স্টোকসের শতকে ইংল্যান্ডের শান্তনার জয়
গতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা এবারে সবচেয়ে বাজে পারফরমেন্সে সেমিফাইনাল থেকে আগেই ছিটকে পড়েছে। ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা বাঁচিয়ে রাখতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয়টা মহাগুরুত্বপূর্ণ ইংল্যান্ডের জন্য। টানা পাঁচ হারের পর ডাচদের বিপক্ষে ১৬০ রানের বড় জয় পেয়ে নেট রান রেটে ০.৮৮৫ পয়েন্ট নিয়ে সাত নাম্বারে উঠে এসে ইংল্যান্ড। অন্যদিকে এ হারে আনুষ্ঠানিকভাবে সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে গেছে নেদারল্যান্ডস, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলাও এখন কঠিন হবে তাদের।
পুনের ছোট মাঠ ও মোটামুটি ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে বিশ্বকাপের ৪০তম ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিং নেয় ইংল্যান্ড। ভাল সূচনা করে ইংলিশ দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালান। ৬.৬ ওভারে আরিয়ান দত্তের শিকার হয়ে বেয়ারস্টো সাজঘরে ফিরে যান। যাবার আগে ১৭ বলে ১৫ রান করেন তিনি। বেয়ারস্টো ফিরে গেলেও তিনে নামা জো রুটকে নিয়ে বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছিলেন মালান, ৩৬ বলেই ফিফটি পেয়ে যান। ৭০ রানে পাওয়ারপ্লে শেষ করা ইংল্যান্ড ১৬তম ওভারে শতরান পেরিয়ে যায়। তাদের দুজনের ৮৫ রানের জুটি ভাঙেন লোগান ভ্যান বিক। ডানহাতি এই পেসারের রিভার্স স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ২৮ রান করা রুট। যাবার আগে ৩৫ বলে ২৮ রান করেন রুট। ইংলিশদের স্কোরবোর্ডে ১৩৩ রান উঠে গেছে ২০.২ ওভারে। রুট ফেরার ৬ রানের মাথায় রান আউট হয়ে ৭৪ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কার ৮৭ রানের ইনিংস খেলে সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরে যান মালান। একাদশে ফেরা এরপর হেনরি ব্ৰুক ক্রিজে আসলেও বেশিক্ষন থিতু হতে পারেননি। ১১ রানে ব্রুকের ফেরার পর বাটলারেরও বিদায়ের সময় ঘনিয়ে আসে দ্রুত। নিজের চেনা রুপ থেকে যোজন যোজন দূরে থাকা বাটলার আউট হয়ে যান ৫ রানেই৷ চারে নেমে অবসর ভেঙে বিশ্বকাপে ফেরা উনিশের ইংরেজদের বিশ্বজয়ের নায়ক বেন স্টোকস যদিও একপাশ আগলে রেখেছিলেন। কিন্তু মঈন এসেও ৪ রানেই আউট হয়ে গেলে কোন বড় জুটি গড়তে পারছিল না ইংলিশরা। মনে হচ্ছিল, আড়াইশ করাও কঠিন হয়ে যাবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। এরপর ক্রিস ওকসের সাথে স্টোকসের জুটি জমে যায়, ১৯২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন স্টোকস। দেখেশুনে খেলতে থাকা স্টোকস ৫৮ বলে ফিফটি হাঁকানোর পর শুরু করেন ঝড় ৭৮ বলেই পূর্ণ করেন শতক। ক্রিস ওকসও তার ফিফটির দেখা পেয়ে যান ৪৪ বলে। এরপরই যদিও কিপারে ক্যাচ দিয়ে চলে যান ওকস। ৪৫ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৫১ রানের ইনিংস খেলে যখন ফিরছেন ওকস, ইংল্যান্ড পৌঁছে গেছে ৩২১ রানে। বেন স্টোকস ও ক্রিস ওকসের সপ্তম উইকেটে ৮১ বলে ১২৯ রানের ঝড়ো জুটির উপর ভিত্তি গড়েই বড় পুঁজি পায় ইংরেজরা। নির্ধারিত ৫০ ওভার খেলায়, শেষ দশ ওভারে ১২৪ রান এনে শেষমেশ ইংল্যান্ড থামে ৯ উইকেটে ৩৩৯ রানে৷ ডাচদের পক্ষে বাস ডি লিডি সর্বোচ্চ ৩টি, আরিয়ান দত্ত ও লোগান ভ্যান বিক ২টি করে উইকেট নেন।
৩৪০ রানের কঠিন লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পর ডাচরা। ৫.৪ ওভারে দলীয় ১৩ রানেই ২ বাটসমেন হারিয়ে ফেলে তারা। ভাগ্যকে পাশে পাওয়া সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট ও ওয়েসলি বারেসির জুটিটা একটু বড় হচ্ছিল, সেটি ভাঙে বারেসির রানআউটে। ৬২ বলে ৩৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওয়েসলি বারেসি। দলীয় স্কোর তখন ৬৮ রানে ৩ উইকেট। সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটও আউট হয়ে যান ৩৩ রানেই। উইলির বলে মিডঅনে ধরা খেয়ে যখন এঙ্গেলব্রেখট ফিরছেন, দল তখন ৪ উইকেট হারিয়ে ৯০ রানে। ইনিংসের ২৫ ওভার শেষেও ডাচরা শতরান পেরিয়ে যেতে পারেনি। ২৬তম ওভারে বাস ডি লিডিকে আদিল রশিদ বোল্ড করে দিলে অর্ধেক উইকেটও হারিয়ে ফেলে নেদারল্যান্ডস। ১০৪ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে এরপর ডাচরা পঞ্চাশ রানের বড় জুটি পায়। স। ১০৪ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে এরপর ডাচরা পঞ্চাশ রানের বড় জুটি পায়। অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস স্বচ্ছন্দ্যে খেলে গেলেও ৩৮ রানে তারও বিদায় ঘটে যায়। ১৬৩ রানে এডওয়ার্ডের ফেরার পর হুড়মুড় করে ভেঙে যায় নেদারল্যান্ডসের ইনিংস। একে একে ফিরে যেতে থাকেন শেষ চার ব্যাটার। কেউই ৪ রানের বেশি করতে পারেননি। ৩৭.২ ওভারেই ১৭৯ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার সময় একপাশে সর্বোচ্চ ৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন তেজা নিদামানুরু। ইংলিশদের পক্ষে আদিল রাশিদ ও মঈন আলী ৩টি এবং ডেভিড উইলি ২ করে উইকেট নেন।