জোড়া শতকে গল টেস্টের প্রথম দিন স্বস্তিতে পার করল বাংলাদেশ
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা গল টেস্টের দিনের শুরু আর শেষের চিত্রটা সম্পূর্ণ বিপরীত। যেখানে মধ্যাহ্ন বিরতির আগেও স্বাগতিকদের পক্ষে ছিল স্কোরবোর্ড, দিনশেষে তার দখল নিলো বাংলাদেশ।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিমের জোড়া শতক টাইগারদের বেশ ভালোভাবেই কক্ষপথে রেখেছেন।
দিন শেষে ৯০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৯২ রান।
অধিনায়ক শান্ত টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন দেড় বছরের বিরতির পর। আর মুশফিক পেয়েছেন ১২তম সেঞ্চুরি। তিনিও এমন ইনিংসের দেখা পেলেন ৯ মাস পর।
দিনশেষে শান্ত ১৩৬ ও মুশফিক ১০৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন। দুজন মিলে গড়েছেন ২৪৭ রানের জুটি। যা টেস্টের চতুর্থ উইকেটে দ্বিতীয় এবং সবমিলিয়ে বাংলাদেশের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ জুটি।
দলীয় ৫০ রানের আগেই টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটার ফিরেন সাজঘরে। তবে এরপর দলের হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। এ দুজন মিলে গড়েছেন ২৪৭ রানের বিশাল এক জুটি।
এ জুটির সুবাদেই আর কোনো উইকেট না হারিয়ে টাইগাররা দিন শেষ করেছে ৩ উইকেটে ২৯২ রান নিয়ে। আর দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার পথে মুশফিক-শান্ত দুজনই পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ টেস্টে খেলতে নামার আগে মুশফিক আর শান্ত- এ দুজনেই ছিলেন সেঞ্চুরি খরায়।
শান্ত সাদা পোশাকে সবশেষ শতকের দেখা পেয়েছিলেন ২০২৩ সালের নভেম্বরে। আর মুশফিক নিজের সবশেষ ১৩ টেস্ট ইনিংসের সর্বোচ্চ রানই ছিল ৪০।
তবে গল টেস্টের প্রথম ইনিংস দিয়েই সেঞ্চুরি খরা কাটালেন এ দুই ব্যাটার।
আগে ব্যাট করতে নেমে সকালে বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করেন ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও সাদমান ইসলাম। তবে শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের।
মাত্র ৫ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন এনামুল হক বিজয়। আসিথা ফার্নান্ডোর করা পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে অফ স্টাম্পের বাইরে থাকা একটি ভালো লেংথের ডেলিভারিতে স্লিপে ক্যাচ দেন বিজয়। ১০ বল খেলে শূন্য রানেই বিদায় নিতে হয় তাকে।
এরপর উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন সাদমান ইসলাম ও মুমিনুল হক।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ধীরে সুস্থে খেললেও ভুল করেন সাদমান। থারিন্দু রথনায়েকের ডেলিভারিতে অফ সাইডে ড্রাইভ করতে গিয়ে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৫৩ বলে ১৪ রান।
এরপর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন মুমিনুল হক। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হন। থারিন্দুর বাইরের বল খেলে স্লিপে ধরা পড়েন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
ফলে বাংলাদেশ হারায় তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। শুরুতেই তিন টপ অর্ডার ব্যাটারের বিদায়ে চাপে পড়ে সফরকারীরা।
এমন অবস্থায় ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব কাঁধে নেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। দুই ব্যাটারই ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন।
এ দুজনের প্রতিরোধী জুটির সুবাদেই মধ্যাহ্নবিরতিতে যাওয়ার আগে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ পায় ৯০ রানের দেখা।
শান্ত-মুশফিক জুটি মধ্যাহ্নবিরতির পরও বাংলাদেশ দলকে পথ দেখিয়েছে। এ দুজনের ইনিংসের সুবাদেই আর কোনো উইকেট না হারিয়ে দলীয় ২০০ রান পূরণ করে টাইগাররা।
চা বিরতিতে যাওয়ার আগেই দুজন পেয়েছেন ফিফটির দেখা।
এরপর দিনের শেষ সেশনে সেঞ্চুরি তুলে নেন দুজনেই।
প্রবাত জয়াসুরিয়াকে সুইপ করে ২ রান নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরিটা পেয়ে যান শান্ত। আর মুশফিক পেলেন লাল বলের ক্রিকেটে নিজের ১২ তম সেঞ্চুরির দেখা।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তাঁর চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে শুধু মুমিনুলের–১৩টি। এ দুজনের শতকের সুবাদেই বাংলাদেশ দিন শেষ করেছে ৩ উইকেটে ২৯২ রান নিয়ে।