এক ওভারেই তিন উইকেট- বিপিএল আবির্ভাবেই বিস্ময়ে চোখ ধাঁধিয়ে দিয়েছিলেন দুশান হেমান্থা। ছোট পুঁজি নিয়েও জয়ের স্বপ্ন দেখছিল তার দল। কিন্তু আরেকজন যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন বিপিএলে নিজের ফেরা রাঙিয়ে তোলার! আগের রাতে ঢাকায় পা রেখে পরদিনই দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিলেন বাবর আজম। বিপর্যয় থেকে উদ্ধারের সেই লড়াইয়ে দারুণভাবে তাকে সঙ্গ দিলেন আজমাতউল্লাহ ওমারজাই। সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই স্বস্তির জয়ের স্বাদ পেল রংপুর রাইডার্স।
বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়ে দুই ম্যাচে প্রথম জয়ের দেখা পেল রংপুর রাইডার্স।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার সিলেটকে ১২০ রানে আটকে রাখলেও এক পর্যায়ে ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারায় রংপুর। কিন্তু বাবর ও ওমারজাইয়ের দারুণ জুটিতে সেখান থেকেই জিতে যায় তারা।
বিপিএলে ফেরার ম্যাচে ৪৯ বলে ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন বাবর। ৩৫ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত রয়ে যান ওমারজাই। দুজনের ম্যাচ জেতানো জুটিতে ৮৬ রান আসে ৬৮ বলে।
প্রথম দুই ওভারে বাবর ও রনি তালুকদারের দুটি বাউন্ডারিতে শুরু হয় রংপুরের রান তাড়া। তবে রিচার্ড এনগারাভার শর্ট বলে তৃতীয় ওভারেই বাজে শটে ফেরেন রনি।
এরপর একপ্রান্তে রান করে যান বাবর। আরেকপ্রান্তে চলতে থাকে আসা-যাওয়া। নাজমুল ইসলাম অপুকে ক্রস ব্যাটে খেলার চেষ্টায় বোল্ড হয়ে যান ব্র্যান্ডন কিং। প্রথমবার বিপিএল অভিযানে দুই ম্যাচেই শূন্য রানের ফিরলেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান।
অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান চারে নেমে দারুণ এক ছক্কা মারেন তানজিম হাসান সাকিবকে ফ্লিক করে। কিন্তু এক বল পরই আউট হয়ে যান একই চেষ্টায়।
এরপর হেমান্থার সেই ওভার।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সিলেট শুরু থেকেই এগোতে থাকে বারবার হোঁচট খেয়ে। শেখ মেহেদি হাসানকে সুইপ করে বাউন্ডারির পরের বলেই টার্ন না করা ডেলিভারিতে স্টাম্পড হয়ে যান মোহাম্মদ মিঠুন। স্টাম্পের পেছনে অসাধারণ ক্ষীপ্রতায় বেলস তুলে ফেলেন কিপার নুরুল হাসান সোহান।
অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার তিনে উঠে আসা কাজে লাগেনি দলের। ৬ রান করে রান আউট হয়ে যান তিনি দৃষ্টিকটূ খামখেয়ালিপনায়। হাসান মাহমুদকে টানা দুটি বাউন্ডারিতে শুরুর পর শেখ মেহেদিকে উইকেট উপহার দিয়ে ফেরেন ইয়াসির আলি চৌধুরি। আগের ম্যাচে ফিফটি করা জাকির হাসান এবার বিদায় নেন ১ রানেই। মোহাম্মদ নাবির বলে এবারও চোখের পলকে স্টাম্পিং করেন সোহান।
প্রথম ওভারে বাউন্ডারির পর নাজমুল হোসেন শান্ত থমকে যান অনেকটাই। শেষ পর্যন্ত তিনিও পারেননি পুষিয়ে দিতে। ২৪ বল খেলে তিনি করতে পারেন স্রেফ ১৪ রান।
নবম ওভারে সিলেট তখন ধুঁকছে ৫ উইকেটে ৩৯ রান নিয়ে।
দুই অলরাউন্ডার বেনি হাওয়েল ও বেন কাটিংয়ের লড়াই সেখান থেকে। শুরুতে একটু সময় নেওয়ার পর কার্যকর কিছু শট খেলে রান বাড়ান দুজন। ৫৬ বলে ৬৮ রানের জুটি গড়েন দুজন ষষ্ঠ উইকেটে।
তবে শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেননি কেউই। ৩২ বলে ৩৭ করে ফেরেন হাওয়েল, ৩৫ বলে ৩৭ কাটিং। শেষ তিন ওভারে প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি সিলেট। শেষ চার ওভারে বাউন্ডারি আসে কেবল দুটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ২০ ওভারে ১৩৬/৮ (শান্ত ১৪, মিঠুন ৫, মাশরাফি ৬, ইয়াসির ৯, জাকির ১, হাওয়েল ৩৭, কাটিং ৩৭, তানজিম ২*, হেমান্থা ১, এনগারাভা ১; ওমারজাই ২-০-১০-০, শেখ মেহেদি ৪-০-১৮-২, হাসান ৩-০-২৬-০, নাবি ৪-০-১৭-১, মুরাদ ৪-১-২৯-১, রিপন ৩-০-১৯-২)।
রংপুর রাইডার্স: ১৮.২ ওভারে ১২৫/৬ (রনি ৬, বাবর ৫৬*, কিং ০, সোহান ৮, শামীম ২, নাবি ০, শেখ মেহেদি ০, ওমারজাই ৪৭*; এনগারাভা ৩.২-০-২৮-১, তানজিম ৪-০-৩৬-১, নাজমুল অপু ৪-০-১৮-১, হেমান্থা ৪-০-২০-৩, হাওয়েল ৩-০-২২-০)।
ফল: রংপুর রাইডার্স ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: বাবর আজম।