বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচ জিতে সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখলো পাকিস্তান
শনিবার ভারতের বেঙ্গালুরুর এম চেন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের ৩৫তম ম্যাচটি পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড দুই দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেমিফাইনালে যেতে হলে দুই দলেরই জয়ের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বৃষ্টি সহায়তার হাত বাড়িয়ে পাকিস্তানের পক্ষ নিলে, ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন মেথডে ২১ রানে জিতেছে দলটি।
টসে জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় পাকিস্তান। কিউই দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র শুরুটা ভালোমতোই করেছিল, তাদের উদ্বোধনী জুটি ১০.৫ ওভারে ৬৮ রান এনে দেয় দলকে। এরপর ওপেনার ডেভন কনওয়ে ৩৯ বলে ৩৫ রান করে হাসান আলীর শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান। ওয়ান ডাউনে নামা অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে নিয়ে আরেক ওপেনার রাচিন ১৮০ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে হতাশা বাড়াতে থাকেন পাকিস্তানের। তাদের নান্দনিক ব্যাটিংয়ে বড় পুঁজির ভিত পেয়ে যায় কিউইরা। এরপর সেই ভিত্তির উপর রানের অট্টালিকা গড়েছেন বাকি কিউই ব্যাটসমেনরা। এ জুটি গড়ার পথে বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় শতক তুলে নেন রাচিন, এক আসরে নিউজিল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপে তিনটি সেঞ্চুরি এর আগে করতে পারেননি কেউই। এমনকি বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৫টি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলে স্কট স্টাইরিস ও কিংবদন্তি মার্টিন ক্রোর সাথে নিজের নাম যুক্ত করেন রাচীন রবীন্দ্র। কিন্তু শতক অধরা রয়ে গেছে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের, ব্যক্তিগত ৯৫ রানে ইফতিখার আহমেদের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং-অফে ধরা পড়েছেন ফখর জামানের হাতে, ৭৯ বলে ১০টি চার ও ২টি ছয়ের সাহায্যে এ রান করেন অধিনায়ক। অধিনায়কের বিদায়ের পর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রাচিন। মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে তিনি ক্যাচ দিয়েছেন মিড উইকেটে। যাবার আগে ৯৪ বলে ১৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ১০৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর ড্যারিল মিচেল, মার্ক চাপম্যান, গ্লেন ফিলিপ্স ও মিচেল স্যান্টনারের ক্যামিওতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে আকাশচুম্বী ৪০১ রানের অট্টালিকা গড়ে নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তানের পক্ষে ৬০ রানে ৩টি উইকেট নিয়েছেন ওয়াসিম।
জয়ের জন্য ৩০০ বলে ৪০২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় পাকিস্তান। মাত্র ১.৫ ওভারে দলীয় ৬ রানের মাথায় ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক টিম সাউদির শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর ফখর জামান পাক অধিনায়ক বাবর আজমকে নিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করে। যদিও পাক অধিনায়ক বলের সাথে রানের সামঞ্জস্য রেখে ব্যাট করছিলেন কিন্তু ফখর জামান বিধ্বংসী ব্যাটিং করে ৩৯ বলে অর্ধশতক ছোয়ার পর মাত্র ৬৩ বলে শতকের দেখা পায়। এরমাঝে একবার হানা দিয়েছিল বৃষ্টি। তখন ২১.৩ ওভারে পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ১৬০ রান। এরপর মাঠ উপযোগী করে খেলা চালু হলে পাকিস্তানের নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪২ ওভারে ৩৪২ রান। কিন্তু মাত্র ৪ ওভার হওয়ার পরই আরেক দফার বৃষ্টিতে শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। বৃষ্টির কারণে ম্যাচের ইতি ঘটার আগে ফখর অপরাজিত থাকেন ১২৬ রানে। ৮১ বলের বিস্ফোরক ইনিংসে তিনি মারেন ৮ চার ও ১১ ছয়। আন্তর্জাতিক ম্যাচে এক ইনিংসে পাকিস্তানের হয়ে এতগুলো ছক্কা মারতে পারেননি আর কেউ। অর্থাৎ এটিও রেকর্ড। বাবর ৬ চার ও ২ ছয়ের সাহায্যে ৬৩ বলে করেন হার না মানা ৬৬ রান। তাদের অবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ১৪১ বলে ১৯৪ রান। ফলে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডিএলএস পদ্ধতিতে ২১ রানে জিতেছে পাকিস্তান।