খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

বুধবার, ৩০শে অক্টোবর ২০২৪

আরিফুলের রেকর্ড ছোঁয়া সেঞ্চুরিতে সুপার সিক্সে বাংলাদেশের যুবারা

ব্লুমফন্টেইনে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে শুক্রবার বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের জয় ১২১ রানে। ২৯১ রানের পুঁজি গড়ে যুক্তরাষ্ট্র অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ১৭০ রানে গুটিয়ে দেয় তারা।

ভারতের কাছে হেরে আসর শুরুর পর টানা দুই জয়ে পরের ধাপে জায়গা করে নিল বাংলাদেশ।

১০৩ বলে ৯ চারে ১০৩ রানের ইনিংস খেলার পর হাত ঘুরিয়ে একটি উইকেট নিয়ে এবারের জয়ের নায়ক আরিফুল। ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠে তার হাতেই।

যুব বিশ্বকাপে আরিফুলের তৃতীয় সেঞ্চুরি এটি। দুটি সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি ২০২২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত আসরে।

যুব বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি তিনটি করে সেঞ্চুরির রেকর্ড এতদিন যৌথভাবে ছিল ইংল্যান্ডের জ্যাক বার্নহ্যাম ও ভারতের শিখর ধাওয়ানের। সেখানে এবার যোগ হলো আরিফুলের নাম।

বাংলাদেশের হয়ে ২০১২ সালের আসরে দুটি সেঞ্চুরি করেছিলেন এনামুল হক।

এ দিন আরিফুলের শতকের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন আহরার আমিন। তার ৪৯ বলের ইনিংস গড়া ২ চার ও এক ছক্কায়। আগের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ৪৫ রানের ইনিংসে দলকে জিতিয়ে ফিরেছিলেন তিনি।

রান তাড়ায় ৪ উইকেটে ১৫৩ থেকে ১৭ রানের মধ্যে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে অল্পেই থেমে যায় যুক্তরাষ্ট্র।

১০ ওভারে স্রেফ ৩১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন মাহফুজুর।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল মন্থর। আশিকুর রহমান ও আদিল বিন সিদ্দিক উদ্বোধনী জুটিতে ২৯ রান যোগ করেন ৫২ বল খেলে। ১৩ রান করতে আদিল খেলেন ২৮ বল। আশিকুর ৪৫ বলে করেন ২৭ রান।

আরিফুলও মন্থর ব্যাটিং করেন শুরুতে। প্রথম ১৮ বলে তার রান ছিল ৮। রানের গতিতে দম দেন মূলত চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে ইনিংস টেনে নিতে পারেননি তিনি, ৪০ বলে ২ চারে করেন ৩৫ রান।

এরপরই নিজেদের সেরা জুটি পায় বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে আরিফুল ও আহরার ১২২ রানের জুটি গড়েন ১১৫ বলে। খুশ নাদকার্নিকে ছক্কার পরের বলে ক্যাচ দিয়ে আহরার বিদায় নেন ফিফটি থেকে ৬ রান দূরে থাকতে।

৯৯ থেকে আরিয়া গার্গের বল লং অনে পাঠিয়ে এক রান নিয়ে আরিফুল শতক পূর্ণ করেন ৯৯ বলে। যুব ওয়ানডেতে তার চতুর্থ শতক এটি। বাংলাদেশের হয়ে তার চেয়ে বেশি শতক আছে কেবল তাওহিদ হৃদয়ের ৫টি। মাহমুদুল হাসান জয়ের আছে ৪টি।

গার্গের পরের ওভারে বোল্ড হয়ে থামেন আরিফুল। মোহাম্মদ শিহাবের ১৭ বলে ৩১ ও শেখ পারভেজের ৭ বলে ১৩ রানের ক্যামিওতে তিনশর কাছাকাছি যায় বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকে মন্থর ব্যাটিং করে তারা। বিশেষ করে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে তাদের ব্যাটসম্যানদের আটকে রাখেন বাংলাদেশের বোলাররা।

পঞ্চম ওভারে রান আউটে বিদায় নেন ভব্য মেহতা। দ্বিতীয় উইকেটে প্রানাভ ছেত্তিপালায়াম ও সিদ্ধার্ধ কাপ্পা ৭৫ রানের জুটি গড়লেও বল খেলেন ১১৬টি। ৪৪ বলে ১৮ রান করা সিদ্ধার্ধকে ফিরিয়ে দেন আরিফুল।

ফিফটি করে রান আউটে কাটা পড়েন প্রানাভ। ৫৭ রান করতে তিনি খেলেন ৯০ বল। রিশি রামেশ ৮ রান করেন ২২ বল খেলে।

পঞ্চম উইকেটে ৪২ বলে ৪১ রানের একটা জুটি গড়েন শ্রিভাস্তব ও আরিপালি। এ জুটি ভাঙার পরই ধসে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটিং।

৩৭ রান করে শ্রিভাস্তবকে ফিরিয়ে শিকার ধরা শুরু করেন মাহফুজুর। নিজের পরের ওভারে তিনি বিদায় করেন আরিপালিকে। পরের ওভারে টানা দুই বলে ২ উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান বাংলাদেশ অধিনায়ক। তা পূর্ণতা না পেলেও ঠিকই বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে দল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৫০ ওভারে ২৯১/৭ (আশিকুর ২৭, আদিল ১৩, রিজওয়ান ৩৫, আরিফুল ১০৩, আহরার ৪৪, শিহাব ৩১, মাহফুজুর ২, পারভেজ ১৩*, রাফি ৭*; গার্গ ১০-০-৬৮-৩, সুব্রামানিয়ান ১০-০-৫০-১, নাদকার্নি ১০-০-৬১-২, ভালালা ৭-০-৪-১০, পার্থ ৮-০-৪০-১, শ্রিভাস্তব ৫-০-২৮-০)

যুক্তরাষ্ট্র অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৪৭.১ ওভারে ১৭০ (প্রানাভ ৫৭, মেহতা ৫, সিদ্ধার্থ ১৮, রামেশ ৮, শ্রিভাস্তব ৩৭, আরিপালি ১৪, পার্থ ০, ভালালা ১২, নাদকার্নি ০, সুব্রামানিয়ান ০, গার্গ ০*; ইকবাল ৪.১-১-১০-১, মারুফ ৪-১-২২-০, পারভেজ ১০-১-২৬-১, রিজওয়ান ৪-০-১৮-০, রাফি ১০-০-৪২-১, আরিফুল ৫-০-১৫-১, মাহফুজুর ১০-০-৩১-৪)

ফল: বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ১২১ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: আরিফুল ইসলাম

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy