খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর ২০২৪

ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের হোয়াইটওয়াশড হলো বাংলাদেশ

সিলেটে বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে যায় ২১ রানে। ভারতের ১৫৬ রানের জবাবে ৬ উইকেটে ১৩৫ রানে থামে নিগার সুলতানার দল।

এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের বছরে মূলত প্রস্তুতির জন্যই আইসিসির ভবিষ্যৎ সফরসূচির বাইরে এই সিরিজটির আয়োজন। সেই লক্ষ্য বাংলাদেশের কতটা পূরণ হলো, প্রশ্ন তোলাই যায়। ভারত ঠিকই সুযোগটি কাজে লাগাল দারুণভাবে। আগামী অক্টোবরে এই সিলেটেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলি খেলবে তারা।

বাংলাদেশের প্রস্তুতির দিক থেকে চিন্তা করলে এই ম্যাচে বোলিংয়ে কিছুটা ছন্দ ফিরে পেয়েছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার নাহিদা আক্তার। ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন রাবেয়া খান।

পরে রিতু মনি, শরিফা খাতুন, রাবেয়ারা ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে কমিয়েছেন পরাজয়ের ব্যবধান।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে পঞ্চম ওভারে সুলতানা খাতুনের বলে ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দেন শেফালি ভার্মা। একই ওভারে ইনসাইড আউট শটে ছক্কা মারেন স্মৃতি মান্ধানা।

পরের ওভারে ৩টি বাউন্ডারি হজম করেন শরিফা। পাওয়ার প্লেতে পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফেলে ভারত। দ্বিতীয় উইকেটে স্মৃতি ও দায়ালান হেমালাথা স্রেফ ২৩ বলে যোগ করেন ৩৭ রান।

অষ্টম ওভারের শেষ বলে ২৫ বলে ৩৩ রান করা স্মৃতিকে এলবিডব্লিউ করেন নাহিদা। রাবেয়ার পরের ওভারের প্রথম বলে ফিরতে পারতেন হেমালাথাও। কিন্তু লং অফে সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণা।

৮ রানে বেঁচে গিয়ে বাংলাদেশকে ভোগান্তি উপহার দেন হেমালাথা। ২টি করে চার-ছক্কায় তিনি খেলেন ২৮ বলে ৩৭ রানের ইনিংস। হারমানপ্রিত কৌরের সঙ্গে তার তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৪২ বলে ৬০ রান।

পঞ্চদশ ওভারে হারমানপ্রিতের (২৪ বলে ৩০) বিদায়ে ভাঙে জুটি। পরের ওভারে হেমলাথা ও সাজিভান সাজানাকে ফেরান রাবেয়া।

দুই রানের মধ্যে তিন উইকেট নিয়ে ভারতকে একটু চেপে ধরে বাংলাদেশ। তবে শেষ দিকে রিচা ঘোষের ১৭ বলে ২৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে ঠিকই দেড়শ পেরিয়া যায় ভারত।

বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন নাহিদা ও রাবেয়া।

ব্যাটিং নিয়ে ভোগান্তিতে থাকা বাংলাদেশ রান তাড়া শুরু করে টপ অর্ডারে পরিবর্তন এনে। একপ্রান্তে দিলারা আক্তার ছিলেনই, আরেক প্রান্তে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবার ইনিংস ওপেন করেন একাদশে ফেরা সোবহানা মোস্তারি।

নতুন শুরুতে আশার ছবিও কিছুটা মেলে ধরেন সোবহানা। দ্বিতীয় ওভারে পুজা ভাস্ত্রাকারের বলে ৩টি চার মারেন তিনি দারুণ শটে। তবে ওই পর্যন্তই। আরও একবার ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ তিনি (১৩)।

ব্যর্থতার ধারাবাহিকতায় আরেক ওপেনার দিলারা আক্তার ফেরেন ৪রানে। তিন নম্বরে নামা রুবাইয়া হায়দার দৃষ্টিনন্দন তিনটি বাউন্ডারি মারলেও শেষ পর্যন্ত করতে পারেন ২১ বলে ২০।

এরপর নামে ধস। পাঁচ রানের মধ্যে ড্রেসিং রুমে ফেরেন রুবাইয়া, নিগার সুলতানা ও স্বর্ণা আক্তার। সিরিজের পাঁচ ম্যাচের তিনটিতেই দুই অঙ্ক ছুঁতে ব্যর্থ অধিনায়ক নিগার।

৫২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকেও ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। তবে প্রতিরোধ গড়েন অভিজ্ঞ রিতু মনি ও তরুণ শরিফা সুলতানা। উইকেট আগলে রাখার পাশাপাশি রান তোলার তাড়নাও দেখান দুজন। তাতে গড়ে ওঠে ৪১ বলে ৫৭ রানের জুটি।

ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের আগের সর্বোচ্চ জুটি ছিল কেবল ৩২ রানের।

চারটি চারে ৩৩ বলে ৩৭ রান করে ফেরেন রিতু।

পরে ২১ বলে ২৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বাকি ওভার কাটিয়ে দেন শরিফা ও রাবেয়া। ৩ চারে ২১ বলে ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন শরিফ। রাবেয়া করেন ১৪ রান।

তাতে একটু ভদ্রস্থ হয় স্কোর আর পরাজয়ের ব্যবধান।

২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন রাধা ইয়াদাভ। সব মিলিয়ে ১০ উইকেট নিয়ে বাঁহাতি স্পিনার তার হাতেই ওঠে সিরিজসেরার পুরস্কার।

এই নিয়ে টানা ৯টি টি-টোয়েন্টিতে হারল বাংলাদেশ। সবশেষ জয়টি ছিল গত ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ২০ ওভারে ১৫৬/৫ (শেফালি ১৪, স্মৃতি ৩৩, হেমালাথা ৩৭, হারমানপ্রিত ৩০, রিচা ২৮*, সাজিভান ১, দিপ্তি ৫*; তৃষ্ণা ২-০-১২-০, সুলতানা ৩-০-২৬-১, শরিফ ২-০-১৬-০, রাবেয়া ৪-০-২৮-২, নাহিদা ৪-০-২৭-২, রিতু ২-০-২১-০, স্বর্ণা ৩-০-২২-০)

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৫/৬ (দিলারা ৪, সোবহানা ১৩, রুবাইয়া ২০, নিগার ৭, রিতু ৩৭, স্বর্ণা ১, শরিফা ২৮*, রাবেয়া ১৪*; তিতাস ৪-০-২৭-১, তিতাস ৪-০-২৭-১, পূজা ৩-০-২৮-০, রাধা ৪-০-২৪-৩, সাজিভান ২-০-১২-০, দিপ্তি ৩-০-১৯-০, আশা ৪-০-২৫-২)

ফল: ভারত ২১ রানে জয়ী

সিরিজ: পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ভারত ৫-০তে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: রাধা ইয়াদাভ

প্লেয়ার অব দা সিরিজ: রাধা ইয়াদাভ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy