খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

শনিবার, ২৩শে নভেম্বর ২০২৪

কাছে গিয়েও জয় অধরা রয়ে গেলো কিউইদের

শনিবার ভারতের ধর্মশালায় বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের ২৭তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় বিশ্বকাপের ফেভারিট দুই দল নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া।

ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া। ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই কিউই বোলারদের উপর চড়াও হয় দুই অসি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ১৯.১ ওভারে ১৭৫ রান করেন এই দুই ওপেনার। ৬৫ বলে ৫টি চার আর ৬টি ছয়ে ৮১ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওয়ার্নার। সঙ্গী ওয়ার্নারকে শতকের আগে ফেরানো গেলেও ট্রাভিস হেড মাত্র ৬৭ বলে ১০টি চার আর ৭টি ছয়ে ঝড়ো ইনিংস খেলে ১০৯ রান তুলে সাজঘরে ফেরেন। দলীয় সংগ্রহ তখন মাত্র ২৩.২ ওভারে দুই উইকেটে ২০০ রান।

মিচেল মার্শ ৩৬.৩ ওভারে ৫১ বলে ৩৬ রান করে সাজঘরে ফেরার সময় দলীয় রান ৪ উইকেটে ২৬৪। বড় কোনো জুটি গড়তে না পেরে মাঝের ৯৯ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে কিছুটা চাপে পরা অজিরা এরপর ব্যাটিং সুনামি শুরু করে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, জশ ইংলিস ও অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ব্যাটিং তান্ডব চালায়। এদের মধ্যে মারমূখী ব্যাট চালায় অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, মাত্র ১৪ বলে ৩৭ রান করেন ২টি চার ও চোখ ধাঁধানো ৪টি ছয় মেরে। ম্যাক্সওয়েল করেন ২৪ বলে ৪১ রান ৫টি চার আর ২টি ছয়ের সাহায্যে। জশ ইংলিসও ২৮ বলে ৩৮ রান করেন। ফলস্বরূপ অসিরা কিউইদের ৩৮৯ রানের বিশাল টার্গেট দিয়ে মাঠ ত্যাগ করে।

বিশ্বকাপের চলতি আসরে শ্রীলংকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৩৪৫ রানের টার্গেট তাড়ায় জয়ের রেকর্ড গড়েছে পাকিস্তান। তাদের সেই রেকর্ড ভাঙতে হলে আজ নিউজিল্যান্ডকে করতে হতো ৩০০ বলে ৩৮৯ রান। বিশাল লক্ষ্যতাড়া করতে নেমে ঝড়ের গতিতে রান পেতে থাকে নিউজিল্যান্ড। কৌশলী বাউন্ডারি খুঁজে নিয়ে ষষ্ট ওভারেই পঞ্চাশ ছাড়িয়ে যায় কিউইরা। তবে ক্রিজ আঁকড়ে ধরে থাকা ব্যাটসমেন ডেভন কনওয়েকে তারা হারিয়ে ফেলে কিছুক্ষণ পরই। ৮ম ওভারে ৬টি চারে গড়া ১৭ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন কনওয়ে। তার ওপেনিং সঙ্গী উইল ইয়াংও ভালো শুরু পেয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৪টি চার ও ১ ছয়ের সাহায্যে ৩৭ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। পাওয়ারপ্লেতে ৭২ রান তুলে ফেললেও গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় কিউইরা। এরপর রাচিন রাবিন্দ্র ও ড্যারিল মিচেল জুটিতে দুর্দান্তভাবে খেলায় টিকে থাকে কিউইরা, ১৪তম ওভারেই শতরান পেরিয়ে যায় তাদের।

মিচেল ৪২ বলে অর্ধশতক হাঁকিয়ে ফেলার পর রবিন্দ্রও তার অর্ধশতক পেয়ে যান ৪৯ বলে। কিন্তু ফিফটির পরপরই মিচেল ফিরে যান অ্যাডাম জ্যাম্পাকে মারতে গিয়ে। ৫১ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলে মিচেল যখন ফিরছেন, নিউজিল্যান্ড তখন ১৬৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে। এরপর রবিন্দ্রর সঙ্গে অধিনায়ক টম ল্যাথাম এসে যোগ দিলে ৩০তম ওভারে আর কোন উইকেট না হারিয়ে দুইশ পেরিয়ে যায় কিউইরা। কিন্তু ল্যাথামের ইনিংসও বড় হয়নি, জ্যাম্পার বলে ফেরার আগে ২১ রান করেন ল্যাথাম। ১২ রানে গ্লেন ফিলিপসও আউট হয়ে যান। ২৬৫ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে পিছিয়ে পড়ে নিউজিল্যান্ড। যদিও রাবিন্দ্র খেলার গতিতে পরিবর্তন আনেননি। নিশামের সাথে মিলে বাউন্ডারির পর বাউন্ডারি মেরে আস্কিং রেট নাগালে রাখেন। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৭৭ বলেই সেঞ্চুরি পেয়ে যান রবিন্দ্র। সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিক্ষণ চালিয়ে যেতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসমেন, কামিন্সের বলে ধরা খেয়ে যান বাউন্ডারিতে। ৮৯ বলে ৯ চার ও ৫ ছয়ে ১১৬ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। নিশাম এসে ততক্ষণে ভালো শুরু পেয়ে গেলেও সঙ্গীর অভাব উপলব্ধি করেন। স্যান্টনার ১৭ ও হেনরি ৯ রান করেই বিদায় নেন। বোল্ট এসে তার পাশে কোনোরকম দাঁড়াতে পারলে নিশাম জয়ের আশা টিকিয়ে রাখেন ভালোমতোই।

শেষের তিন ওভারে ৪৩ রানের সমীকরনেও কিউইরা টিকে থাকে শেষ পর্যন্ত। ৪৮তম ওভারে স্টার্ককে এক ছয়ের সাথে মোট ১১ রান আনে, পরের ওভারে বোল্ট ছয় মেরে দেন হ্যাজেলউডকে, এরপর নিশাম চার মেরে দিলে মোট আসে ১৩ রান। শেষ ওভারের ১৯ রানের প্রয়োজনে বোলিংয়ে এসে স্টার্ক দ্বিতীয় বল করতে গিয়ে ওয়াইড বাইয়ে পাঁচ রান দিয়ে দেন। ৫ বলে ১৩ রানের দরকারটা পরের তিন বলে তিনটি ডাবলস বের করে ২ বলে ৭ এ নিয়ে আসেন নিশাম। কিন্তু আবার দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান নিশাম, ৩ চার ও ৩ ছয়ে ৩৯ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে বিমর্ষ হয়ে নিশাম সাজঘরে ফিরে যান, শেষমেশ পাঁচ রানের দূরত্বে আটকে যায় কিউইরা।

দুই দলের করা ৭৭১ রানের ম্যাচে জয়ের কাছে এসেও ফিরে যেতে হলো অভাগা কিউইদের!

স্কোর

https://www.espncricinfo.com/series/icc-cricket-world-cup-2023-24-1367856/australia-vs-new-zealand-27th-match-1384418/live-cricket-score

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy