খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

শনিবার, ২৪শে মে ২০২৫

বার্সা-ইন্টারের ছয় গোলের থ্রিলারের ক্লাইম্যাক্স হবে সান সিরোয়

বার্সেলোনা ৩:৩ ইন্টার মিলান

আবেগ, গর্ব আর প্রতিশোধের গল্পের শুরুটা ছয় গোলের সমতায় হলেও, ক্লাইম্যাক্স এখনো বাকি। বার্সেলোনা বনাম ইন্টার মিলানের সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচটি ফুটবলপ্রেমিদের মনে থ্রিলার মুভির চেয়ে কম উত্তেজনা ছড়ায়নি।
ইউরোপিয়ান ফুটবলের দুই হেভিওয়েট ক্লাবের ৩-৩ স্কোরলাইনের সমতায় শেষ হওয়া এই থ্রিলারের ক্লাইম্যাক্স হবে সান সিরোয়। 

ম্যাচ শুরুর সময়ই বার্সেলোনা জানায়, গ্যালারিতে দর্শক হাজির হয়েছেন ৫০ হাজার ৩১৪ জন, যা চলতি মৌসুমে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ। এর বেশির ভাগ দর্শক যে বার্সেলোনারই, সেটা ব্যানার-জার্সির দাপটেই বোঝা যায়।

অলিম্পিক স্টেডিয়ামে মৌসুমের রেকর্ডসংখ্যক দর্শকের সামনে দুই দলই সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দিয়েছে। যে লড়াইটা ফুটবলপ্রেমিদের মনে গেঁথে থাকার কথা অনেক অনেক দিন।
চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে এত বেশি গোলের ড্র ম্যাচ ১৯৯৯ সালের পর আর দেখা যায়নি।

বার্সা-ইন্টারের ছয় গোলের থ্রিলারের ক্লাইম্যাক্স হবে সান সিরোয়

সেই সাথে মার্কাস থুরাম থেকে ডেঞ্জেল ডামপ্রিস, লামিনে ইয়ামাল থেকে রাফিনিয়া। নিজ নিজ জায়গা থেকে চারজনই গড়েছেন রেকর্ড।

বুধবারের (৩০ এপ্রিল) এই হাইভোল্টেজ ম্যাচে ৭১ শতাংশ সময় বল দখলে রাখার পাশাপাশি আক্রমণেও আধিপত্য করে বার্সেলোনা।
গোলের জন্য ১৯ শটের ৯টি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা। ইন্টারের ৭ শটের ৩টি লক্ষ্যে ছিল, সবগুলোই খুঁজে পায় ঠিকানা।

বার্সা-ইন্টারের ছয় গোলের থ্রিলারের ক্লাইম্যাক্স হবে সান সিরোয়

বিপুল সংখ্যক দর্শকরা ঠিকমতো নড়েচড়ে বসার আগেই তাদের স্তব্ধ করে দিয়ে ৩০ সেকেন্ডেই বার্সেলোনার জালে গেল বল।
দৃষ্টিনন্দন ব্যাক হিল গোলে ইতালির ক্লাবটিকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম, যা চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম।

২১তম মিনিটে ইন্টার স্কোরলাইন বানিয়ে ফেলে ২-০। প্রথম গোল যিনি বানিয়ে দিয়েছিলেন, এবার সেই ডামপ্রিসই গোল করলেন চমৎকার এক ওভারহেড কিকে।

বার্সা-ইন্টারের ছয় গোলের থ্রিলারের ক্লাইম্যাক্স হবে সান সিরোয়

জোড়া ধাক্কায় হোঁচট খেয়েও বার্সেলোনা অবশ্য হতোদ্যম হয়ে পড়েনি।

বার্সেলোনার হয়ে ১০০তম ম্যাচ খেলতে নামা ইয়ামাল একের পর এক দৌড়ে ভয় ধরিয়ে দিচ্ছিলেন ইন্টার মিলান রক্ষণে। ২৪তম মিনিটে ইয়ামাল হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য।

ইন্টারের পাঁচজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জটলার ভেতর থেকে দুর্দান্ত এক শটে দূরের পোস্ট দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন জালে।
এমনই চোখে আরাম দেওয়া গোল যে, গ্যালারিজুড়ে ‘ইয়ামাল’ ‘ইয়ামাল’ ধ্বনি শুরু হয়ে যায়।

কিছুক্ষণ পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম স্ন্যাপচ্যাটে ইয়ামালের গোলের একটি ছবি পোস্ট করেন আর্লিং হলান্ড। ম্যানচেস্টার সিটি তারকা সেখানে ক্যাপশনে লেখেন ‘এই ছেলেটা অবিশ্বাস্য।’

অবিশ্বাস্য তো বটে। চোখ ধাঁধাঁনো এই গোলেই যে পেছনে ফেলেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পের ১৮ বছর ১৪০ দিন বয়সের রেকর্ড।

তার অর্থ দাঁড়ায়, ১৭ বছর ২৯১ দিন বয়সী এই ফরোয়ার্ডই এখন চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে সবচেয়ে কমবয়সী গোলদাতা!

ম্যাচের ৩৮তম মিনিটে ফেরান তরেসের গোলে ২-২ সমতা নিয়ে আসে বার্সেলোনা।
এই গোলের মূল অবদান অবশ্য রাফিনিয়ার। তাঁর বাড়ানো বলে শুধু পা ছোঁয়াতে হয়েছে তরেসকে।

এই অ্যাসিস্টে চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনার হয়ে এক মৌসুমে গোল অবদানে (গোল+অ্যাসিস্টে ২০টি) লিওনেল মেসিকে স্পর্শ করেছেন রাফিনিয়া।

দুই দল যে ৪ গোল নিয়ে বিরতিতে যায়, তা ২০০০ সালের পর চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের প্রথম লেগে সর্বোচ্চ।

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে বার্সা দাপট দেখালেও ৬৪তম মিনিটে ইন্টার মিলানকে আরেক দফায় এগিয়ে দেন ডামপ্রিস।

চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে কোনো ডাচ ফুটবলারের এক ম্যাচে তিনটি গোলে সংশ্লিষ্টতা এই প্রথম।
তবে ডামপ্রিসের আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দুই মিনিটের মধ্যেই আবার সমতা নিয়ে আসে বার্সেলোনা।

কর্নার থেকে আসা বল ইয়ামাল ‘ডামি’ করে ছেড়ে দিলে ফাঁকায় পেয়ে যান রাফিনিয়া। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রকেট গতির শটে বল পাঠান জালের দিকে।

বল ক্রসবারে লেগে বাইরে চলে আসার সময় ইন্টার গোলকিপার ইয়ান সোমারের পিঠে লেগে জালে প্রবেশ করে। স্কোরলাইন ৩-৩।

শেষ পর্যন্ত এই সমতাতেই শেষ হয় নব্বই মিনিটের থ্রিলিং শো।

উত্তেজনায় ঠাসা এই সেমিফাইনালের থ্রিলারের ক্লাইম্যাক্স তোলা রইল সান সিরোর সেকেন্ড লেগের জন্য।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy