খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

সোমবার, ৩০শে জুন ২০২৫

ডাচদের হারিয়ে সেমিতে খেলার স্বপ্নে বিভোর আফগানিস্তান

বিশ্বকাপের এবারের আসরের আফগানিস্তান ও নেদারল্যান্ডের মধ্যকার ৩৪তম ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় ভারতের লখনৌতে অটল বিহারী বাজপেয়ি একানা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৬.৩ ওভারে মাত্র ১৭৯ রানে অলআউট হয় নেদারল্যান্ডস।

ব্যাটিংয়ের শুরুতে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় নেদারল্যান্ডস, আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমানের করা পঞ্চম বলের গুগলিতে এলবিডব্লিউ হয়ে যান ডাচ ওপেনার ওয়েসলি বারেসি। ৩ রানে প্রথম উইকেট নিলেও এরপর আফগানরা চাপ ধরে রাখতে পারেনি। ওয়ান ডাউনে নামা কলিন অ্যাকারম্যান বড় পার্টনারশিপের জুটি বাধার চেষ্টা করেছিলেন আরেক ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউডকে নিয়ে। প্রথম পাওয়ার প্লেতেই ১২টি চার মারে ডাচরা, ১ উইকেট খরচে ৬৬ রানে পাওয়ারপ্লে শেষ হয় তাদের। ভালো শুরুর পরও ছন্নছাড়া বোলিংয়ে ছন্দপতন হারানো আফগানরা পাওয়ারপ্লের শেষেই করে “হাডল”(কাঁধে হাত রেখে একত্রে গোল হয়ে জড়ো হওয়া)। সেই সুবাদে দ্বাদশ ওভারে খেলার ধারার বিপরীতে উইকেট পেয়ে যায় আফগানিস্তান। ডাবল নিতে গিয়ে ফাইন লেগ থেকে আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হয়ে যান ও’ডাউড। যার ফলে দ্বিতীয় উইকেটে গড়া ৬৪ বলে ৭২ রানের সম্ভাবনাময় জুটির পরিসমাপ্তি ঘটে। সাজঘরে ফেরার আগে ও’ডাউড ৪০ বলে ৯ টি চারের সাহায্যে ৪২ রান করেছিলেন। এরপর সিব্র‍্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট সঙ্গ দেন কলিন অ্যাকারম্যানকে। কিন্তু তা বেশিক্ষন টিকিয়ে রাখতে পারেননি, ১৮.৩ ওভারে দলীয় ৯২ রানে অ্যাকারম্যান উইকেটরক্ষক ইকরাম আলীখিলের রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান। যাবার আগে ৩৫ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ২৯ রান করেছিলেন অ্যাকারম্যান।

ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস ক্রিজে এসেও আফগান উইকেটরক্ষক ইকরাম আলীখিলের কাছে রান আউটের শিকার হন। প্রথম বলে শূন্য রানেই আউট হয়ে যাওয়া এডওয়ার্ডস গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরের পথে হাঁটেন। ডাচ ইনিংসের ঝলমলে রোদের আলোটা যেন হুট করেই কালো মেঘের অন্ধকারে হারিয়ে যায়। ডাচ অধিনায়কের প্রস্থানের পর বাস ডি লিডি এবং সাকিব জুলফিকারও সাজঘরের পথ ধরলে ডাচদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১১৩ রান।

লোগান ভেন বিক ৩০.৬ ওভারে দলীয় ১৩৪ রানে আউট হয়ে ফিরে গেলেও ডাচদের একপ্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট করছিলেন সিব্র‍্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট। ৩৪.৪ ওভারে দলীয় ১৫২ রানের মাথায় আউট হবার আগে তিনি ৮৬ বলে ৫৮ রানের বিচক্ষণ ইনিংসটি খেলে যান। দলের ৮জন ব্যাটসমেন হারিয়ে ডাচদের ইনিংস তখন শেষের পথে। শেষের দিকে ভ্যান ডার মারওয়ে ১১ ও ভ্যান মিকেরেন ১০ রান করে আউট হলে, আরিয়ান দত্ত ১০ রানে অপরাজিত থাকেন। ডাচদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৬.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান। আফগান শিবিরে নবি ২৮ রানে ৩ উইকেট, নূর ৩১ রানে ২ ও মুজিব ৪০ রানে ১ উইকেট পেলেও রশিদ খানের উইকেটের খাতা থাকে শূন্য।

ডাচদের জবাব দিতে মাঠে নেমে দেখে-শুনে খেলছিলেন আফগান দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। ৫.৩ ওভারে দলীয় ২৭ রানে রহমানউল্লাহ গুরবাজকে হারিয়ে ছোটখাটো ধাক্কা খেলেও তা সামলে নেন ওয়ান ডাউনে নামা রহমত শাহ। পাওয়ারপ্লেতে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে আফগানরা তুলে নেয় ৫৫ রান। কিন্তু পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরপরই আউট হয়ে যান ইব্রাহিম জাদরান। ভ্যান ডার মারওয়ের বোল্ড হয়ে ইব্রাহিম ফিরেন ৩৪ বলে ২ চারে ২০ রানের ইনিংস খেলে। রহমত শাহ দেখেশুনে খেলতে থাকেন, হাশমতউল্লাহ শহিদিকে নিয়ে নিয়মিত স্ট্রাইক রোটেট করে রানের চাকা সচল রেখে দলকে জয়ের লক্ষ্যে নিয়ে যায়। যদিও রহমত শাহ ২২.৪ ওভারে দলীয় ১২৯ রানে অর্ধশতক হাঁকিয়ে সাজঘরে ফিরলে, আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে নিয়ে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি। দলের জয়ে ৬৪ বলে ৫৬ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি। ৫৪ বলে ৮টি চারের সাহায্যে ৫২ রান করে ফেরেন রহমাত শাহ এবং ২৮ বলে ৩১ রান করে অপরাজিত থাকেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। যার ফলে ৩১.৩ ওভারে জয়ের জন্য ১৮১ রান করে ৭ উইকেটের বিশাল জয় তুলে নেয় আফগানরা।

এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে পাকিস্তানকে টপকে গেল আফগানিস্তান। ৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বর পজিশনে উঠে গেলে আফগানরা। নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারলেই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে চলে যাবে। যেটা মোটেও সহজ হবে না আফগানদের জন্য!

স্কোর

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy