলিয়ে যে কোনো উইকেটে এমন ঘটনা দেখা গেছে দুবার। ২০১২ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে পরপর দুই ম্যাচে শতকছোঁয়া জুটি গড়েন ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স হেলস ও ওয়েন মরগ্যান। ২০১৪ সালে ভারতের রোহিত শার্মা ও ভিরাট কোহলিও গড়েন একই কীর্তি।

পাওয়ার প্লেতেই ভাঙতে পারত গুরবাজ-ইব্রাহিমের জুটি। চতুর্থ ওভারে ম্যাট হেনরির বলে ১৩ রানে থাকা ইব্রাহিমের ক্যাচ ছাড়েন ফিন অ্যালেন। পরের ওভারে গুরবাজকে রান আউটের সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ডেভন কনওয়ে।

এক বল পর এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্তে রিভিউ নিয়ে বাঁচেন ইব্রাহিম। ঘটনাবহুল পাওয়ার প্লেতে তারা করে ৪৪ রান। পরের ৪ ওভারে ঘুরে দাঁড়ায় কিউই বোলাররা। ১০ ওভারে আফগানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ৫৫ রান।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম ১০ ওভারে কোনো উইকেট না হারানো ৩৪ ইনিংসের মধ্যে এটিই সবচেয়ে কম রান। গত আসরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১০ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৬ রান করেছিল পাকিস্তান।

এরপর শুরু আফগানিস্তানের পাল্টা আক্রমণ। একাদশ ওভারে মাইকেল ব্রেসওয়েলের বলে ৩ ছক্কায় আসে ২১ রান। পরের দুই ওভারেও আসে একটি করে ছক্কা। ৪০ বলে টানা দ্বিতীয় পঞ্চাশ পূর্ণ করেন গুরবাজ।

১৫তম ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন হেনরি। ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪১ বলে ৪৪ রান করে ফেরেন ইব্রাহিম।

হেনরির পরের ওভারে দুটি ছক্কা মারেন ওমারজাই। ১৯তম ওভারে ড্যারেল মিচেলের বল জোড়া ছক্কায় ওড়ান গুরবাজ। এর মধ্যে দ্বিতীয়টি যায় ১০৫ মিটার দূরে।

শেষ ওভারে মাত্র ৩ রান নিতে ৩ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। বোল্টের দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড হন ৫৬ বলে ৫টি করে চার-ছক্কা মারা গুরবাজ। ২২ রানে ২ উইকেট নেন বোল্ট।

রান তাড়ায় প্রথম বলেই দারুণ ডেলিভারিতে অ্যালেনকে বোল্ড করেন ফারুকি। তার পরের ওভারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন আরেক ওপেনার ডেভন কনওয়ে। পঞ্চম ওভারে ড্যারেল মিচেলকে ফিরিয়ে কিউইদের চাপে ফেলে দেন বাঁহাতি পেসার।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর আক্রমণে এসে প্রথম বলেই কেইন উইলিয়ামসনকে আউট করেন রাশিদ। আফগান অধিনায়কের পরের ওভারে পরপর দুই বলে ফেরেন মার্ক চ্যাপম্যান ও ব্রেসওয়েল। পঞ্চাশের আগে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউ জিল্যান্ড।

এরপর গ্লেন ফিলিপস ১৮ ও হেনরি ১২ রান করে পরাজয়ের ব্যবধান কমান। এই দুজন ছাড়া আর কেউ দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। হেনরিকে আউট করে আফগানিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন ফারুকি।

রাশিদ-ফারুকি ছাড়া অভিজ্ঞ অফ স্পিনার মোহাম্মদ নাবি নেন ২ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৫৯/৬ (গুরবাজ ৮০, ইব্রাহিম ৪৪, ওমারজাই ২২, নাবি ০, রাশিদ ৬, জানাত ১*, গুলবাদিন ০, নাজিবউল্লাহ ১*; বোল্ট ৪-০-২২-২, হেনরি ৪-০-৩৭-২, স্যান্টনার ৪-০-২৪-০, ব্রেসওয়েল ৩-০-২৭-০, ফার্গুসন ৪-০-২৮-১, মিচেল ১-০-১৬-০)

নিউ জিল্যান্ড: ১৫.২ ওভারে ৭৫ (অ্যালেন ০, কনওয়ে ৮, উইলিয়ামসন ৯, মিচেল ৫, ফিলিপস ১৮, চ্যাপম্যান ৪, ব্রেসওয়েল ০, স্যান্টনার ৪, হেনরি ১২, ফার্গুসন ২, বোল্ট ৩*; ফারুকি ৩.২-০-১৭-৪, নাবি ৪-০-১৬-২, নাভিন ৩-০-১০-০, রাশিদ ৪-০-১৭-৪, নুর ১-০-১০-০)

ফল: আফগানিস্তান ৮৪ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: রহমানউল্লাহ গুরবাজ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy