খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

শনিবার, ২৭শে জুলাই ২০২৪

উইলিয়ামসনের জোড়া সেঞ্চুরিতে নিউ জিল্যান্ডের লিড

টেস্ট সেঞ্চুরি আর রানে কেন উইলিয়ামসনের ধারেকাছে নেই তার দেশের কেউ। আরও কত কত ব্যাটিং রেকর্ড তার! তবে একটি জায়গায় ঘাটতি ছিল তর্কযুক্তভাবে নিউ জিল্যান্ডের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানের। এক টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি ছিল না তার। ‘ছিল না’ বলতে হচ্ছে, কারণ সেই শূন্যতাও তিনি পূরণ করে ফেললেন। ওয়ানডের গতিতে করা তার সেঞ্চুরিতে দলের লিড পৌঁছে গেল পাহাড় সমান উচ্চতায়।

মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে নিউ জিল্যান্ডের ৫১১ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস শেষ স্রেফ ১৬২ রানেই। ৩৪৯ রানের লিড নিয়েও ফলো-অন না করিয়ে আবার ব্যাটিংয়ে নামে কিউরা। মঙ্গলবার তৃতীয় দিন শেষে তাদের রান ৪ উইকেটে ১৭৯।

দুই ইনিংস মিলিয়ে এখন ৫২৮ রানে এগিয়ে নিউ জিল্যান্ড।

চোট কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসেও আরেকটি সেঞ্চুরি যোগ করেন উইলিয়ামসন। দুই ইনিংসে তার ব্যাটিংয়ের ধরন ছিল দুই রকম। প্রথম ইনিংসে ধৈর্যের প্রতিমূর্তি হয়ে ৪২৪ মিনিট ক্রিজে থাকিয়ে ২৮৯ বল খেলে ১১৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এবার গতিময়তায় রান তুলে ১২ চার ও ১ ছক্কায় ১৩২ বল খেলে তার রান ১০৯।

নিউ জিল্যান্ডের হয়ে এক টেস্টে দুই সেঞ্চুরি করা পঞ্‌চম ব্যাটসম্যান উইলিয়ামসন। তার আগে এই কীর্তি গড়তে পেরেছিলেন গ্লেন টার্নার, জেফ হাওয়ার্থ, অ্যান্ড্রু জোন্স ও পিটার ফুলটন।

২৯ সেঞ্চুরি নিয়ে টেস্ট শুরু করা উইলিয়ামসনের শতরান এখন ৩১টি। ১৭০ ইনিংসে ৩১ সেঞ্চুরিতে তিনি স্টিভেন স্মিথের পাশেই। তাদের চেয়ে কম ইনিংসে করেছেন কেবল সাচিন টেন্ডুলকার।

উইলিয়ামসন ব্যাটিংয়ে নামার আগে দাপট ছিল তার দলের বোলারদের। ৪ উইকেটে ৭৬ রান নিয়ে দিন শুরু করা দক্ষিণ আফ্রিকা যোগ করতে পারে আর কেবল ৮৬ রান।

৬ অভিষিক্ত নিয়ে একাদশ সাজানো দলের ব্যাটিং লাইন আপের বড় ভরসা ছিলেন দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ডেভিড বেডিংহ্যাম ও কিগান পিটারসেন। কিন্তু এই জুটি টিকতে পারেনি লম্বা সময়। দিনের শুরুতে ৩৩ বল খেলে তারা কেবল করতে পারেন ৩ রান। পরে হঠাৎ ধৈর্য হারিয়ে ম্যাট হেনরিকে তেড়েফুঁড়ে পুল করার চেষ্টায় বেডিংহ্যাম বিদায় নেন ৩২ রানে।

এরপর আর কোনো জুটি দাঁড়ায়নি। এক প্রান্তে লড়াই করে গেছেন পিটারসেন। ২ রানে থাকা অবস্থায় ৩১ বলে রান করতে পারেননি তিনি। তবু লড়াই চালিয়ে যান। কিন্তু আরেকপ্রান্তে পাননি কোনো সঙ্গী। হেনরি ও মিচেল স্যান্টনারের সামনে একের পর এক উইকেট হারায় তারা।

পরে রাচিন রবীন্দ্র বোলিংয়ে এসেও যোগ দেন উইকেট শিকারে। পিটারসেনের ইনিংস ৪৫ রানে থামান তিনিই। দক্ষিণ আফ্রিকা থমেক যায় দুইশর বেশ আগেই।

এরপর দিনের বাকিটা কেবলই উইলিয়ামসনের গল্প। টপ অর্ডারে আবারও ব্যর্থ হন টম ল্যাথাম। ছন্দে না থাকা ডেভন কনওয়ে চেষ্টা করে উইকেট আগলে রাখতে। উইলিয়ামসন ক্রিজে গিয়েই সাবলিল ব্যাটিংয়ে বাড়াতে থাকেন রান।

কনওয়ের অস্বস্তিময় ইনিংস শেষ হয় ৬৮ বলে ২৯ রান করে। জুটি থামে ৯২ রানে। দুর্দান্ত ক্যাচ নেন এডওয়ার্ড মুর। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান রাচিন রবিন্দ্র এবার আউট হয়ে যান ১২ রানে।

৭৫ বলে ফিফটি ছোঁয়া উইলিয়ামসন জীবন পান ৬১ রানে। সেটির খেসারত প্রোটিয়াদের বুঝিয়ে দিয়ে শতরান পূর্ণ করেন ১২৫ বলে।

দিনের শেষ ভাগে রানের গতি আরও বাড়ানোর চেষ্টা করে নিউ জিল্যান্ড। সেঞ্চুরির পর নিল ব্রান্ডকে ছক্কায় ওড়ান উইলিয়ামসন। পরে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়ে যান শেষের আগের ওভারে।

প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক নিল ব্রান্ড দ্বিতীয় ইনিংসেও এখনও পর্যন্ত ২টি উইকেট নিয়েছেন। তবে সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ অপেক্ষায় তার মূল কাজ ব্যাটিংয়ে। শুধু তার নয়, সেই চ্যালেঞ্জ গোটা দলেরই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫১১

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৭২.৫ ওভারে ১৬২ (আগের দিন ৮০/৪) (বেডিংহ্যাম ৩২, পিটারসেন ৪৫, দু সুয়াত ০, ফরটান ৯, অলিভিয়ের ১৫*, মোরেকি ৫, প্যাটারসন ১ ; সাউদি ১৩-৩-৪১-০, হেনরি ১৪-৬-৩১-৩, জেমিসন ১৫-৬-৩৫-২, স্যান্টনার ২১-৮-৩৪-৩, রবীন্দ্র ৯.৫-৫-১৬-২)।

নিউ জিল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৪৩ ওভারে ১৭৯/৪ (ল্যাথাম ৩, কনওয়ে ২৯, উইলিয়ামসন ১০৯, রবীন্দ্র ১২, মিচেল ১১*, ব্লান্ডেল ৫*; প্যাটারসন ১০-১-৩৮-১, মোরেকি ৮-১-১৬-০, দু সুয়াত ৮-০-৪৮-১, অলিভিয়ের ৪-০-১৯-০, ব্রান্ড ১৩-১-৫২-২)।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy