‘স্বপ্ন ততক্ষণই সুন্দর যতক্ষণ তা বেঁচে থাকে’
কাতারের আল থুমামার মাঠে মরক্কোর বিপক্ষে ম্যাচের ৫২ মিনিটে দৌঁড়ে নামলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। বেশ উচ্ছ্বাস নিয়ে নামলেও ম্যাচ শেষে যখন মাঠ ছাড়ছিলেন; তখন শুধুই নিজেকে লোকানোর চেষ্টা। ডাগআউটে না গিয়ে সোজা যখন ড্রেসিং রুমের পথ ধরলেন টানেল দিয়ে, টিভি ক্যামেরার সামনে ভেসে উঠল কান্নারত অন্য এক সি আর সেভেনের ছবি। কিন্তু এমন বিমর্ষ রোনালদোকে কেউ কোনদিন দেখেছে বলে মনে করা যাচ্ছেনা।
একটা মানুষ কতটা দলকে মনে প্রাণে ধারন করলে এমন শিশু সুলভ কান্না করা যায়। যে দলের হয়ে আকাশ সম স্বপ্ন নিয়ে কাতারে এসেছিলেন ক্রিস্টিয়ানো; সে দল যদি খোদ কাঙ্ক্ষিত সেই ট্রফিটার কাছে গিয়েও না ছুঁয়ে ফিরে আসতে হয়, তাহলে শুধু রোনালদো কেন যে কোন খেলোয়াড়েরও চোখ ভেজানোর কথা। কিন্তু সি আর সেভেনের জন্য একটু বেশি বেদনাদায়ক; এটি তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ বলে।
কী ছিল না তার ক্যারিয়ারে? শুধু এই একটা বিশ্বকাপ ছাড়া। নাহ, সেটাও অধরা থেকে গেল। পাঁচ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী রোনালদো থামলেন, থামালেন তাঁর কোটি ভক্তদের।
রোনালদো নিজেকে কিভাবে সান্তনা দিবেন সেটা হয়ত নিজেও জানেন না। তবে তাঁর সমর্থকদের সান্তনা দিতে নিজের টাইমলাইনে লিখে দিলেন এক লম্বা স্ট্যাটাস। যেখানে ৩৭ বছর বয়সী রোনালদো দেশের জন্য নিবেদনের সর্বোচ্চটুকুও দিতে কার্পণ্য করেননি বলে স্বীকার করেন।
‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে, গতকাল স্বপ্নটা শেষ হয়ে গেল। আমি সবাইকে জানাতে চাই, অনেক কথা বলা হয়েছে, অনেক কিছু লেখা হয়েছে, অনেক বেশি অনুমান করা হয়েছে। তবে পর্তুগালের জন্য আমার নিবেদন একমুহূর্তের জন্য বদলায়নি। আমি সব সময় আমার সতীর্থ, দেশের হয়ে সবার লক্ষ্যের জন্য লড়েছি’।
‘স্বপ্ন ততক্ষণই সুন্দর যতক্ষণ তা বেঁচে থাকে’। এ মুহূর্তে বেশি কিছু বলার নেই। ধন্যবাদ পর্তুগাল, ধন্যবাদ কাতার।
রোনালদোকে বলা হয় পর্তুগিজ যুবরাজ। দেশের হয়ে খেলেছেন সবচেয়ে বেশি, ১৯৬টি ম্যাচ। এখনও পর্যন্ত গোল করেছেন ১১৮টি। লুইস ফিগোদের সোনালি প্রজন্ম যেটা পারেননি পর্তুগালকে সেটা উপহার দিয়েছেন তিনি। ২০১৬ সালে জিতিয়েছেন ইউরোর মুকুট। ২০০৪ সালেও ইউরোর ফাইনাল খেলেছিলো পর্তুগাল।
এই রোনালদো নিজের শেষ বিশ্বকাপে দলের মধ্যমণি হয়ে থাকতে না পারলেও; থাকবেন কোটি ভক্তের মনে।