লিগ টেবিলে দুই নম্বরে উঠে এলো ম্যানচেস্টার সিটি
প্রতিপক্ষের মাঠে সোমবার রাতে পিছিয়ে পড়েও প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ৩-১ গোলে জিতেছে শিরোপাধারীরা।
নিয়াল মুপে স্বাগতিকদের এগিয়ে নেওয়ার পর প্রথমার্ধের শেষ সময়ে সমতা টানেন ফোডেন। দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুই গোল করেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার।
ফোডেন ম্যাচের নায়ক হলেও প্রথমার্ধের সবচেয়ে আলোচিত নাম ছিল ফ্লেকেন। শুধু প্রথমার্ধেই ৯টি অসাধারণ সেভ করেন এই ডাচ গোলরক্ষক। দ্বিতীয়ার্ধেও বেশ কয়েকটি সেভ করেন তিনি।
গত মৌসুমে একমাত্র দল হিসেবে লিগে দুবারের দেখায় দুবারই সিটিকে হারিয়েছিল ব্রেন্টফোর্ড। এবারও শুরুতে এগিয়ে গিয়ে অভাবনীয় কিছুর ইঙ্গিত দেয় তারা, কিন্তু সিটির দাপুটে পারফরম্যান্সের সামনে পেরে উঠল না দলটি।
এই ম্যাচ দিয়ে গত ১১ অগাস্টের পর প্রথমবার একসঙ্গে শুরুর একাদশে নামেন আর্লিং হলান্ড ও কেভিন ডে ব্রুইনে। পায়ের চোট কাটিয়ে প্রায় দুই মাস পর গত বুধবার হলান্ড মাঠে ফেরেন, বার্ললির বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে। ডে ব্রুইনে হ্যামস্টিং চোটে লম্বা সময় বাইরে থাকার পর মাঠে ফেরেন গত মাসের শুরুতে।
দশম মিনিটে লক্ষ্যে ম্যাচের প্রথম শট নেয় সিটি। বক্সের বাইরে জায়গা বানিয়ে হুলিয়ান আলভারেসের নেওয়া শট নিজের বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ব্যর্থ করে দেন ফ্লেকেন। চতুর্দশ মিনিটে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের আরেকটি শট একই দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি।
পরের মিনিটে আবার সিটির সামনে বাধার দেয়াল হয়ে দাঁড়ান ফ্লেকেন। এবার বক্সের বাইরে থেকে কাইল ওয়াকারের জোরাল শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ফেরান ৩০ বছর বয়সী ডাচ গোলরক্ষক।
২১তম মিনিটে ব্রেন্টফোর্ডের এগিয়ে যাওয়াতেও ফ্লেকেন রাখেন বড় অবদান। সিটির রক্ষণের দায়ও কম ছিল না অবশ্য। ফ্লেকেন গোল কিক নেন উঁচু করে, মাঝমাঠ থেকে বল ধরে এগিয়ে বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন নিয়াল মুপে। তাকে আটকানোর মতো কেউ ছিল না।
চলতি মৌসুমে প্রথম গোলরক্ষক হিসেবে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে অ্যাসিস্ট করলেন ফ্লেকেন।
দুই মিনিট পরই সমতা ফেরানোর বড় সুযোগ আসে হলান্ডের সামনে, আবারও ব্রেন্টফোর্ডের ত্রাতা ফ্লেকেন। এগিয়ে এসে ওয়ান-অন-ওয়ানে হলান্ডের শট পা দিয়ে আটকে দেন তিনি।
২৬তম মিনিটে আরেকটি দুর্দান্ত সেভ করেন ফ্লেকেন। এবার বক্সের বাইরে থেকে ক্রোয়াট ডিফেন্ডার ইয়োশকো ভার্দিওলের জোরাল শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি।
প্রথমার্ধের তিন মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে আর জাল অক্ষত রাখতে পারেননি ফ্লেকেন। লক্ষ্যে নিজেদের দশম শটে এসে অবশেষে গোলের দেখা পায় সিটি। তাদের প্রথম ৯টি শটই ঠেকান ফ্লেকেন।
ডে ব্রুইনের ক্রস বক্সে হেডে ক্লিয়ার করতে পারেনি ব্রেন্টফোর্ডের ডিফেন্ডার। বল বুক দিয়ে নামিয়ে কাছ থেকে বাঁ পায়ের শটে জালে পাঠান ফোডেন। তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না ফ্লেকেনের।
দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে ফের ব্রেন্টফোর্ডের জালে বল, সিটির লিড। ডে ব্রুইনের ক্রসে বক্সে কোনাকুনি দুর্দান্ত হেডে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ফোডেন।
৭০তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে সিটিকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন ২৩ বছর বয়সী ইংলিশ মিডফিল্ডার। হলান্ডের পাস ধরে বক্সে ঢুকে ঠাণ্ডা মাথায় বাঁ পায়ের নিচু শটে বল জালে পাঠান তিনি।
প্রিমিয়ার লিগে ফোডেনের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক এটি। প্রথমটি করেছিলেন ২০২২ সালের অক্টোবরে। সেবার ঘরের মাঠে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে সিটির ৬-৩ গোলের জয়ে ফোডেনের পাশাপাশি হ্যাটট্রিক করেছিলেন হলান্ডও।
বাকি সময়ে সফরকারীরা কয়েকটি সুযোগ পেলেও ব্যবধান আর বাড়েনি।
২২ ম্যাচে ১৫ জয় ও ৪ ড্রয়ে ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট হলো ৪৯। তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে তিনে আছে আর্সেনাল, মিকেল আর্তেতার দল একটি ম্যাচ বেশি খেলেছে।
আর্সেনালের সমান ২৩ ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে লিভারপুল।
২২ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে ১৫ নম্বরে আছে ব্রেন্টফোর্ড।