খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

শনিবার, ২৩শে নভেম্বর ২০২৪

অবশেষে পরাজয়ের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে ৩ উইকেটের জয় পেল টাইগাররা

এবারের বিশ্বকাপটা বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আফগানিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করলেও এরপর টানা ৬ ম্যাচ হেরে সেমিফাইনালের আগেই বিদায় নেয় টাইগাররা। সোমবার বিশ্বকাপের ৩৮তম ম্যাচে প্রতিপক্ষ শ্রীলংকাকে ৩ উইকেটে হারিয়ে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ।

দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় সাকিবের দল। লঙ্কান ইনিংসের শুরুতেই প্রথম আঘাত করে শরিফুল ইসলাম। ওপেনার কুশল পেরেরাকে উইকেট রক্ষক মুশফিকুরের তালুবন্দি করে প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফেরান শরিফুল। লঙ্কানদের সংগ্রহ ছিল তখন ৫ রান। এরপর লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসকে সাথে নিয়ে বিপদ সামাল দেন আরেক ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা। আড়ষ্ট থাকা কুশল মেন্ডিসকে নিয়ে ব্যাট হাতে পাথুম নিসাঙ্কা বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু অধিনায়কের সাথে জুটি বড় করতে পারেনি নিসাঙ্কা। ১১.৩ ওভারে টাইগার অধিনায়ক সাকিবকে তুলে মারতে গিয়ে লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস শরিফুলের হাতে ধরা খেয়ে সাজঘরে ফেরেন। ফেরার আগে ১ চার ও ১ ছয়ে ১৯ রান করতে ৩০ বল খেলেছেন লঙ্কান অধিনায়ক। তবে চারে ব্যাট করতে নামা সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে ভালোই চালাচ্ছিলেন পাথুম নিসাঙ্কা। কিন্তু ১২.৪ ওভারে দলীয় ৭২ রানের মাথায় তানজিম হাসানের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরে এই লঙ্কান ব্যাটসমেন। যাবার আগে ৩৬ বলে ৮ চারের সাহায্যে ৪১ রানের হালকা ঝড়ো ইনিংস খেলেন। সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে এরপর আরেক জুটি পেয়ে যান চারিথ আসালাঙ্কা, চতুর্থ উইকেট জুটিতে গড়েন ৬৩ রান। জুটিটি টাইগারদের জন্য ক্রমশ হচ্ছিল বিপজ্জনক। তবে অতি আত্মবিশ্বাসী হতে গিয়েই ২৫তম ওভারে সামারাবিক্রমা ডেকে আনেন বিপদ। সাকিবকে ওড়াতে গিয়ে ধরা খান মাহমুদউল্লাহর হাতে। তার ৪২ বলে ৪১ রান করে আউট হওয়ায়, ভাঙে ৬৩ রানের এই জুটি।

এরপর নাটকীয় রূপ নেয় ম্যাচটি ষষ্ঠ ব্যাটসমেন হিসেবে ক্রিজে সময়মতোই ঢোকেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। কিন্তু হেলমেটে সমস্যা থাকায় সেটা বদলাতে নিয়ে নেন বাড়তি সময়। স্ট্রাইক নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে পেরিয়ে যায় দুই মিনিটের বেশি। সাকিবের টাইমড আউটের আবেদনে এরপর তৈরি হয় নাটকীয়তা। বেশ কিছু সময় মাঝমাঠে চলে বাক্য বিনিময়। সাকিব আবেদন প্রত্যাহার না করায় কোনো বল না খেলে চরম হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ম্যাথিউসকে। এক বলের মধ্যে দুই উইকেট পেয়ে দারুণভাবে খেলায় ফেরে বাংলাদেশ। তবে বাঁধ সাধেন চারিথ আসালাঙ্কা, ৪৮.৪ ওভারে তানজিম হাসানের বলে আউট হবার আগে ১০৫ বলে ১০৮ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন ৫টি ছয় ও ৬টি চারের সাহায্যে। মাঝখানে তাকে ভালোই সঙ্গ দিয়েছেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা এবং মাহিশ থিকশানা। ডি সিলভা ৩৬ বলে ৩৪ রান করে মিরাজের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরে। মাহিশ থিকশানাকে ২১ রানে ফেরান শরিফুল ইসলাম। ৪৯.৩ ওভারে লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৭৯ রান সবকটি উইকেটের বিনিময়ে। বাংলাদেশের পক্ষে তানজিম হাসান সর্বোচ্চ ৩টি, অধিনায়ক সাকিব ও শরিফুল ২টি করে উইকেট নেন।

লঙ্কানদের দেয়া ২৭৯ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে বেশ ভালো শুরুই করেছিল টাইগাররা। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম দারুন কিছু শট খেললেও দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন দলীয় ১৭ রানে। এরপর অন্য ওপেনার লিটন দাসও সাজঘরের পথে হাঁটেন দলীয় ৪১ রানে। লিটন দাস সাজঘরে ফেরার আগে মোটামুটি ক্রিজে জমে গিয়েছিলো ওয়ান ডাউনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। লিটনের আউটে অধিনায়ক সাকিব নামলে তুমুল আওয়াজ উঠে গ্যালারিতে। কিছু তার পক্ষে, বেশ কিছুই বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদেরও তাকে কিছু একটা বলতে দেখা যায়। সবচেয়ে উত্তেজনা তৈরি হয় যখন ম্যাথিউস বল করতে আসেন। ম্যাথিউসের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে একবার পরাস্ত হওয়ার পর ক্যাচ দিয়ে দেন শর্ট কাভারে। ৭ রানে থাকা সাকিবের ক্যাচ রাখতে পারেননি আসালাঙ্কা। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তৃতীয় উইকেটে তারা ১৪৯ বলে ১৬৯ রানের জুটি গড়েন। এই জুটিতেই জোড়া ফিফটি তুলে নেন। ৬৫ বলে ১২টি চার আর দুটি ছক্কায় ৮০ রান করে ফিরেছেন সাকিব। ১০১ বলে ১২টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৯০ রান করে ফেরেন শান্ত। এরপর মুশফিকুর রহিম (১০), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (২২), মেহেদি হাসান মিরাজ (৩) আউট হলেও তানজিদ হাসান সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে দলকে ৫৩ বল আগেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন তাওহিদ হৃদয়। তিনি ৭ বলে ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন।

স্কোর

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy