যেভাবে সিরিজটা শুরু করতে চেয়েছিলেন টাইগার কাপ্তান তামিম ইকবাল, ঠিক সেভাবেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে জিতে নিলো বাংলাদেশ। ব্যবধানটা ১৫৫ রানের! তাই বলাই যায়, রীতিমত খাবি খেয়ে শেষ ২৭৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা স্বাগতিকদের ইনিংস। বাংলাদেশী বোলারদের সামনে টিকতে পেরেছে মাত্র ২৮ ওভার ৫ বল। রান সবমিলে ১২১!
বাট হাতে লিটন দাসের সেঞ্চুরির পর বল হাতে সাকিব আল হাসানের ৫ উইকেট ভালো অবদান রাখে এমন নিরঙ্কুশ বিজয়ে।
অথচ টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠানোর সিদ্ধান্তটা ভালোই প্রমান করছিলেন জিম্বাবুইয়ের বোলাররা। শুরুর ঘন্টাটা নি:সন্দেহে তাদের। তামিম ফিরে গেছেন রানের খাতা খোলার আগে। ভালো ইঙ্গিত দিয়েও ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি অনেকদিন রান না পাওয়া সাকিব আল হাসান। মিথুন, মোসাদ্দেকরাও এলেন আর গেলেন। এরই মাঝে বুক চিতিয়ে প্রিয় প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গেলেন বড় অধারাবাাহিক ম্যাচ উইনার লিটন দাশ। সাথে পেলেন সাইলেন্ট কিলার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে। দুজনের প্রায় একশ ছুঁই ছুঁই পার্টনারশিপটা খারাপ কিছু হতে দেয়নি। শেষ দিকে আফিফ, মেহেদির ক্যামিও ইনিংসগুলোকেও মনে রাখতে হবে। না হলে এমন উইকেটে ২৭৬ রানের নিরাপদ স্কোরটা পাওয়া যেতোনা।
জবাব দিতে জিম্বাবুয়ের হয়ে ইনিংস উদ্বোধণ করতে নামেন ওয়েসলে মাধেভেরে ও তাদিওয়ানশে মারুমানি। ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তার বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে কোনো রান না করে সাজঘরে ফেরেন মারুমানি। পঞ্চম ওভারে দ্বিতীয় আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। বোল্ড করেন ৯ রান করা মাধেভেরেকে। এরপর ১৮ রান করা ডিওন মায়ার্সকে আউট করেন শরিফুল ইসলাম।
ক্যারিয়ারের ২০০তম ওয়ানডে খেলতে নামা অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর ও রেগিস চাকাভা মিলে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু টেলরকে ২৪ রানের বেশি করতে দেননি সাকিব আল হাসান। খেলা মোটামুটি ওখানেই শেষ। এরপর হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে যেটি হলো সেটিকে আপনি কেবল আনুষ্ঠানিকতাই বলতে পারেন। শেষ পর্যন্ত ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মিছিলের সমাপ্তি ঘটলো ২৯ ওভার ৫ বল আর ১২১ রানে গিয়ে। সাথে ওয়ানডে সুপারলিগের গুরুত্বপূর্ন ১০ পয়েন্টও পকেটে পুরলো বাংলাদেশ।
এরমাঝে কাজের কাজটা সেরে রেখেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। স্পিন ঘূর্নিতে ৩০ রান খরচায় নিলেন ৫ উইকেট। আরেকটি কারনেও ম্যাচটা মনে রাখতে হবে তাঁর। মাশরাফিকে টপকে ওয়ানডেতে এখন সাকিবই দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক। ২১৩ ম্যাচে সংখ্যাটা ২৭৪।
সিরিজের পরের ম্যাচ হারারেতেই, ১৮ জুলাই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৬/৯ (তামিম ০, লিটন , সাকিব ১৯, মিঠুন ১৯, মোসাদ্দেক ৫, মাহমুদউল্লাহ ৩৩, আফিফ ৪৫, মিরাজ ২৬, সাইফ ৮*, তাসকিন ১, শরিফুল ০*; মুজরাবানি ১০-২-৪৭-২, চাতারা ১০-১-৪৯-১, এনগারাভা ১০-১-৬১-২, জঙ্গুয়ে ৯-০-৫১-৩, বার্ল ৫-০-৩১-০, মাধেবেরে ৬-০-৩৭-০)।
জিম্বাবুয়ে: ২৮.৫ ওভারে ১২১ (মাধেবেরে ৯, মারুমানি ০, টেইলর ২৪, মায়ার্স ১৮, চাকাভা ৫৪, বার্ল ৬, জঙ্গুয়ে ০, মুজরাবানি ২, চাতারা ২*, এনগারাভা ০, মারুমা আহত অনুপস্থিত; তাসকিন ৫-০-২২-১, সাইফ ৪-০-২৩-১, সাকিব ৯.৫-০-৩০-৫, শরিফুল ৬-০-২৮-১, মিরাজ ৩-০-১৫-০, মোসাদ্দেক ১-০-১-০)
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: লিটন দাশ