মোসাদ্দেকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচক
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজের ওয়ানডে দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসনকে নিয়ে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেনের এক মন্তব্য বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।
এবার সেই বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য মোসাদ্দেকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচক।
সবশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) চ্যাম্পিয়ন দল আবাহনীর নেতত্বে ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ব্যাট-বলে সমানতালে পারফর্ম করে হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ও।
ফলে জাতীয় দলে ফেরার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল মোসাদ্দেকের।
তবে জাতীয় দলে আর ফেরা হয়নি মোসাদ্দেকের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত ওয়ানডে সিরিজের জন্য গত ২৩ জুন (সোমবার) দল ঘোষণা করেছিল বিসিবি।
সেদিন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু মোসাদ্দেককে দলে না রাখা প্রসঙ্গে এক মন্তব্য করে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন।
এক প্রশ্নে তিনি বলেছিলেন,
‘যত দিন মেহেদী হাসান মিরাজ দলে আছেন, তত দিন মোসাদ্দেকের কোনো সুযোগ নেই।’
আজ (৯ জুলাই, বুধবার) ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন গাজী আশরাফ।
তিনি জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমে ওই বক্তব্যের জন্য পরে তিনি মোসাদ্দেকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
গাজী আশরাফ তাঁর ওই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন,
‘আপনারা অনেকেই ইউটিউবিং করেন, সেখানে এডিট করেন নিশ্চয়ই। আমিও কলাম লিখতাম, সেখানে শব্দচয়নে কাটাকাটি ছাড়া লিখতাম না। ওই প্রোগ্রামটা আমি লাইভ করছিলাম। ২০-২৫ মিনিটে সবার অগণিত প্রশ্নে অনেক কথাই বলে ফেলেছিলাম।’
গাজী আশরাফ আরও বলেন,
‘আমি আসলে একটা প্রশ্নের উত্তরেই বলেছিলাম যে যতক্ষণ মিরাজ আছে, ততক্ষণ সুযোগ নেই। সে রাতেই প্রস্তুতি ম্যাচ দেখতে চট্টগ্রামে যাওয়ার পর ওখানে মনে হলো, আমি তিনটা শব্দে ভুল করেছি। বলা উচিত ছিল, যতক্ষণ মিরাজ আছে, ততক্ষণ মোসাদ্দেকের সুযোগ অনেক কম। এ তিনটা শব্দে আমার ভুল হয়েছিল।’
নিজের ভুল বুঝতে পেরে বিষয়টি নিয়ে মোসাদ্দেকের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি,
‘আমি নিজেও জিনিসটা উপলব্ধি করেছিলাম, আমি ঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারিনি। দুই দিন পরই মোসাদ্দেকের সঙ্গে দেখা হয়েছিল, আমি তাকে বলেছিলাম, আমি এভাবে বোঝাতে চাইনি। আমি তাকে সরি বলেছি।’
গাজী আশরাফ কথা বলেছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ২–১ ব্যবধানে হারের ব্যর্থতা নিয়েও।
তাঁর দৃষ্টিতে সিরিজে মূলত দুটি জায়গায় শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ দল,
‘শ্রীলঙ্কার সিমাররা যা করতে পেরেছে, আমাদের সিমাররা তা পারেনি, তারা মাঝে ব্রেক থ্রু দিতে পারেনি। আবার শ্রীলঙ্কা ব্যাটিংটাকে ডিপে নিয়ে যেতে পেরেছে। সেখানেও তারা আমাদের ছাড়িয়ে গেছে।’
বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং নিয়ে বলতে গিয়েও শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের উদাহরণ টেনেছেন প্রধান নির্বাচক,
‘আমাদের ব্যাটসম্যানরা ভালো করতে পারেনি। তাদের দুজন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিস ও চারিত আসালাঙ্কা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সে জায়গায় আমরা পিছিয়ে গেছি। অভিজ্ঞরা চলে যাওয়ার পর আমাদের দলে একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এটা পূরণ হতে একটু সময় লাগবে।’
তিনি বলেন,
‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো খেলোয়াড়ের সংকট আছে আমাদের। ৩০ জন খেলোয়াড়কে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে সবকিছু। তবে আশা করি এ দল, এইচপি থেকে খেলোয়াড় উঠে আসবে।’